রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান অবস্থা
সাইফুল্লাহ আল মানসুরপ্রকাশিত : মার্চ ২৩, ২০২২
ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। এ সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অচলাবস্থা stalemate চলছে। রুশ সেনাবাহিনী যুদ্ধে যতটা সম্ভব ইউক্রেনের এলাকা দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও যতটা পিছু হটতে পারতো ততটা পিছু হটেছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ সেনাবাহিনীকে পিছু হটাতে পারছে না। অন্যদিকে রুশ সেনাবাহিনী সামনে খুব একটা এগুতে পারছে না। ইউক্রেন-রাশিয়ার অচলাবস্থা ইউক্রেনের তিনটি শহরে থেমে গেছে। প্রথম শহর হলো, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। কিয়েভের উত্তরে এবং পূর্বে রুশ সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকলেও তারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও সেচ্ছাসেবকদের প্রতিরোধের মুখে এগুতে পারছে না। দ্বিতীয় শহর হলো, খারকিভ। যা রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। খারকিভ শহরকে রুশরা চারিদিক থেকে ঘিরে ফেললেও রুশরা এখনো এটি দখল করতে পারেনি৷ তৃতীয় শহর হলো, সমুদ্র তীরবর্তী বন্দর নগরী মারিওপোল। খারকিভের ব্যাপারে রুশ সেনাবাহিনী বলেছিল, তারা এটা মাত্র একদিনেই দখল করে নিতে পারবে। কিন্তু যুদ্ধের চতুর্থ সপ্তাহেও রুশরা খারকিভ দখল করতে পারেনি। ইউক্রেনের এই তিনটি শহর ইউক্রেনের প্রচণ্ড প্রতিরোধের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। যা থেকে ইউক্রেনের জনগণ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। এই তিনটি শহর এখনো রুশদের দখলে না যাওয়ার ফলে রুশ সেনাবাহিনীও মনোবল হারাচ্ছে। ইউক্রেন কীভাবে এত প্রতিরোধ করতে পারছে?
এর উত্তর হলো, ইউক্রেনের প্রতি আমেরিকা ও ইউরোপের অস্ত্র ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা। ১৬ মার্চ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আমেরিকার কংগ্রেসে ভাষণ দিয়েছেন। তার ভাষণ বেশ জ্বালাময়ী ছিল। তিনি আমেরিকাকে নাইন এলিভেন, পার্ল হারবার মনে করিয়ে দেন। তিনি আমেরিকার কৃষাঙ্গ মানবাধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের বিখ্যাত উক্তি I have dream, I have a plan উদ্ধৃত করেন। তার এই ভাষণের পর আমেরিকা ইউক্রেনের জন্য ১৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তায় আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি করেছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও সেচ্ছাসেবক যোদ্ধাদের কাছে অনেক বেশি পরিমাণে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে। আমেরিকা ৮০০ স্ট্রিংগার সারফেস টু এয়ার মিসাইল দিয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০০০ এর অধিক জুভেলিয়ান এন্টি ট্যাংক মিসাইল Javelin Anti Tank Missile দিয়েছে। এই মিসাইলটিও সারফেস টু এয়ার মিসাইল। যা ট্যাংক এবং যুদ্ধ বিমানকে আঘাত করতে পারে। জুভেলিয়ান মিসাইল ট্যাংকের বিরুদ্ধে বেশি কার্যকরী। এসব মিসাইলের মাধ্যমে রুশ বিমান ও হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। ইউক্রেনকে প্রচুর পরিমাণে গোলা বারুদ, আর্টিলারি, গ্রেনেড দেওয়া হয়েছে এবং আরও অনেক পাঠানো হচ্ছে। ইউক্রেনের কাছে তুরস্কের তৈরি ২০০ টি টিবি-২ বায়রাক্তার ড্রোন রয়েছে। যা ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে রুশ ট্যাংকে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে। এসব অস্ত্রের মাধ্যমে ইউক্রেন রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অনেকটা প্রস্তুত হয়ে গেছে। রুশ বিমানবাহিনী সম্পূর্ণ হামলা শুরু করলেও ইউক্রেনের হাতে নিজেদের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট অস্ত্র রয়েছে।
