মহাত্মা গান্ধী
সাম্প্রদায়িক শব্দের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং তার রাজনীতি
পর্ব ১০
রাহমান চৌধুরীপ্রকাশিত : অক্টোবর ৩০, ২০২০
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন যখন চলে, সেই উনিশশো চার সালে জিন্নাহ তখন কংগ্রেস দলের সঙ্গে যুক্ত হন। জিন্নাহ তখন তরুণ আইনজীবী এবং মুম্বাই শহরে আইনজীবী হিসেবে তার অবস্থান দ্বিতীয়। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ফিরোজশাহ মেহতা সে বছর লন্ডন যাবেন মুম্বাই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ রাজের সঙ্গে দরবার করতে। কিন্তু মেহতা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কংগ্রেস নেতা গোখলে এবং মুম্বাই রাজ্য পর্ষদ তখন তরুণ জিন্নাহকে মেহতার বিকল্প হিসেবে লন্ডনে পাঠতে চান। জিন্নাহ এভাবে কংগ্রেসের রাজনীতিতে সঙ্গে জড়িয়ে যান। ইতিপূর্বে লন্ডনে কংগ্রেসের সভাপতি দাদাভাই নওরোজির সঙ্গে তরুণ জিন্নাহর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জিন্নাহ আইন পড়ার সময় লন্ডনে থাকাকালীন ঘনঘন সেখানকার সংসদে গিয়ে বিভিন্ন দলের নেতাদের তর্কবিতর্ক শুনতেন। জিন্নাহ যখন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন গান্ধী চাকরি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায়। উনিশশো ছয় সালে মুসলিম লীগের জন্ম, জিন্নাহ তখন কংগ্রেসের সদস্য। মুসলিম লীগ তখন কিছুটা ইংরেজ ঘেঁষা কট্টর দল। বঙ্গভঙ্গ রদ হবার পর কিছু তরুণ সদস্য মুসলিম লীগের পূর্বের অবস্থান পাল্টে ফেলে সরকার বিরোধী ভূমিকা নিতে শুরু করলে সলিমুল্লাহ সহ রক্ষণশীলদের ক্ষমতা বিপন্ন হয়। মুসলিম লীগের নতুন নেতৃত্ব তরুণ মুসলিমরা তখন জিন্নাহর মতো ব্যক্তিত্ব এবং যুক্তিবাদী মানুষকে মুসলিম লীগে যোগদান করতে অনুরোধ জানান। জিন্নাহ নিজেও কংগ্রেসের রাজনীতি থেকে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন থাকাটাকে সঠিক মনে করেননি। জিন্নাহ চিন্তা করে দেখলেন, মুসলিম লীগ আর কংগ্রেস যদি যুক্তভাবে কাজ করে, ব্রিটিশ শক্তিকে তাড়ানো সহজ হবে। নিজেরা বিভেদ করলে ব্রিটিশরা সুবিধা পাবে। জিন্নাহ তাই শর্ত সাপেক্ষে মুসলিম লীগে যোগ দিতে রাজি হয়েছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন মুসলিম লীগকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। মুসলিম লীগ জিন্নাহর শর্ত মেনে নিলে জিন্নাহ উনিশশো তেরো সালে মুসলিম লীগে যোগদান করেন। তখন একই সঙ্গে দুটি দলের সদস্য হওয়া যেতো। জিন্নাহর কারণে খুব শীঘ্রই কংগ্রেস আর মুসলিম লীগ খুব কাছাকাছি চলে আসে। জিন্নাহর দেয়া শর্তমতো, মুসলিম লীগ তখন স্বায়ত্বশাসনকে দলের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার পাশাপাশি তা অর্জনের জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করতে আরম্ভ করে।
