হুমায়ূন আহমেদের গল্প ‘চোখ’

সজল রুহিকে ভালোবাসতে চায়। যদিও সজল তখনো নিশ্চিত নয়, এ ভালোবাসা অথবা ভালোবাসতে চাওয়া তাৎক্ষণিক, না অনেক দিনের জন্য।

প্রিয়তম, তোমার সুধামাখা পত্ৰখানি পাইয়া মনপ্রাণ শীতল হইল। নাথ, এতদিনের পর কি দীর্ঘ-বিরহের অবসান হইবে? তোমার চাঁদমুখখানি দেখিবার জন্যে আমার চিত্তচকোর উৎকণ্ঠিত হইয়া আছে।

সকাল থেকে  এ পর্যন্ত চার ট্রাক বাঁশের মুড়ো এসেছে। ইটভাটার চিমনির পাশে জড়-শেকড়-মাটি সহ বাঁশের মুড়োগুলো পাহাড়ের মতো স্তূপ করে রাখা। সূর্য ঠিক মাথার উপর।

শম্ভু বাজিকর এ মেলায় প্রতি বৎসর আসে। তাহার বসিবার স্থানটা মা কঙ্কালীর এস্টেটের খাতায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো কায়েমি হইয়া গিয়াছে। লোকে বলে, বাজি; কিন্তু শম্ভু বলে ‘ভোজবাজি-ছারকাছ’।

দোকানের এখানে সেখানে লেগে থাকা তেলের চিটা ঘষে ঘষে তুলে মজিদ একবার চারপাশে চোখ বুলালো। নাহ, এখন বেশ নতুন নতুন লাগছে দোকানটা। বেশ কয়েকমাস মুদির দোকানটা পরিষ্কার করা হচ্ছিল না।

এক সন্ধ্যায় আমার মেয়েবন্ধুর সঙ্গে যাচ্ছিলাম রিকশা দিয়ে। পার্কের পাশের রাস্তাটা ছিল নির্জন। দোকানপাটের বালাই ছিল না, কেবল ফুটপাথে বসতো ফেরিঅলারা। তারাও সন্ধ্যার পর খুব একটা থাকতো না।

পেঁয়াজ আর রসুনের কোয়াগুলো তেলে ফুটছে। আমেনা বিবি বাইরে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তবে হাত নাড়তে থাকে স্বভাবমতো। মনসুরের বাপ আজ বেতন পাবে, কথাটা মনে হতেই আবার চুলোয় দৃষ্টি দ্যায় সে।

‘আধুনিক’ কবিতা লিখলেও বল্লভ সেন কিছু আর সদ্য তরুণ নয়। রীতিমত প্রতিষ্ঠিত কবি। কবি সম্মেলনে পুরুত হতে আগে তার ডাক পড়ে। ভালো ভালো সাহিত্য পুরস্কারগুলি প্রায় সবই পেয়েছেন তিনি।