হামাস নেতাকে সনাক্ত করতে ইজরায়েলের এআই প্রযুক্তি ব্যবহার

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : এপ্রিল ২৬, ২০২৫

হামাস কর্মকর্তাকে খুঁজে বের করতে এবং জিম্মি উদ্ধারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে ইজরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। নিউইয়র্ক টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন ও ইসরাইলি কর্মকর্তারা। আজ শনিবার প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

শুক্রবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনজন ইসরাইলি ও মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইডিএফের ইউনিট ৮২০০ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গাজা উপত্যকায় একজন হামাস কর্মকর্তাকে নির্মূল করতে এবং জিম্মিদের খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, উত্তর গাজায় অবস্থিত হামাস কমান্ডার ইব্রাহিম বিয়ারিকে হত্যা করার জন্য সেনাবাহিনী এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ইব্রাহিম ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরায়েলে হামলার পরিকল্পনায় সহায়তা করেছিলেন।

ইজরায়েলি ৪ কর্মকর্তা বলেছেন, তাকে খুঁজে বের করতে এআই প্রযুক্তি নজরদারির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের প্রথম কয়েক সপ্তাহে আইডিএফের জন্য বিয়ারিকে খুঁজে বের করা কঠিন ছিল। তাকে নির্মূল করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি এক দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু ইউনিট ৮২০০ ইঞ্জিনিয়াররা তাকে সনাক্ত এবং আক্রমণ করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিতে এআই প্রয়োগ করে। এরপরই আইডিএফ তাকে আঘাত করতে সক্ষম হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এআই প্রযুক্তি বিয়ারির ফোনকল শুনে তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এছাড়া জিম্মি ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে ইজরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও অডিও টুলটি ব্যবহার করে।

প্রতিবেদনে উদ্ধৃত দুই ইজরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, জিম্মিদের খুঁজে বের করার জন্য এআই টুলটি সময়ের সাথে সাথে পরিমার্জিত করা হয়েছিল।

২০২৩ সালের নভেম্বরে আইডিএফ জানিয়েছে, বিয়ারিকে হত্যা করা হামলায় আরও ৫০ জন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছিল।

পলিটিকোকে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পেন্টাগন গাজার আরও বেসামরিক হতাহত এড়াতে ইজরায়লি সেনাবাহিনীর কাছে হামলার পিছনে চিন্তাভাবনা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চায়। এরপর হামলা আরও সুনির্দিষ্ট করতে এআই ব্যবহার করা হয়।

এআই প্রযুক্তি সম্পর্কে তিনজন ব্যক্তি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, এই উদ্যোগগুলোর অনেকগুলি ইউনিট ৮২০০ সৈন্য এবং আইডিএফ রিজার্ভিস্টদের মধ্যে সহযোগিতা হিসাবে শুরু হয়েছিল যারা গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি সংস্থাগুলোতে কাজ করেছিল। তবে, গুগল উল্লেখ করেছে রিজার্ভিস্ট হিসাবে কর্মরত কর্মীরা যে কাজ করেন তা কোম্পানির সাথে সম্পর্কিত নয়।

এর আগে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর পর আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য ইজরায়েল এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল।

প্রতিবেদনে তিনজন মার্কিন ও ইসরাইলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দেওয়া হয়, যারা বলেছেন,  এই এআই প্রযুক্তিগুলো কখনও কখনও ভুল শনাক্তকরণের ফলে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হোলন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ইনস্টিটিউট ফর অ্যাপ্লাইড রিসার্চ ইন রেসপন্সিবল এআই-এর প্রধান হাদাস লরবার নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ব্যবহৃত প্রযুক্তি গুরুতর নৈতিক প্রশ্ন উত্থাপন করে।

লরবার ইজরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রাক্তন সিনিয়র পরিচালক ছিলেন।

প্রতিবেদনে আইডিএফের একজন মুখপাত্রকেও উদ্ধৃত করা হয়েছে যিনি দাবি করেছেন, সামরিক বাহিনী ডেটা প্রযুক্তি সরঞ্জামগুলির বৈধ ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।