নাহিদুল ইসলামের গল্প ‘উড়ো চিঠি’
নভেম্বর ২৬, ২০২৪
কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ঘটেছিল এটা। হুট করে সকল শিক্ষকের নামে একযোগে কিছু ক্ষ্যাপাটে কথাবার্তাসম্বলিত একটি চিঠি এসে পৌঁছেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে
পাহাড়ের ডাক
পাহাড় তাকে কখনও ভালোবাসেনি। কিন্তু সে বেসেছিল। পাহাড়ের মধ্যে থাকা পশুপাখি আর মানুষ। পাহাড়ের মধ্যে সে প্রথম দেখেছিল মালতিকে। বিয়েও হয়েছিল তাদের। আর মালতি বিয়ের পরদিন উধাও হয়ে গ্যালো। পাহাড়ে মিলল তার লাশ, অক্ষত, যেন ঘুমিয়ে পড়েছে মালতি
ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
আমিন মিয়ার ভাতের হোটেল
গভীর রাত। চানখার পুলের রাস্তায় কয়েকটা ককুর শুয়ে আছে। দূরে কোথাও দু’একটা গুলি ফোটার আওয়াজ শোনা গেলে। রাস্তার কুকুরগুলো হঠাৎ সচকিত হয়ে শুরু করে দিল ত্রাহি ডাক। ঢাকার অল্পকিছু কুকুর এখনও জীবিত। তাই বলতে হবে, এই কুকুরগুলো ভাগ্যবান।
ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
অপেক্ষা
ভালো লাগার জন্য তাকে অনেক কিছু করতে হয়। যেমন মাঝে মাঝে সে ফার্মেসি থেকে ডিসপোজেবল সিরিন্জ কিনে আনে। সিরিন্জ দিয়ে সে তার নিজের রক্ত বের করে ফেলে দ্যায়। নিজেকে কষ্ট দিতে তার ভালো লাগে।
ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
তুমি আমায় ডেকেছ
সজল রুহিকে ভালোবাসতে চায়। যদিও সজল তখনো নিশ্চিত নয়, এ ভালোবাসা অথবা ভালোবাসতে চাওয়া তাৎক্ষণিক, না অনেক দিনের জন্য। সজলের এই ভালোবাসতে চাওয়া রুহির প্রতি প্রথম কিংবা একমাত্র নয়। কিন্তু আমরা বুঝে যাই রুহির প্রতি জন্মানো এ অনুভূতি দীর্ঘস্থায়ী।
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
বৃষ্টি ও মন খারাপের গল্প
সে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি বোধহয় ভালো নেই। বলেছিলেন বৃষ্টি হলে আপনার মন ভালো থাকে না। তাই খবর নিলাম।’ নীলাঞ্জনা এবার অবাক হয়। এই সামান্য কথা, সামান্য এ কথা কারও মনে রাখার মানে কি?
ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
তোমায় পাব বলে স্বাধীনতা
শায়লা পঁচিশ বছরের একটা মেয়ে। বিবাহিত। তিন বছরের একটা ছেলে আছে, নাম স্বাধীন। সময়টা চুয়াত্তুরের শেষদিকে। বাপের পেনশনে চলে কি চলে না, তবুও চলে যায়- এভাবেই বাঙালি বেঁচে থাকে। বাড়ি ভাড়া বাকি, মুদির খাতায় পাওনার পেইজ শেষ হয়ে এসেছে। মুদি এখনও তবু ভদ্রতা রেখেছে, এই রক্ষে।
ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
ভুল সংসার
মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা আর একবুক তেষ্টা নিয়ে চোখ খুলল রুবি। কখন যে জ্ঞান চলে গেছিল, বোঝেনি । সেই সন্ধে থেকে চলছে মারধোর। বদরুদের ঘরের পাশের গাছটায় সে বাঁধা। টের পেল, শরীর বশে নেই । ঝুঁকে আসছে মাথাটা বুকের কাছে। ঠোঁটের পাশ কপাল চটচটে। জিভ দিয়ে চেটে দেখলো নোনতা।
ডিসেম্বর ০৯, ২০১৭
চটপটে, ছটফটে নয়
চলতে চলতে গভীর এক বনে ঢুকে পড়লেন রাজপুত্র। কিছু দূর গিয়েই তিনি অবাক হয়ে গেলেন। রূপসী এক বালিকা এসে তার ঘোড়ার লাগাম ধরল। বিস্ময়ে থ রাজপুত্র। মেয়েটি চোখ ধাঁধানো সুন্দর। এই বনের মধ্যে এই মেয়েটি কে? কী নিবিড় ছায়াঘেরা বালিকার চোখের দৃষ্টি। ভুরু দুটো যেন কাজলরেখা নদী।
ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
শঙ্কা
ছোট্ট ছেলেটি ঝুনঝুনি পায়ে ঘরময় ছুটে বেড়ায়। শহরের দমবন্ধ ঘরে সকালের তেড়ছা রোদের ফালি খণ্ড খণ্ড হয়ে মেঝেতে লুটোপুটি খায়। জহুরা উলের সোয়েটার বুনতে বুনতে ছেলেকে দ্যাখে। দ্যাখে আর ভাবে, সম্বিত পেয়ে আবার বোনায় মন দ্যায়।
ডিসেম্বর ০১, ২০১৭
হেমন্তের এক বিকেল
নিরাপদ একটা ছাউনির নিচে গিয়ে দাঁড়ালো পুরো দলটি। অসময়ে তাণ্ডব দেখে দলের সবাই দারুণ বিস্মিত। এ তো ঝড় নয়, ঝড়ো হাওয়া, ধুলো উড়ছে এলোপাথারি, আকশের মেঘগুলো ছুটছে খুব বেগে। চমৎকার বিকেলটি দেখতে দেখতে হয়ে উঠল অন্ধকার এক ভয়-জাগুরুক সন্ধ্যা।
নভেম্বর ৩০, ২০১৭