শিবু কুমার শীল
শিবু কুমার শীলের ৫ কবিতা
প্রকাশিত : মে ২৭, ২০২২
নাম বলো
যে বিকেল আকাশ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে আজ
তার এক আশ্চর্য সন্তাপ
মিহি বাতাসের মতো বুঝি সীমানা ছাড়ালো
বলো স্ট্রিট লাইট, সন্ধের অহেতুক নাম বলো।
নামের বানানে থাকে দুঃখের অক্ষর
নামের শরীরে সুধা মেঘমন্দ্রস্বর
কী রকম কী তার অবোধ উচ্চারণ
তাই সোজাসুজি নাম বলো
সকাল কিভাবে পাতার শরীরের
শুয়ে থাকে, তার কথা বলো।
৩ এপ্রিল ২০২২
নারিন্দা
বৃষ্টির মতো কার যেন নাম
চোখে বালির ঝাপটা এসে
নদীর কথা আর ছোটকালের
ঝিরির পথ মনে এনে দেয়।
উড়ন্ত জানালার পর্দা, বাতাস এসে
ঘরের ভেতরে, শরীরের ভেতরে
যেমন অগণন স্পর্শরা লুকায়।
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা বালিশে
পুরোনো শ্যাম্পুর গন্ধে অন্ধকার মনে রেখে...
আঙুলে জলের ছাঁট এসে
বৃষ্টির মতো কার যেন নাম লিখে যায়।
২৯ এপ্রিল ২০২১
নারিন্দা
ব্যর্থ পঙক্তিমালা
বহু গানের দুয়ার খুলে
এখানে এক অচিন লিরিক
পাখি হয়ে বসে আছে।
না গান না উড়াল
এমতাবস্থায়।
ফুল, নক্ষত্র আর নানাবিধ ভ্রমণ শেষে
হোম কর্ডে ফেরা।
যেখানে সুর পাঁজরে লেখা স্বরলিপির মতো
ব্যর্থ পঙক্তিমালা।
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আমাকে শুনতে থাকো
আমাকে শুনতে থাকো
এই ঘাসগন্ধটার মতো।
তাই বলে আমার পোড়া ঘর আর
হৃদপিণ্ডটার কথা ভুলো না।
শুনে দেখো কোথাকার লিরিক
কোথাকার বেদনার ধাম।
এই কথাবার্তাগুলো গোপন রাখো
বসে থাকো আমার কথার আশ্রমে
নিরিবিলি চুমু খেয়ে আবার রোদের দিকে
যেতে যেতে আমাকে বেঁধে রাখো এই
একমাত্র সম্বলে, হারিয়ে ফেলা পথের ধুলায়।
আমাকে এখানেই রাখো
যেখানে একদা ঘর ছিল
যেখানে ভাটফুল, রাধাচূড়া ফুটে থাকত
পায়ের তলায় নরম মাটি ছিল
আর শত শত কবরে ছিল
হাস্নুহেনার সুবাস।
আমাকে শুনে দেখো
কী রকম ব্যথাতুর মাটির মতো নরম আমি।
২১ অক্টোবর ২০২১
নারিন্দা
বাবা বাবা
এমন এক মুক্তি
যা সেভ করে রেখেছি।
কোথায়?
মনে পড়ছে না।
ধরা পড়ে যাওয়া আর
আগুন গিলে ফেলাটুকু
আপাতত জমা দেব।
মেমোরিতে শীত শীত ভয়
যেখানে আমার রিমান্ড মঞ্জুর করা আছে।
বাবাকে কথা দিয়েছি
ওষুধ নিয়ে ফিরবো।
বিশুদ্ধ ইনহেলার।
বাবা বাবা
ইনহেল করতে পারছি না
এই জঞ্জালগুলো।
আমার জমজ এসে শরীরে শোঁকে
বাতাসের ঘ্রাণ।
কান কেটে নিয়ে যাচ্ছে কে?
আর সেলাই করে দিচ্ছে কথাদের।
বাবা, আমাকে কথার মালা দিও।
মুক্তির মতো কিছু সেভ করা আছে কোথাও
যা খুঁজে পাচ্ছি না ব্রো।
১ মার্চ ২০২১
নারিন্দা