প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় আমেরিকা ও তার মিত্রদের তুলনায় ইরাকের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ততটা উন্নত না থাকলেও ইরাক সেই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ৪০টিরও বেশি বিমান ভূপাতিত করেছিল। আর ইউক্রেনের রয়েছে ইরাকের চেয়েও শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এছাড়া ইউক্রেন আমেরিকা ও ইউরোপ থেকে অস্ত্র সহযোগিতাও পাচ্ছে। তাই ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে টিকে থাকার মতো সক্ষম অনেকটা। ইউক্রেনের সেনারা ব্রিটেনের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করার সময় ব্রিটিশ রাণীর সুস্বাস্থ্য কামনা করছে। ইউক্রেনের হাতে কত পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে, এর আন্দাজ এভাবে করা যায় যে, কিছুদিন আগে বিবিসির টিম খারকিভে গিয়েছিল। বিবিসির টিমকে রুশবাহিনী ঘিরে রাখলেও ইউক্রেনের বাহিনীর প্রতিরোধ প্রচণ্ড ছিল। ফলে বিবিসির টিম খারকিভে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক অস্ত্র খারকিভে ইউক্রেনের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রুশ হামলার পরও ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ জারি রয়েছে এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সাপ্লাই লাইন অনেক মজবুত। এখনো পর্যন্ত ইউক্রেন ১৩ হাজারের বেশি রুশ সেনা হত্যার দাবি করেছে। একটি অনুমান অনুযায়ী, ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ১০ শতাংশ রুশ সৈন্য হয় মারা গেছে না হয় আহত হয়েছে। রাশিয়ার মতো বৃহৎ সামরিক শক্তির জন্য এটা একটা বড় ক্ষতি। ইউক্রেন এখনো পর্যন্ত ২৩৩টি ট্যাংক এবং ৩২টি সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম ধ্বংস করেছে। এছাড়া বিমান, হেলিকপ্টার ও ড্রোনসহ ৪১টি রুশ আকাশযান ইউক্রেন ধ্বংস করেছে। এমন কিছু ভিডিও ও ছবিও দেখা গেছে যেখানে ইউক্রেনীয়রা বিকল রুশ ট্যাংক কিংবা মিসাইল সিস্টেম ট্রাক দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। রুশ ট্যাংকের কাদামাটিতে আটকে পড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
রাশিয়া এসব ক্ষতির পর তার কৌশল বদলেছে। রাশিয়া এখন দ্রুত অগ্রসর হয়ে জোরদার হামলা করার পরিবর্তে কিয়েভ, খারকিভ ও মারিওপোলকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এর ওপর গোলা বর্ষণ করছে। যাতে করে এই শহরে কোনো প্রতিরোধ অবশিষ্ট না থাকে। চার সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে এখন কিছুটা হলেও যুদ্ধ বিরতি কিংবা যুদ্ধ শেষ হওয়ার আলামত দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কিছু দিন আগে বলেছেন ইউক্রেন এখন আর ন্যাটোর সদস্য হতে ইচ্ছুক নয়। এটা বলার পরই তিনি আমেরিকার কংগ্রেসের ভাষণে আরও বেশি অস্ত্র সহায়তা চেয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার জন্য ৩টি দেশের গ্যারান্টি চেয়েছেন। এই