কংগ্রেসের সভাপতি গোখলে জিন্নাহ সম্পর্কে তখন বলতেন হিন্দু-মুসলমান বিভেদ দূর করার ব্যাপারে জিন্নাহ হচ্ছেন সাচ্চা ব্যক্তি। সরোজিনী নাইডু জিন্নাহকে নিয়ে একটি কবিতা লেখেন, সেখানে জিন্নাহকে বলা হয় ‘হিন্দু-মুসলিম মিলনের অগ্রদূত’। পরের বছর থেকে মুসলিম লীগ আর কংগ্রেস তাদের বার্ষিক সভা একই দিনে একই জায়গায় করতো, সময়টা ভাগ করে নেয়া হতো। কংগ্রেস সকালে করলে মুসলিম লীগের অধিবেশন হতো বিকালে। দুপক্ষই চাইতো দু পক্ষের প্রতিনিধিরা যেন দুটি সভায় উপস্থিত থেকে দুপক্ষেরই কার্যক্রম জানতে পারে। দুপক্ষের নেতারাই দুপক্ষের অধিবেশনে গিয়ে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য রাখতেন। দুটি দলের মধ্যে চমৎকার এক সখ্যতা গড়ে ওঠে এভাবে। দুই দল মিলে উনিশশো ষোল সালে স্বাক্ষর করে লখনৌ চুক্তি, যার মূল কথা যে-প্রদেশে মুসলমানরা সংখ্যায় কম সেখানে তাদের আসন জন সংখ্যার তুলনায় বাড়বে, ঠিক যেখানে আবার হিন্দুরা সংখ্যালঘু সেখানে তাদের আসন সংখ্যা জনসংখ্যার তুলনায় বাড়িয়ে দেয়া হবে। দু-দলের বেশির ভাগ নেতারা ছিলেন এই চুক্তিতে খুব খুশি। জিন্নাহ এই চুক্তির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা নেন, তিলক, বিপিনচন্দ্র সহ আর অন্যরাও জোরালো সমর্থন দেন। গান্ধী উনিশশো পনেরো সালে ভারতে ফিরে আসেন। কিন্তু তিনি তখনো কংগ্রেস দলের কেউ নন। লখনৌ চুক্তি তাঁর পছন্দ হলো না। কারণ কী বলা মুসকিল।
গান্ধী তখন একদিকে অহিংসার কথা বলছেন আর একদিকে ব্রিটিশকে সহযোগিতা করছেন যুদ্ধে। কংগ্রেস আর মুসলিম লীগ কেউ তখন ব্রিটিশকে প্রথম মহাযুদ্ধে সহযোগিতা দিতে রাজি নয়, কারণ ব্রিটিশ সরকার তাদের স্বায়ত্বশাসনের দাবি মেনে নেয়নি; ভারতীয়দের ব্রিটেনের সমান নাগরিক অধিকার দিতে অস্বীকার করেছে। সেইরকম একটা অবস্থায় গান্ধী ভারতে ফিরে গ্রামে গ্রামে গিয়ে ইংরেজদের জন্য সৈন্যবাহিনীর সদস্য সংগ্রহ করতে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস আর মুসলিম লীগের সিদ্ধান্তে বাইরে গিয়ে। গান্ধী নিজের জীবনীতে লিখেছেন, কিন্তু ভারতীয়রা সৈন্যসংগ্রহের এ ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করেনি। ইতিমধ্যে ব্রিটিশ শক্তির কাছে তুরস্ক প্রথম মহাযুদ্ধে হেরে যায়। ফলে তুরস্কের মুসলমান খলিফার পদটি আর থাকবার কথা নয়। মওলানা আজাদ সহ আরো অনেকের নেতৃত্বে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে ভারতের মুসলমানরা তখন খলিফার পদ টিকিয়ে রাখবার জন্য ‘খিলাফত আন্দোলন’ শুরু করে। গান্ধী তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী আন্দোলন করার জন্য বিশেষ মহলে পরিচিত হলেও, ভারতের সামগ্রিক রাজনীতিতে সেভাবে পরিচিত নন। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, মুসলমানদের সঙ্গে থেকে তিনি খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন দেবেন। তিনি মুসলমানদের শর্ত দিলেন, যদি মুসলমানরা ভারতে গো-হত্যা বন্ধ করে, তিনি তাহলে খিলাফত আন্দোলনের সঙ্গে থাকবেন। মুসলমান খিলাফতপন্থীরা গান্ধীর শর্ত মেনে নিলে, গান্ধী হিন্দুদের খিলাফত আন্দোলনের পক্ষে নিয়ে আসেন। তিনি হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের এটা বোঝালেন, হিন্দুরা ব্রিটিশ বিরোধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন দিলে মুসলমানরা গো-হত্যা বন্ধ করবে। ফলে গো-হত্যা বন্ধের শর্তে খিলাফত আন্দোলনে তিনি হিন্দুধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়ে গেলেন।
