অতনু তিয়াস

অতনু তিয়াস

অতনু তিয়াসের ৩ গান

প্রকাশিত : নভেম্বর ০৫, ২০২১

আরশিনগর কত দূরে

লালন শুধাই তোমারে
লালন তোমার আরশিনগর কত দূরে?
আমি গৃহধর্ম ত্যাগ করিলাম
যদি পড়শির দেখা মেলে
আরশিনগর কত দূরে।।

আমার মাথার চুলে ধরল জটা  
অঙ্গ হইল সাড়া
প্রাণপড়শির পাইতে দেখা
কান্দে একতারা
শুধাই তোমায় লালন ফকির
তুমি কি দেইখাছ তারে?
আরশিনগর কত দূরে।।

আমি সর্ব অঙ্গে জপি তারে
স্পন্দনে স্পন্দনে
নিঠুরিয়ার মন গলে না
আমারই কান্দনে
একূল ওকূল সব হারাইয়া
পড়ে আছি অন্ধকারে।
আরশিনগর কত দূরে।।

আমার জনম গেল চোখের জলে
অপার ডুবসাঁতারে
তবুও তো এই অতনুর
তিয়াস মিটে নারে
নিয়ে যাবে কে আমারে
চির প্রেমানন্দপুরে।
আরশিনগর কত দূরে।।

আসা যাওয়ার পথের ধারে

আসা যাওয়ার পথের ধারে
ছোট্ট একটা হাট
ভুল জিনিসের বেচাকেনায়
দারুণ জমজমাট।।

আসল ঘরে ফসল নাই
ঢেঁকিঘরে বাতি
নেকির নামে মেকি ধরে
চলছে মাতামাতি
ভেতরে শূন্য অতি
বাইরেতে ফিটফাট।
ভুল জিনিসের বেচাকেনায়
দারুণ জমজমাট।।

একটা পাখি পোষ মানাতে
জগৎ পরিপাটি
সেই পাখিটা উড়াল দিলেই
ছাই অথবা মাটি
ডানায় ডানায় লিখছি তবু
ভ্রান্ত জীবনপাঠ।
ভুল জিনিসের বেচাকেনায়
দারুণ জমজমাট।।

আগুন গাঙে বড়শি ফেলে
তিয়াস চণ্ডীদাস
কী আশায় ভাসায় বেহুলা
লখিন্দরের লাশ
কোন অধরা অচিনপুরে
সুখের দোকানপাট?
ভুল জিনিসের বেচাকেনায়
দারুণ জমজমাট।।

ছায়ার পায়ে পায়ে

চোখ মেলিয়া দেখলি না রে
চাইয়া ডানে বাঁয়ে
সারা জীবন হেঁটেই গেলি
ছায়ার পায়ে পায়ে।।

দিন দুপুরে ঘুমের ঘোরে
স্বপ্নে উড়িস আসমানে
নিজের পানে দেখ না চেয়ে
ঠিকানা তোর কোনখানে
তুই মাঝি না অন্য কেহ
তোর এই ভাঙা নায়ে।
সারা জীবন হেঁটেই গেলি
ছায়ার পায়ে পায়ে।।

দেহের মাঝে মহাজগৎ
ঘুরছে আপন আবেশে
শূন্য হতে সৃষ্টি হয়ে
শূন্যে আবার যায় মিশে
মিছামিছি দুঃখবিলাস
সাজানো সংশয়ে।
সারা জীবন হেঁটেই গেলি
ছায়ার পায়ে পায়ে।।