মিনহাজুল ইসলামের প্রবন্ধ ‘ফ্রয়েড নিয়ে কথকতা’
প্রকাশিত : আগস্ট ১৫, ২০২২
সাহিত্যের সবচাইতে মূর্ত ও অনিশ্চিত শাখা সম্ভবত আত্মজীবনী কিংবা জীবনী। যদিও আত্মজীবনীকে যদি সাহিত্য বলা হয়, জীবনীকে বলা যায় ইতিহাস। আবার আত্মজীবনী বা জীবনী দুটোকেই একত্রে ইতিহাসের বিষয়বস্তু হিসেবে গণ্য করা অসমীচীন নয়। আত্মজীবনী বা জীবনী পড়ার এক ধরনের বাতিক আমার কয়েক বছর যাবত। আত্মজীবনী মাত্রই তার আবেদন আমার কাছে একটু অন্যরকম। কোনো দর্শন বা ইতিহাসের বইয়ের মর্যাদা না পেলেও, আত্মজীবনী বা জীবনী বরাবরই একটি অসংজ্ঞায়িত মূল্য বহন করেই। আবার জীবনী মাত্রই তা গবেষণার বিষয়বস্তু বটেও। আত্মজীবনী লেখা কিংবা জীবনী লেখার সংস্কৃতিটা লেখা ও চিন্তার জগতে ঠিক কখন প্রতিষ্ঠিত হয়, আমার জানা নাই। কিন্তু মোটামুটি একটু ঠাহর করলে প্লেটো কিংবা জেনোফোন থেকে আমরা তেমন একটা চর্চার দেখা পাই। আবার পুরাতন নিয়ম তথা old testament এর মাধ্যমে আমরা জীবনী লেখা (নবিদের কাহিনি) চর্চার একটা ঐতিহাসিক উৎপত্তির বিন্দু খুঁজে পাই।
মার্কসের এ যাবত চারটি জীবনী আমি পড়েছি। তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম Sir Isaiah Berlin এর Karl marx, his life and environments। এছাড়া David Mclellan এর Karl Marx: His Life and Thought দারুণ। কিন্তু আমার এখনো মনে হয়, আমি মার্কসের জীবনী সম্বন্ধে কিছুই জানি না। অর্থাৎ আমার নিকট জীবনীর বিষয়টি নেহাৎ সাহিত্যিক ও তথ্যভিত্তিক নয় বরং দার্শনিক ও ঐতিহাসিক। ইদানীং অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও বিবিধ অর্থনৈতিক তত্ত্বের ইতিহাস পড়ার কারণে জীবনী ও আত্মজীবনী পড়ায় ভাটা পড়েছে। কিন্তু বন্ধ হয়নি। সেই হিসেবে আমার মতে, মানবসভ্যতার বিকাশ যতটুকু হয়েছে এবং এই বিকাশের পেছনে যেসকল চিন্তাসম্রাটের হাত আছে, সেই সকল চিন্তাসম্রাটদের সাম্রাজ্যের ইতিহাস বুঝার সাথে সাথে তাদের জীবনী পড়া জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে একটি নৈতিক দায়িত্ব। সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে জার্মান ভাষার অধ্যাপক, গবেষক ও চিন্তাবিদ হিসেবে অনেকেই জানেন। যাকে মনোবিশ্লেষণ psychoanalysis তত্ত্বরাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