গান্ধী এরপর কংগ্রেস দলের সমর্থন লাভের চেষ্টা করেন খিলাফতের পক্ষে। গান্ধীর প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য উনিশশো বিশ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত কলকাতার বিশেষ কংগ্রেস অধিবেশনে গান্ধীর প্রস্তাবটি উত্থাপিত হলে জিন্নাহ সহ দলের প্রধান প্রধান হিন্দু নেতারা এর বিরোধিতা করেন। কংগ্রেসের কিছু মুসলমানরা ছিলেন খিলাফতের পক্ষে ফলে তাঁরা গান্ধীর পক্ষে রইলেন। গান্ধী ইতিমধ্যে রাওলাট বিল আন্দোলনে হরতাল ডেকে সাধারণের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। বিভিন্ন উলামারা, কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের মুসলিম নেতারা গান্ধীর খিলাফতকে ঘিরে অসহযোগ আন্দোলন প্রস্তাবকে সমর্থন জানান। খিলাফতকে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে তাদের দাবির মুখে কলকাতা কংগ্রেস ব্যাপারটি স্থগিত করে পরবর্তী নাগপুর সম্মেলনে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানান। জিন্নাহ কিছুতেই চাইছিলেন না ধর্ম-নিরপেক্ষ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ধর্মীয় এসব বিষয়কে সমর্থন দেয়া হোক। জিন্নাহর বক্তব্য, খিলাফত আন্দোলন হতেই পারে, কিন্তু যেহেতু তা ধর্মীয় আন্দোলন, সেক্ষেত্রে কংগ্রেস এরকম একটি ধর্মীয় বিষয়কে কেন সমর্থন জানাবে। কংগ্রেসের প্রধান প্রধান নেতারা জিন্নাহর সঙ্গে একমত ছিলেন। জিন্নাহ মনে করতেন গান্ধী গোহত্যা বন্ধের যে শর্ত দিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় আন্দোলনে হিন্দুদের সমর্থন আদায় করেছেন, এভাবে হিন্দু-মুসলমান ঐক্য টিকতে পারে না। বরং লখনৌ চুক্তি আর বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস আর মুসলিম লীগের মধ্যে যে সখ্যতা গড়ে উঠেছে, ধর্মীয় বিষয় নিয়ে এসব বাড়াবাড়ির কারণে তা ব্যহত হবে। ধর্মীয় নেতারা বা উলেমারা এর ভিতর দিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ লাভ করবে।
মুসলিম লীগ বস্তুত ইসলাম ধর্ম রক্ষার কোনো সংগঠন ছিল না। মুসলিম লীগের মূল দাবিটি ছিল পশ্চাদপদ সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা। ফলে মুসলমান কোনো ধর্মীয় নেতা বা উলেমা সম্প্রদায় মুসলিম লীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। মুসলিম লীগ ছিল তখন অভিজাত এবং উদারনৈতিক শিক্ষিত মুসলমানদের দল। জিন্নাহ ভয় পাচ্ছিলেন, খিলাফতকে সমর্থন দেয়ার ভিতর দিয়ে ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী রাজনীতিতে ধর্মান্ধ গোড়া মুসলমানরা প্রভাব বিস্তার করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাবে। সেজন্যই মুুসলিম লীগের মতো সংগঠনের খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন দেয়া পর্যন্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। গান্ধী সেখানে কংগ্রেসকে পর্যন্ত ধর্মান্ধ মানুষদের সঙ্গে যুক্ত করতে চাচ্ছেন। সেজন্য কংগ্রেসের সকল প্রধান নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নাগপুরে কিছুতেই গান্ধীর প্রস্তাব মতো খিলাফত আন্দোলনের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। জিন্নাহ সহ মালব্য, লাজপত রায়, মতিলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাস, তিলক, বিপিনচন্দ্র, সরোজিনী নাইডু, অ্যানি বেসান্ত প্রমুখ এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ একমত হলেন। ফিরোজ মেহতা আর গোখলে তখন বেঁচে নেই।
