রওশন আরা মুক্তা
রওশন আরা মুক্তার দুটি কবিতা
প্রকাশিত : মে ১২, ২০২১
কমিটির দপ্তর
উৎসর্গ: সাদাত হাসান মান্টো
নেবে বলে কত নারী-শিশু প্রতীক্ষায় ছিল পৃথিবীর কত কোণে
এ জন্মে না হলেও, নিও তাদের পরের জনমে
রুগ্ন-শীর্ণ কাফেলা তাদের উড়ছে আসমান পানে...
কোঁকড়া চুলের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েগুলো এখন কেমন আছে—
খোঁজ নিয়েছিলে? রিবন্ডিং করেছে নাকি এবার চুলে?
কেমন আছে মধ্যবয়স্ক নারীরা—
মজ্জা শেষ হয়ে গেলে যাদের ফানুসের মতো উড়িয়ে দিয়েছিলে!
আর তোমার আম্মারা— এখনও একাই সেই সুবিশাল কারাগারে?
আমার পাগল ভালো আছে, ঘোড়া আস্তাবলে বেঁধে রেখেছে
খিস্তিগুলো রোজ সকাল-বিকাল জল দিয়ে গিলে খাচ্ছে
যে সময়টা চলে গেছে, কী করবে এখন তা পেলে—
পিতৃহন্তারক ছুরিটা ধুয়ে ফেলবে নাকি রাঙাবে বিপরীতের লালে?
`দুআ`য় বসে থাকো এতিমের চামড়ার জায়নামাজের ওপরে
কাঁদতে থাকো রক্তজমা খেজুর-শরবত সাজানো ইফতারের সামনে
বেঘোর ঘুমাও, গলাকাটা লাশটা প্রতিরাতে আসুক স্বপ্নে,
সেই সকালের, সেই লোবানের গন্ধ পাও ঈদের নতুন কাপড়ে
আমি প্রতিদিন গুণতে থাকি চলতে থাকি অগণিতের সন্ধানে
সৌরজগতের সকল লজ্জা নিয়ে যুদ্ধ চলতে থাকে ফিলিস্তিনে
খাদ্যসংকট চলতে থাকে সিরিয়ায়, ইয়েমেনে…
ভাসান
আলো-আঁধারে হারানো দেশ ভাসে
তার মৃদু মুদিত দুই চোখে
ইলিশের ঘ্রাণে কলাইয়ের ক্ষেতে
আবার সে যেন জাগে
একই গানে সুর মেলানো জাগা কারা যেন
অবাস্তব সব আশে
চেয়ে দেখি, সমস্ত মানবসভ্যতা এক হয়ে যেন
ঘুমায় আমার পাশে
কেউ না থাকুক তবু কেউ তো দেখে
কেউ না রাখুক তবু কেউ তো রাখে
প্রতিরাতে আয়াতুল কুরসি পড়ে যেন কেউ
তার ওই গলন্ত মুখে