অন্ধ ভিক্ষুক

মাহবুব মোর্শেদ

প্রকাশিত : অক্টোবর ৩০, ২০১৭

এক অন্ধ ভিক্ষুক ছিলেন। চোখ নাই, তাই তিনি নাকের সাহায্যে অনেক কাজ চালাইতেন। অন্ধ ভিক্ষুক রাতে খাওয়া-দাওয়া করতেন হোটেলে। তো শহরে নতুন এক হোটেল হইছে শুনে ভিক্ষুক সাহেব গেলেন সেই হোটেলে খাইতে। হোটেল চালাইতো সুলাইমান আর সুলাইমানের বউ সকিনা। সকিনা রান্নাবান্না করতো আর সুলাইমান ক্যাশ সামলাইতো। পোলাপান না থাকলে মাঝে মাঝে কাস্টমারদের খাবারও আগায়ে দিত। তো অন্ধ ফকির হোটেলে উপস্থিত হইলে সুলাইমান আগায়ে গিয়ে বললো, বলেন ভিখারি সাহেব, আপনি কি খাবেন? ভিখারি কইলেন, বাবা আমি তো চোখে দেখি না। এক কাজ করেন, আপনার যে আইটেম আছে সেইগুলাতে চামচ ডুবায়ে আনেন। আমি গন্ধ শুঁকে বলবো, কী খাবো। সুলাইমান তিনটা চামচ এনে ভিখারির সামনে রাখলো। ভিখারি একটা চামচ শুঁকে বললো, শিং মাছের ঝোল। কিন্তু মাছটা তো টাটকা না। দ্বিতীয় চামচ শুঁকে কইলো, ভেড়ার মাংস ভুনা। বুটের ডাল ঘন কইরা রান্না করছেন। তৃতীয়টা শুঁকে কইলো, তেলাপিয়া ভাজা। শেষে বললো, আজকে ভেড়ার মাংস ভুনাই দেন। দ্বিতীয় দিন ভিখারি আসলে সুলাইমান তাকে চিনতে পারলো। চারটা চামচ ঝোলে ভিজায়ে তার সামনে নিয়ে গেল। ভিখারি সেদিন গন্ধ শুঁকে বললো, ইলিশ মাছের ডিম। তৃতীয় দিন সুলাইমান দেখলো, অন্ধ ভিখারি আসতেছে। তার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেল। সকিনাকে গিয়ে বললো, ডার্লিং একটা চামচে চুমো দিয়া দেও তো। বাকী তিনটা চামচে ঝোল ছুঁইয়ে ভিখারির সামনে চারটা চামচ নিয়া গেল সুলাইমান। প্রথম চামচ তুলে ভিখারি বললেন, গরুর মাংস তো পুইড়া ফেলছেন ভাই। দ্বিতীয় চামচ তুইলা বলো, কৈ মাছের ঝোল। ঝালটা একটু বেশি। তৃতীয় চামচ তুলে বললো, সরপুটি, বেগুন আলু দিয়া মিক্স। চতুর্থ চামচ হাতে নিয়া শুঁকলো ভিখারি। শুঁকে খুব অবাক হলো। বললো, সকিনা এইখানে কাজ করে নাকি?