নাগপুর সম্মেলনে গান্ধী উপস্থিত হলেন প্রায় চোদ্দ হাজার মানুষ নিয়ে যারা খিলাফতের অন্ধ সমর্থক। সাধারণত সম্মেলনে উপস্থিত হতো বিভিন্ন প্রদেশের সক্রিয় নেতারা। সভায় বসে সকলের মতামতের ভিত্তিতে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতেন। গান্ধী তখন নিজের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এরকম অসাংবিধানিক কাজ করলেন। কংগ্রেসের বার্ষিক প্রতিনিধি সভাকে জনসভা বানিয়ে ফেললেন। গান্ধীর প্রভাবে হিন্দু-মুসলমান ধর্মীয় নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এমন ঘটনা ঘটেছিল। মুসলিম ধর্মীয় নেতারা সকলে খিলাফতের নামে তখন গান্ধীর পেছনে দাঁড়িয়ে গেলেন ভারতের রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার জন্য। মুসলমান ধর্মীয় নেতাদের একজন বলেই ফেললেন, বহুকাল পর্যন্ত মনে করা হতো আমরা শুধু ধর্মকে নেতৃত্ব দেবো, রাজনীতিকে পরিচালনা করবেন অন্যরা কিন্তু ঘটনাচক্রে যখন রাজনৈতিক বিষয়ে আমাদের নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ এসেছে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো। নাগপুর সম্মেলনে গান্ধীর পেছনে এত মানুষের সমর্থন দেখে কংগ্রেস নেতারা ভীত হলেন। সেদিনের অধিবেশনে গান্ধীর বিরাট সমর্থকরা বহু বছরের কংগ্রেসের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে ব্যক্তির নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন, সেখানে উচ্চারিত হচ্ছিলো ‘গান্ধী জিন্দাবাদ’। কংগ্রেসের অধিবেশনের গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যে কখনো আগে এসব ঘটেনি। কিন্তু গণতান্ত্রিক রীতিনীতির বাইরে গিয়ে নতুন এক কংগ্রেসের জন্ম হলো সেদিন। বিরাট সমাবেশে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের সকল নেতারা বুঝলেন, গান্ধীর দাবির বিরুদ্ধে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে না। সকলেই তারা জনমতের চাপে ‘খিলাফত আন্দোলনে’র বিরুদ্ধে যেতে চাইলেন না।
জিন্নাহ ছাড়া সকলেই তাঁরা পূর্বের মত পাল্টে ফেললেন। জিন্নাহ কিন্তু নিজের জায়গায় স্থির থাকলেন, ধর্মান্ধ কিছু মানুষের কাছে তিনি নিজেকে সমর্পণ করলেন না। তিনি সভায় দাঁড়িয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে থাকলেন। তিনি কংগ্রেসের মতো দলের খিলাফতের মতো একটি ধর্মীয় বিষয়কে সমর্থন দেয়ার সুযোগ নেই বলেই মনে করলেন। কারণ খিলাফতের সঙ্গে ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সামান্য সম্পর্ক নেই, ইসলামিক জগতের আন্দোলন সেটা। জনতা যখন বুঝলেন, জিন্নাহ খিলাফতকে সমর্থন দেয়ার বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তখন চীৎকার চেঁচামেচি করে জিন্নাহকে বক্তৃতা দিতে বাধা দিচ্ছিলেন। গান্ধী নিজ পক্ষের উপস্থিত জনতাকে বললেন না যে, অধিবেশনের শিষ্টাচার মেনে জিন্নাহর কথা শোনা হোক। বরং গান্ধী জনতার প্রতিক্রিয়ায় খুশি হলেন। বাকি নেতারা বিপদ দেখে ভয়ে চুপ করে রইলেন। জিন্নাহ সাহসের সঙ্গে জনতার রোষকে অগ্রাহ্য করে নিজের বক্তৃতা সম্পন্ন করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, পুরানো কংগ্রেসের মৃত্যু ঘটেছে গান্ধী নামক এক ব্যক্তির পূজার ভিতর দিয়ে। ভারতের রাজনৈতিক দলে সত্যিই সেদিন থেকেই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি বাদ দিয়ে ব্যক্তিপূজা আরম্ভ হয়। ব্যক্তির নির্দেশে দল চলতে আরম্ভ করে। ফলে জিন্নাহ সেদিন বক্তৃতা শেষ করে কংগ্রেস দল ত্যাগ করে চলে আসেন। সেদিন মুসলিম লীগের পরের অধিবেশনেও তিনি আর যোগদান করেন না। চলবে