হুমায়ূন আহমেদের গল্প ‘চোখ’

মার্চের শেষ। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে চললাম শ্বশুরবাড়ি। সাথে মানুষজন বলতে আমার নতুন বর। যার হাতে আধো আলোর একটা হারিকেন। চোখমুখে ভয়। আমার সামনে দু’কদম আগে হাঁটছে মানুষটা।

জালালের মা সুমনকে মারছিল। কাজলি এসে ডান হাত দিয়ে সুমনকে ছাড়িয়ে কৈফিয়ত চাইতেই জালালের মা গাছিক অশ্লীল বাক্যবাণে জর্জরিত করে তাকে। খানিক বাদে শান্ত গলায় বেশ একটা ভদ্রভাব এনে জালালের মা সবাইকে ব্যাপার কি জানায়।

ঘুটঘুটে রাত। টুংটাং বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ ভেসে আসছে কবরস্থানের দিক থেকে। কৌতূহলি হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি এগিয়ে গেলেন সেদিকে। দেখলেন, এক যুবক সেখানে বসে মনোযোগ দিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছে

গালিব যাবে কাঁটাবনে। সেখানে নাকি কিছু কুকুর-বিড়ালের দোকান আছে। আপাতত তার ভাগনি মীমের জন্য একটি ছোটখাটো কুকুরের বাচ্চা কিনতে হবে। পিচ্চি ভাগনিটার জন্মদিন আগামীকাল। ছোট কুকুর খুব পছন্দ মেয়েটার

পাশের ফ্ল্যাটের কার্নিশের ছায়ায় বসে থাকা একলা পায়রাটাকে আর দেখা যায় না। জানালার গ্লাস সরিয়ে খুঁজি এদিক সেদিক। কোথাও চলে গেছে হয়তো। পায়রাটার কথা ভেবে আজ এই মধ্যরাতে খুব কান্না পাচ্ছে আমার

হাসিয়া ঝি বলিল, “যেমন রেখেছেন। আজ ছ’মাস আমি এ বাড়িতে চাকরি করছি, দিদিমণিকে রোজ জিজ্ঞাসা করি,—‘জামাইবাবু কবে আসবেন গো?—দিদিমণি বলেন, এই ছুটি হলেই আসবেন

আমি খুব খারাপ ছেলে, তা জানো? মা বাবা ছোটকা, পিসিমা, বড়দি, মেজদি, সব্বাই বলেছে, আমার মতো খারাপ ছেলে ওরা কোথাও দেখেনি

নবকুমার যে পথে আসে তার দুই ধারে বাঁশবন। মাইলের পর মাইল বাঁশবন পেরিয়ে স্কুলে আসে। এই তিন কিলোমিটার পথ তার আপনজন