হুমায়ূন আহমেদের গল্প ‘চোখ’

আমি শাদা বগাটার এক ঝলক তাকিয়ে কাদায় নামলাম। আমার প্যান্ট আগেই গোটানো ছিল। শুধু একটু হাঁটুর ওপর টেনে তুলে কাদায় পা রাখলাম। না, একেবারে হাঁটু পর্যন্ত দেবে গেল না।

বছর আষ্টেক হলো দিল্লীতে আমি চাকরি করছি। কলকাতার সঙ্গে সম্পর্ক কম। কোনো কোনো বছরে কলকাতায় এক-আধবার আসি, ঘুরে বেড়িয়ে সিনেমা দেখে আবার ফিরে চলে যাই।

একটি ছেলে ছিল। রূপে যেন রাজপুত্ত্বর। মা আদর করে নাম রেখেছিলেন রাজকুমার। ছেলেটি এই পনরো-ষোলো বছর বয়সেই বেশ জোয়ান হয়ে উঠেছে।

রাসেল তাকিয়ে থাকে পাগলের মতো অসম্ভব সুন্দর চেহারাটার দিকে। এত পাগলের মতো সুন্দর ও কম দেখেছে। মনটা একেবারে এলোমেলো হয়ে যায় মেহরিনকে দেখলেই।

পার্থর চোখ দুটো চিকচিক করে ওঠে। অন্য সময় পার্থ যতবার সমুদ্রে যেতে চেয়েছে, সুমনা তাতেই সায় দিয়েছে। সুমনা চাইতো, সে যেমন পার্থর না বলা কথাগুলোও বুঝে যায় পার্থও তারটা তেমন করে বুঝুক।

পৃথিবীটাও এখন যেন একটা চিড়িয়াখানার মতো। প্রত্যেকটা দেশ একেকটা খাঁচায় বন্দি। তবে আজকাল আক্রান্ত আর মৃত্যুর বাইরেও কিছু নতুন খবর পাই, কেউ কেউ সুস্থ হয়ে উঠছে।

বড়পির আব্দুল কাদের জিলানি তখন যুবক। পথ চলতে চলতে একদিন হঠাৎ থমকে দাঁড়ালেন। সৌন্দর্যের বিস্ময়কর ছটায় তিনি হতচকিত। শিরশির কাঁপুনি টের পেলেন রক্তের কোষে কোষে।

আশিক কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ রেখে আবার খোলার চেষ্টা করল। তেমন লাভ হলো না, কপাল বেয়ে ঘাম অনবরত গড়িয়ে গড়িয়ে ওর চোখে যাচ্ছে আর চোখ জ্বালা করছে।