শিলং, রবীন্দ্রনাথ ও আমরা তিনবন্ধু
অক্টোবর ০৪, ২০২৪
পরশু সন্ধ্যায় কবিবন্ধু গৌতম গুহ রায় আর আমি জলপাইগুড়ি থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেনে চেপে পরদিন শেষরাতে পৌঁছলাম আসাম রাজ্যের গৌহাটি
আমার ভ্রমণিয়া দিন
সন্ধ্যা এসে রোজ রোজ আমার সেই আনন্দের ভুবনটিকে চুরি করে নিয়ে যেত। খুব মন খারাপ করে বাড়ি ফিরতাম। এই যে বাড়ি ফিরবার পথটুকু, কীভাবে কীভাবে প্রকৃতির আলো অবশেষে সবটুকু একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে, কীভাবে অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে সবকিছু টেরই পেতাম না।
জুলাই ০৫, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
গাছে দেয়ালে রাজ্জাক-সুচন্দার বেহুলা সিনেমার পোস্টার! যতবার সাভার গিয়েছি আমার ওই আলাভোলা শৈশবে, ততবারই চোখে পড়েছে জহির রায়হানের এই বেহুলার পোস্টারটি! অনেক পরে অবশ্য বুঝেছি ব্যাপারটা, সাভার শহরটা তখন হিন্দুপ্রধান ছিল।
জুন ২৮, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
সার্কাসের চেয়েও চরম আলোড়ন তৈরি করে বছরে একবার আয়োজিত হতো ফুটবল টুর্নামেন্ট। সেটাও ছিল বেশ বাইশ গ্রাম জাগানিয়া ব্যাপার-স্যাপার। মাঠের চারদিকের সামান্য একটু কোনাকাঞ্চি জায়গাও ফাঁকা থাকতো না। মানুষের গা ঘেঁষে মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতো সে-খেলা। দলও আসতো অনেক দূর-দূরান্ত থেকে।
জুন ২১, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
আব্বা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হলে কী হবে, ক্ষেতে ক্ষেতে নিজেও কাজ করতেন, তার দেখাদেখি আমরাও ক্ষেতে ডুবে থাকতাম মাটি বুকে নিয়ে। আজ যেখানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় জেলখানা এখানেই ছিল সেই আলুচাষের জমিগুলো। জেলখানা করার সময় সব জমি অধিগ্রহণ করে নিয়ে যায় সরকার।
জুন ১৪, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
সবুর পাগলাও কখন হাট থেকে ফিরে এসে বসে গেছে খাবার খেতে। সারাটা দিন সে হাটের মধ্যে গিয়ে কী করলো না করলো তার খোঁজ কেউ নিত না, জিজ্ঞেস করলেও মিলতো না সদুত্তর। রাতটা কাটিয়ে পাগলা কাউকে কিছু না বলেই চলে যেত পরদিন ভোরবেলা।
জুন ০৭, ২০১৮
আবার দ্যাখা হবে হে সুন্দর
আমি অবাক। মুখ দিয়ে কথাই বেরুচ্ছিল না। শুধু মাহিফুজুর ভাইকে বললাম, ভাই, ওই দ্যাখেন স্পুনবিল। ওইদিকে জোঁকের ভয়ে নৌকায় বসে আছেন নাইমুল ভাই। আমি কই, ভাই, চামচ আছে? ভাইতো জোঁকের ভয়ে থেকে এটা তামাশা ভাবলেন। পরে প্রায় ১৫ মিনিট পেরোলে তার ধৈর্য্য আর রইল না।
জুন ০৪, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
নানাবাড়িতে আরেকজন পাগল আসতো ঘোড়ায় চড়ে। ক্লিশ ক্লিন্ন এক ঘোড়া। অনেকটা গাধা টাইপের। ঘোড়াটাকে ঈদগাঁ মাঠের কাছে বেঁধে রেখে সে ঈদগাঁওয়ের মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে পড়ত। পরনে থাকত সাদা সামরিক পোশাক। পায়ে গামবুট। মাথায়ও সামরিক ক্যাপ ছিল।
মে ৩১, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
মতি পাগলিকে ঘিরে মানুষের নিষ্ঠুরতাও কম দেখিনি। সে আঙুলে অস্ত্র তাক করলেই ভয় পায় বলে একশ্রেণির মানুষ তাকে দেখলেই হলো আঙুলে অস্ত্র তাক করে তামাশায় মেতে উঠতো। ভীত সন্ত্রস্ত মতি পাগলিকে দেখে তারা বিকৃত আনন্দে হো হো অট্টহাসিতে আকাশ বাতাস ভরিয়ে তুলতো।
মে ২৪, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
একদিন শুনলাম, রাজাকার ধরে কাচারিঘরে আটকে রাখা হয়েছে। রাজাকার শব্দটি কি সেদিনই আমি প্রথম শুনেছিলাম, নাকি আরো আগেও শুনেছি! তবে রাজাকার ঠিক কী তখনো জানা ছিল না। তাই কৌতূহলী হয়ে ছুটে গিয়েছিলাম দেখার জন্য। ভারি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম দেখে যে, আমাদের মতোই একজন মানুষ গাছের সঙ্গে বাঁধা।
মে ১৭, ২০১৮
আমার ভ্রমণিয়া দিন
কী যে আতংকের কালোছায়া নিয়ে নেমে আসতো তখনকার সেই একাত্তরের এক একটা সন্ধ্যা। মনে হতো যেন রাতের অন্ধকার নামার সঙ্গে সঙ্গে হামলে পড়বে রাক্ষসখোক্কসের দল। সম্ভবত ২৫ মার্চের কালরাতই একাত্তরের প্রতিটি রাতকে দিয়েছিল চরম এই বিভীষিকাময় প্রেক্ষাপট।
মে ১০, ২০১৮