তিনটি দেশ হলো: আমেরিকা, ব্রিটেন ও তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন আমরা ন্যাটোতে না গেলেও কোনো দেশ আমাদের ওপর হামলা করলে এই তিন দেশ আমাদের সুরক্ষা দেবে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্যের নিশ্চয়তা চাচ্ছেন। উল্লেখ্য, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ সদস্যের একটি। যদি আমেরিকা, ব্রিটেন ও তুরস্ক ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয় তাহলে হয়তো যুদ্ধ বিরতি হতে পারে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, রাশিয়া ও ইউক্রেনের আলোচনা ইউক্রেনের নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হওয়ার পথে অগ্রসরমান। কিন্তু রাশিয়ার এসব কথায় ভরসা করা যায় না। কয়েক মাস ধরে যখন রাশিয়া নিজের এলাকায় এবং বেলারুশে মহড়া চালাচ্ছিল তখন থেকেই সে বলেছিল, সে আক্রমণ করবে না। কিন্তু সে আক্রমণ করলো। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার যুদ্ধ বিরতির কিংবা যুদ্ধ শেষ করার কোন ইচ্ছে নেই।
রাশিয়া ও আমেরিকার যুদ্ধ করার কারণ এবং যুদ্ধ করার ধরনে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্য প্রধানত তিন প্রকার। প্রথম পার্থক্য হলো, উদ্দেশ্যের পার্থক্য। রাশিয়া তার অতীত সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রুশ সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে থাকা দেশগুলোর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে সেগুলোকে দখল করে নেয় কিংবা প্রভাব বলয়ে ঢুকিয়ে নেয়। যাতে করে সেসব দেশের অনেকগুলো রাশিয়ার অংশ হয়ে পূর্বের বৃহৎ রাশিয়া তৈরি হয় কিংবা এসব দেশ যাতে আমেরিকার প্রভাব বলয়ে না যায়। রাশিয়া বেশিরভাগ যুদ্ধ তার প্রভাব বলয় কিংবা নিজের নিরাপত্তার জন্য করে থাকে। অন্যদিকে আমেরিকা এ উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে না। আমেরিকা অধিকাংশ যুদ্ধ অর্থনৈতিক স্বার্থে করে থাকে। আমেরিকা তার বিখ্যাত ইরাক যুদ্ধ করেছে তেলের জন্য। অর্থ্যাৎ অর্থনীতির জন্য। আমেরিকা সব সময় নিজের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। নিজের শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য আমেরিকা নতুন নতুন শিল্প উদ্ভাবন করে এবং সেসব শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল যেসব দেশ থেকে আসে সেসব দেশকে নিজের ও তার মিত্রদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণে রাখে। আমেরিকা নিজের অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে এধরনের দেশের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে, যুদ্ধ করে। বিগত ২০ বছরে আমেরিকা সন্ত্রাস দমনের নামেও যুদ্ধ করেছে। তবে এসব যুদ্ধও আমেরিকার অর্থনৈতিক স্বার্থে ছিল। এসব যুদ্ধের সময় আমেরিকা তার তৈরিকৃত অস্ত্রের আধুনিকায়ন করেছে। পৃথিবীর ৯৮টি দেশের কাছে মোটা টাকার অস্ত্র বিক্রি করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধও আমেরিকা তার অর্থনীতির জন্য করেছে। আমেরিকা তার অর্থনীতিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলার জন্য যুদ্ধ করে। অন্যদিকে রাশিয়া নিজের অর্থনীতির অনেকটা ধ্বংস করে যুদ্ধ করে।
