নাহিদুল ইসলামের গল্প ‘উড়ো চিঠি’

লাশ আবিষ্কার হবার সাথে সাথেই মফস্বলটা কেমন পরিচিত হতে শুরু করলো। পুলিশও নড়ে উঠেছে। তারা এসে দ্রুত লোকজন সরিয়ে ফেললো। এক রোগা অসুস্থ অফিসার সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দিলো।

সে ভাবিলো তাহার হৈয়া গিয়াছে। বুকের ভিতর হাত দিয়া সে হৃপিণ্ডটা বাহির করিয়া আনিলো। এবং কচকচ করিয়া চিবাইয়া খাইতে লাগিলো।

নদীর তীর ধরে একজন হেঁটে আসছে। মাথায় বস্তা। পরনে জিনসের প্যান্ট আর টিশার্ট। হাঁটার ভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, খুবই ক্লান্ত তার পা দুটো। যেন আর চলতে চাইছে না। তবু কোনোক্রমে পথপাড়ি দেয়া।

যতদূর মনে পড়ে, অফিসটা পল্লবী থানার পিছনে। সাথে একটা বড় নারকেল গাছ। সেই নারকেল গাছে বলে নারকেল কখনোই ধরে না। এটা আমার বসের বলা কথা। কিন্তু কথাটা কতটুকু সত্য, আমি জানি না।

ছোট এক ঢিবি থেকে গড়াতে থাকে রেজা আর সুজা। দুজনের কাঁধের মাংস নখের আচঁড়ে ছিঁড়েখুড়ে যাচ্ছে। তবু মারামারি থামছে না। গড়িয়ে পড়ায় রেজা এবার পড়ল বেগতিক হালে। সুজা পেটের উপর চড়ে বসতে পেরেছে।

ঘনায়মান কালো রাতে জনশূন্য প্রশস্ত রাস্তাটাকে ময়ূরাক্ষী নদী বলে কল্পনা করতে বেশ লাগে। কিন্তু মনের চরে যখন ঘুমের বন্যা আসে, তখন মনে হয় ওটা সত্যিই ময়ূরাক্ষী। রাতের নিস্তব্ধতায় তার কালো স্রোত কল-কল করে

চোখ মেলতেই লাবণ্য দেখলো, ঝুম বৃষ্টি এই ছোট্ট শহরটাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ভ্রমণের পথে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল, নিজেই বোঝেনি।

প্রতিমা থানে উঠতে আর দেরি নেই। রাত পোহালেই হবে দূর্গা বরণ। গলির মাথার মণ্ডপে পুরোদমে কাজ চলছে। অজন্তা এই পথে রোজকার মতো আজও ওড়নায় মুখখানা ভালো করে আড়াল করে মাথা নিচু করে হেঁটে যাচ্ছে।