চিন্তার জগতে তার অবদান সম্বন্ধে নতুন করে বলার কিছু নাই। তাছাড়া আমি নিজেও ফ্রয়েড বিশেষজ্ঞ নই। তার পাঁচটা লেকচার, তিনটা বই ও কিছু চিঠিপত্র ছাড়া আমার আর তেমন কিছুই পড়া হয়নি। কিন্তু ফ্রয়েড নিয়ে আগ্রহের শেষ ছিল না কখনোই। ফ্রয়েড বরাবরই আমার কাছে মার্কস কিংবা হেগেলের সমান চিন্তাবিদ। এই বিচার আমার বলে তুচ্ছ হতে পারে কিন্তু ইউরোপ মহাদেশের বড় বড় তত্ত্বজ্ঞানীরা ও এই ধারণাই পোষণ করে। ফ্রয়েড আত্মজীবনী তেমন ভাবে লেখেননি। অতিরিক্ত প্রতিভাবান ও উচ্চস্তরের চিন্তাশীল ও জ্ঞানীরা আত্মজীবনী লেখার সুযোগ পান না বলে শুনা যায়। ইউরোপীয় দার্শনিক ঐতিহ্যের যে কয়জন দার্শনিক মহারথীরা ছিলেন বা আছেন, এদের মধ্যে বোধ করি ডেভিড হিউম বাদে আর উনিশ শতকের বিখ্যাত দার্শনিক-নন্দনতাত্ত্বিক ফ্রিডরিখ নীটশে বাদে আর তেমন কেউই আত্মজীবনী লেখেননি। ডেভিড হিউমের আত্মজীবনী সম্ভবত আত্মজীবনী জগতে সবচাইতে ক্ষুদ্র। মাত্র আট পৃষ্ঠার। আর নীটশের তো লেখার ধরনই ছিল অনেকটাই আত্মজৈবনিক।
এছাড়া বিশ শতকের মহা প্রতিভাবান দার্শনিক পণ্ডিতেরা আত্মজীবনী তেমন একটা লেখেননি। জ্যাঁক লাকা একটি আত্মজৈবনিক লেখা লিখেছেন My Teaching। কিন্তু সেটাকেও বোধ করি গতানুগতিক ধাঁচের আত্মজীবনী বলা যায় না। ওটাও তার বক্তৃতা দেওয়ার যে সংস্কৃতি (লেখার বিপরীতে) তারই একটা রূপ। অনেকে বলে, এদের আত্মজীবনী লেখার সুযোগ হয় না কিংবা এদের জীবন চিন্তা ও অভিজ্ঞতার সহিত এতটাই বিস্তৃত যে, আত্মজীবনী লিখতে বসলে তা শেষ হবে কিনা, তা নিয়েই সংকোচ থাকে। রবীন্দ্রনাথের একটা আত্মজীবনী আছে (জীবন স্মৃতি) যা খুবই আগ্রহ সহকারে পড়েছিলাম। কিন্তু পড়ে আফসোস হয়েছিল যে, তার চিন্তা, ভাবনা ও মহাপ্রতিভার বহিঃপ্রকাশ তাতে খুবই কম। শুধুই ছিল তার ব্যক্তিগত জীবনের একটি ছোট উপস্থাপনা। কিন্তু পরে বুঝলাম যে, রবীন্দ্রনাথ এই আত্মজীবনীটুকু লিখে নেহাৎ কিছুটা দায় সেড়েছেন। কারণ তার জীবনের যে প্রকাণ্ড বিস্তৃতি ও দীর্ঘতা, সেগুলোকে আত্মজীবনীতে সীমিত করার মতো অবস্থা কিংবা সুযোগ তার হয়তো হয়নি৷
আমার মতে, যেসকল বিরাট, মহান এবং মহাপ্রতিভাবান চিন্তাবিদ ও দার্শনিকরা আত্মজীবনী লিখে যাননি, তাদের তাত্ত্বিক, কাব্যিক ও যা তারা পেশ করেছেন চিন্তা আকারে, সেগুলোর মাঝেই তাদের জীবনের গতি প্রকৃতির ইতিহাসকে খুঁজতে ও বুঝতে হবে। তাছাড়া উপায় নেই। ফ্রয়েড অবশ্য The Autobiographical Study লিখেছেন কিন্তু তাকেও আত্মজীবনী বলতে একটু বেগ পেতে হয়। খুব আগ্রহ সহকারে যখন পড়া শুরু করলাম দেখলাম, এটা মূলত তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং অধ্যাপনা জীবনের শুরু দিকে তার নিজের ওপর এবং পারিপার্শ্বিক কিছু বিষয়ের তার গবেষণা ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ। হতাশ হয়েছিলাম বটে কিন্ত ফ্রয়েড প্রচুর চিঠি লিখেছেন