অতনু তিয়াসের কবিতা ‘পিতার প্রতি’
প্রকাশিত : মার্চ ১৭, ২০২৪
মহাপ্লাবনের দিনে যেভাবে নুহ নবি
ভাসিয়েছিলেন পরিত্রাণের কিস্তি
বিপন্ন প্রাণ পেয়েছিল জীবনের আশ্বাস—
দাউদাউ আগুনপ্লাবনে তুমিও ভাসালে নাও
বিরুদ্ধ স্রোতে
আমাদের পূর্বপ্রজন্ম উঠে এলো তোমার নৌকায়।
বাঙালির অমোঘ কাণ্ডারি
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ঘোর অন্ধকারে
তর্জনীর ইশারায় দেখালে পথের দিশা,
মন্দ্রিত মহামন্ত্রে জ্বলে উঠল মুক্তিচেতনা
রক্তে আগুন!
বীর বাঙালি বুক পেতে গড়ে তুলল দুর্গ
পেলাম স্বাধীনতার স্বাদ।
অবোধ সন্তান ভেবে তুমি ক্ষমা করলে যাদের
ওরাই ছোবল মারল পিতার বুকে!
বুলেটে ঝাঁজরা হলো বত্রিশ নম্বর!
একাত্তর দেখিনি, পঁচাত্তর দেখিনি
দেখেছি একুশে আগস্ট!
দেখেছি মানবপ্রাচীর, রক্তস্নাত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ!
এখন এই পৃথিবীর চরম ক্রান্তিলগ্নে
তোমাকে আত্মস্থ করে জেগে আছি।
চারদিকে বর্ণচোরাদের দৌরাত্ম্য
পাতাল ফুঁড়ে একে একে উঠে আসছে দানব
আপন অস্তিত্ব বিপন্ন করে আর ক্ষমা নয়
অমানুষ ক্ষমার মাহাত্ম্য বোঝে না।
আমরা আর কোনো রক্তাক্ত পঁচাত্তর চাই না
চাই না নৃশংস একুশে আগস্ট!
ভয়কে জয় করে চেতনায় শান দিই— জয় বাংলা
অন্যায়ের বিরুদ্ধে হীরাধার তরবারি
সত্যের জন্য আপোসহীন
প্রেমে হৃদয়খোলা
নিপীড়িতের পরম আশ্রয়।
ভালোবাসার মহামন্ত্রে একদিন দীক্ষিত হবে তাবৎ মানুষ
এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জেগে আছি, পিতা!