দ্বিতীয় পার্থক্য হলো, যুদ্ধ করার ধরন। রাশিয়া তার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে তাঁকে আক্রমণ করে। ট্যাংক, সৈন্য ও মিসাইল দিয়ে আক্রমণ করে শত্রুকে পুরোপুরি চেপে ধরতে চায়। অন্যদিকে আমেরিকা কোনো দেশের ওপর অসন্তুষ্ট হলে সর্বপ্রথম তার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। ওই দেশ থেকে পণ্য আমদানি করলে তা বন্ধ করে দেয়। ওই দেশে আমেরিকা পণ্য রপ্তানি করলে তা বন্ধ করে দেয়। আমেরিকা এটা করে ওই দেশকে সহজেই বড় ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। আমেরিকা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতি। আমেরিকা যখন কোনো দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তখন ওই দেশের রপ্তানি আয়ের অনেকটা আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আমেরিকা কোনো দেশে পণ্য রপ্তানি করলেও সে দেশ আমেরিকার পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ফলে আমেরিকা তার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করে যুদ্ধ না করেই ছোট কিংবা মাঝারি আকারের দেশের বিরুদ্ধে বড় স্বার্থ উদ্ধার করতে পারে। রাশিয়া আমেরিকার মতো এত বড় অর্থনীতি নয়। রাশিয়ার আমেরিকার মতো এত টাকা নেই যা দ্বারা সে অনেক দেশকে ঘায়েল করতে পারবে। তাই তাকে সরাসরি যুদ্ধের পথই বেছে নিতে হয়। আধুনিক যুগে রাশিয়া ও আমেরিকার যুদ্ধ নীতিতে এটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য।
তৃতীয় ও সর্বশেষ পার্থক্য হলো, সৈন্য সংখ্যার। আমেরিকা যুদ্ধে সবচেয়ে কম সৈন্য পাঠিয়ে সবচেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করতে চায়। আমেরিকা যুদ্ধে সাইবার অ্যাটাক, এয়ার স্ট্রাইক, যুদ্ধ জাহাজ থেকে মিসাইল হামলা করে যুদ্ধের বেশি থেকে বেশি কাজ করে ফেলতে চায়। যাতে তার কম সৈন্য মারা যায়। যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত আমেরিকান সৈন্যের লাশ আমেরিকান পতাকায় মোড়া অবস্থায় আমেরিকায় পৌঁছালে পুরো আমেরিকায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। মিডিয়া প্রকাশ্যে সরকারকে দোষারোপ করে। এর ফলে প্রেসিডেন্টকে প্রচণ্ড চাপ সহ্য করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। এর কারণ হলো, আমেরিকার মিডিয়া প্রায় সম্পূর্ণ স্বাধীন। যা আমেরিকার সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে রাশিয়া যুদ্ধের সময় যতটা বেশি সম্ভব সৈন্য প্রেরণ করে। কতজন সৈন্য মারা গেল তা নিয়ে রাশিয়ার কোনো মাথাব্যথা থাকে না। কারণ রাশিয়ার মিডিয়া পুরোটাই সরকার নিয়ন্ত্রিত। রাশিয়া বেশি সংখ্যক সৈন্য পাঠিয়ে যুদ্ধ জিততে চায়। উদাহরণস্বরূপ ভিয়েতনামে আমেরিকা ১০ বছর যুদ্ধ করে। এতে আমেরিকার ৫৮ হাজার ২০০ সৈন্য নিহত হয়। এরপর থেকে আমেরিকা শিক্ষা গ্রহণ করে, কোনো যুদ্ধে এত বেশি সৈন্য নিহত হতে দেয়নি। আফগানিস্তানে ২০ বছর এবং ইরাকে ১৭ বছরের যুদ্ধে সব মিলিয়ে ৭০৫৪ জন সৈন্য মারা গেছে। অন্যদিকে মুসলিম দেশ চেচনিয়াকে দখল করার যুদ্ধে রাশিয়ার ১০ হাজারের বেশি এবং বর্তমান ইউক্রেন যুদ্ধে এরই মধ্যে সাত হাজার কিংবা ১০ হাজার রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে। রাশিয়া এখনো পর্যন্ত এই যুদ্ধে তার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। উল্টো তার অর্থনীতির ওপর প্রচণ্ড চাপ সহ্য করছে। আপাতত আমেরিকা ও ইউরোপ ইউক্রেনকে কুরবানি দিয়ে রাশিয়াকে ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। দেখা যাক ভবিষ্যতে কে জেতে! যেই জিতুক এই যুদ্ধে, ইউক্রেন হারবে তা নিশ্চিত।