নাহিদুল ইসলামের গল্প ‘উড়ো চিঠি’
নভেম্বর ২৬, ২০২৪
কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ঘটেছিল এটা। হুট করে সকল শিক্ষকের নামে একযোগে কিছু ক্ষ্যাপাটে কথাবার্তাসম্বলিত একটি চিঠি এসে পৌঁছেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে
গোপন সত্যি
বদরুল আলম জুবুথুবু হয়ে বসে আছেন। নিজের ভেতর নিমগ্ন হয়ে আছেন যেন। কোনদিকে চেয় আছেন, বোঝা যাচ্ছে না। সম্ভবত কিছু একটা নিয়ে ভাবছেন। ভদ্রলোক কি কেবল একটা কোট গায়ে চড়িয়েই বেরিয়ে পড়েছেন? সঙ্গে গরম কাপড়-চোপড় তো তেমন কিছু দেখছি না। এরকম দিনে কেউ এভাবে কাপড় ছাড়া বের হয়?
ডিসেম্বর ০২, ২০১৮
গোপন সত্যি
ভদ্রলোকের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। শুধু একটা গল্প বলার জন্য তিনি এসেছেন আমার কাছে। ব্যাপারটা একটু অস্বস্তিতে ফেলে দিল আমাকে। এ জাতীয় ঝামেলায় নিজেকে খুব একটা জড়াই না। কিন্তু এ লোকটা আমার খোঁজ পেলেন কোত্থেকে, তা বুঝতে পারছি না।
ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
আবু ইসহাকের গল্প ‘জোঁক’
সেদ্ধ মিষ্টি আলুর কয়েক টুকরো পেটে জামিন দেয় ওসমান। ভাতের অভাবে অন্য কিছু দিয়ে উদরপূর্তির নাম চাষী-মজুরের ভাষায় পেটে জামিন দেয়া। চাল যখন দুর্মূল্য তখন এ ছাড়া উপায় কি?ওসমান হুঁক্কা নিয়ে বসে। মাজু বিবি নিয়ে আসে রয়নার তেলের বোতল। হাতের তেলোয় ঢেলে সে স্বামীর পিঠে মালিশ করতে শুরু করে।
নভেম্বর ২৯, ২০১৮
রৌদ্র বসন্ত
হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফরম ভর্তি মানুষ থই থই করছে। ভিড়ের মধ্যে ক’বার যে ধাক্কা খেলাম সে হিসেব বের করতে হলে আঙুলের কড়ে গোনা ছাড়া উপায় নেই আর। সেটাও গুনতে হবে প্ল্যাটফরমের বাইরে গিয়ে নিরিবিলি কোনো এক জায়গায়। নাহলে হিসেবে ভুল হয়ে যেতে পারে।
নভেম্বর ২৮, ২০১৮
গোলক
মিসেস মন্টানা বড় কাঠের টাবে গরম পানি জড়ো করতো। মাকে কোলে নিয়ে সেইটার ভিতরে বসাতো। অনেক্ষণ ধরে মায়ের পিঠে রাব্ করে দিতো। সারা সপ্তাহে ঐটা ছিলো মায়ের আনন্দের দিন। রন পাশে বসে মায়ের মুখের দিকে দেখতো, শিশুর মতো কিড় কিড় করে হাসতো মা।
নভেম্বর ২৬, ২০১৮
নিতাই কাকা
কাকা আবার বলতে শুরু করেন, যেরকম এক চাঁদনী রাতে ঘর থ্যাক্যা বাইর হছনু, সেরকম আরেক চাঁদনী রাতে আবার বাড়িত ফির্যা আসনু। দ্যাশ স্বাধীন হয়্যা গেছে এরমধ্যে। বাড়িত দেখি মা ছাড়া আর কেউ নাই। ওই রাতে বাড়ির উঠানে মাদুর পেতে মায়ের কোলে মাথা রেখে নিতাই কাকা তার বাবার কথা জানতে চান।
নভেম্বর ২৪, ২০১৮
চন্দন চৌধুরী তিনটি খুদে গল্প
ঈশ্বরের সন্ধানে ঘর ছাড়ল এক তরুণ। প্রথমে উপসনালয় আর আশ্রমগুলোতে খোঁজল। অনেককে জিজ্ঞেস করল, কিন্তু কেউ তাকে সঠিকভাবে ঈশ্বরের খোঁজ দিতে পারল না। একজন বলল, ‘তিনি নিশ্চয়ই আছেন। কিন্তু সেটা যে কোথায়, তা আমি বলতে পারব না।’
নভেম্বর ২১, ২০১৮
প্রহর
মনে আছে সে দিনের কথা!
যে দিন আমরা বাদাম খেতে খেতে জিয়া উদ্যানে হাঁটছিলাম, আর তখন দূর থেকে তোমার চাচাকে দেখে কি চুলা দৌঁড়ই না দৌঁড়েছিলাম। পুলিশের দৌড়ানি খেলেও হয় তোবা এত ভয় কাজ করতো না! এরপর, পুরো ১ মাস এই ভয়ে তুমিও বাসা থেকে বের হও নি। যদিও বা তোমার চাচা আমাদের দেখেছেন বলে আমার মনে হয় না।
নভেম্বর ১৬, ২০১৮
লিভিং রুম
ওরা হয়তো বুঝে গিয়েছে, সবাই ঘুমাবে আর ওরা লিভিং রুমে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বসে থাকবে। কোনো শব্দ করা যাবে না যাতে বেবি সিটারের ঘুমে ডিস্টার্ব না হয়। লিনার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো, কোনোদিনও সোনা দুইটা ওকে বলে নাই যে কিভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে নীরবে জেগে বসে থাকতে হয়।
নভেম্বর ১৫, ২০১৮
দ্বিতীয় নরক অথবা মধ্যদুপুর
ফজরের আযান হয়ে গেছে। ওযু করতে হবে, নামাযে বসে পাঁচ ওয়াক্ত আল্লাহর কাছে খালি একটা দোয়াই করে যাচ্ছে আজ আট মাস ধরে, এবার যেন একটা ছেলে হয়। এছাড়া এ বাড়িতে ওর আর থাকা হবে না এটা বুঝে গেছে ও।
নভেম্বর ১৪, ২০১৮