সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে, ইরান নাকি ইজরায়েল

ইরান ও ইজরায়েল যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। সামরিক দিক থেকে কোন দেশ এগিয়ে? দুটি দেশই সামরিক শক্তিধর দেশের শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে। সামরিক সক্ষমতায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে র‍্যাংকিংয়ে ইরানের অবস্থান ১৪ আর ইজরায়েলের অবস্থান ১৭।

প্রতিরক্ষা খাতে ইরান ও ইজরায়েল দুই দেশই প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। তবে বাৎসরিক সামরিক বাজেটে ইরানের তুলনায় ইজরায়েলের ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৪৪০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ইরানের বাজেট ৯৯৫ কোটি ডলার। এই র‍্যাংকিংয়ের ১৪৫ দেশের মধ্যে ইরান ৩৩তম অবস্থানে আর ইজরায়েল ১৯ তম অবস্থানে রয়েছে।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার জানাচ্ছে, সৈন্য সংখ্যার হিসেবে ইজরায়েলের চেয়ে এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের নিয়মিত সেনা আছে ১১ লাখ ৮০ হাজার। ইজরায়েলের সৈন্য ৬ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ইরানের রিজার্ভ সৈন্য সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ আর ইজরায়েলের রিজার্ভ সেনা আছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার।

ইরানের মোট সামরিক বিমানের সংখ্যা ৫৫১টি আর ইজরায়েলের আছে ৬১২টি। এর মধ্যে ইরানের যুদ্ধ বিমান আছে ১৮৬টি আর ইজরায়েলের যুদ্ধবিমান আছে ২৪১টি।

ইরানের অ্যাটাকিং বিমান সংখ্যা ২৩টি, ইজরায়েলের ৩৯টি। ইরানের পরিবহন বিমান ৮৬টি, ইজরায়েলের আছে ১২টি। ইরানের প্রশিক্ষণ বিমান ১০২টি, ইজরায়েলের ১৫৫টি।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের হেলিকপ্টার আছে ১২৯টি আর ইজরায়েলের ১৪৬টি। ৪৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার নিয়ে ইরানের চেয়ে শক্তিশালী ইজরায়েল। ইরানের অ্যাটক হেলিকপ্টারের সংখ্যা ১৩টি।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’র তথ্য অনুযায়ী, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের দিক থেকে ইজরায়েলের চাইতে এগিয়ে ইরান। ইজরায়েলের ট্যাংক আছে ১৩৭০টি আর ইরানের ১৯৯৬টি।

সাঁজোয়া যান আছে ইরানের ৬৫ হাজার ৭৬৫টি আর ইজরায়েলের ৪৩ হাজার ৪০৩টি। এছাড়া আর্টিলারি সক্ষমতায় এগিয়ে ইরান। তাদের রকেট আর্টিলারি এমএলআরএস এর সংখ্যা ৭৭৫টি এবং সেলফ প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৫৮০টি। অন্যদিকে ইজরায়েলের এ দিক থেকে সেফল প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৬৫০টি এবং এমএলআরএস বা রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ১৫০টি।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার বলছে, নৌবাহিনীর শক্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান। দেশটির ১০১টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে যেখানে ৭টি ফ্রিগেট এবং ২১টি টহল জাহাজ আর ইজরায়েলের যুদ্ধজাহাজ সংখ্যা ৬৭টি। এর মধ্যে টহল জাহাজ আছে ৪৫টি এবং ইজরায়েলের কোনো ফ্রিগেট নেই। সাবমেরিনের দিক থেকেও ইরান শক্তিশালী। দেশটির সাবমেরিন আছে ১৯টি যেখানে ইজরায়েলের সাবমেরিন আছে ৫টি।

সুইডেন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) শেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শুরুতে বিশ্বের ৯টি দেশের কাছে প্রায় ১২ হাজার ৫১২টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে।

দেশগুলো হলো: যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া  ইজরায়েল। এই তালিকায় ইরানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ছিল না।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার দাবি করেছে, ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। ইরান দাবি করে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেনি যে, কোন দেশের হাতে কতটি এ ধরনের অস্ত্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতার বিষয়টি তারা তাদের রিপোর্টে বিবেচনায় নেয়নি। সূত্র: বিবিসি