কমপক্ষে দেড় দুইহাজার চিঠি, তার জীবনীকারদের মতে। তার মধ্যে অনেক চিঠিপত্র আমার পড়া হয়েছে। সবগুলো পড়ার বিশেষ আগ্রহ রাখি। এবার জীবনী (যা অন্যের দ্বারা রচিত হয়) সম্পর্কে যদি বলি, আমার মতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ ও তাত্ত্বিকের তত্ত্ব ও চিন্তা সম্বন্ধে অধ্যয়ন করার সাথে সাথে বা পূর্বে তার কোনো উৎকৃষ্ট ও ভালোমানের একটি জীবনী পড়া উত্তম (আর যদি আত্মজীবনী থাকে তাহলে তো কথাই নেই!) এতে অনেক সুবিধা হয় এবং আমার মতে যেসকল জটিল তাত্ত্বিক ও চিন্তাবিদ আছেন দর্শন ও অর্থনীতির ইতিহাসে, তাদের উৎকৃষ্ট মানের জীবনী পড়ার সুবিধা হলো, ঐ জীবনীতে তাদের সকল জটিল চিন্তা ও তত্ত্বের এক ধরনের সহজ সাবলীল ও প্রাথমিক পর্যায়ের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে দেয় জীবনীকার। যার মাধ্যমে উক্ত তাত্ত্বিক ও চিন্তাবিদের জটিল দুর্বোধ্য চিন্তার রাজ্যে ঢোকা তুলনামূলকভাবে সহজ হয়।
মার্কসের জীবনী পড়া আমার ক্ষেত্রে খুবই ফলপ্রসূ হয়েছিল। যদিও আমি কোনোভাবেই একজন মার্কস বিশেষজ্ঞ নই। এত কথা বলার মূল কারণ, কয়দিন যাবত অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও অর্থনৈতিক তত্ত্বের ইতিহাস পড়ার কারণে আত্মজীবনী-জীবনী পড়ায় একটু ভাটা পড়েছিল। কিন্তু বন্ধ হয়নি। ফ্রয়েডের তিনটা জীবনী পড়ার আগ্রহ আমার সবসময় ছিল, এর মধ্যে একটা হচ্ছে তার প্রথম জীবনী Sigmund Freud; His personality, His teaching and His school লেখা হয় তার জীবদ্দশায়। অর্থাৎ ১৯২৪ সালে, লিখেছিলেন ফ্রিটজ উইটেলস। যিনি ফ্রয়েডের ভিয়েনা সার্কেলে ফ্রয়েডের যারা শিষ্য ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। আরেকটি হলো The Life and Work of Sigmund Freud যেটা ফ্রয়েডের মৃত্যুর পর ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হয়। ফ্রয়েডের সবচাইতে কাছের লোকেদের মধ্যে একজন, ওয়েলশ স্নায়ুবিজ্ঞানী এবং মনোবিশ্লেষক, আর্নেস্ট জোনস এই জীবনী লেখেন। তিন ভলিউমে সাড়ে সাতশো পৃষ্ঠার জীবনী, যাকে ফ্রয়েড গবেষকদের অন্যতম প্রাথমিক তথ্যসূত্র বলা হয়।
এছাড়া ফ্রয়েডের আরো বেশ কয়েকটা জীবনী আছে। কিন্তু একটা জীবনী আমি গতবছর কয়েক জায়গায় দেখেছি বেশ প্রশংসিত হয়েছে, তা হলো ফরাসি দুইজন মনোবিশ্লেষক রেঁনে মাজর ও শঁতাল তালাগ্রঁ নামের দুজন একটি জীবনী লিখেছেন ফ্রয়েডের। Freud: The Unconscious and World Affairs নামের জীবনীটা প্রথম প্রকাশিত ২০০৬ সালে কিন্তু ইংরেজি অনুবাদ ২০১৮ সালের পর সম্ভবত। কারণ আমি এটা ইন্টারনেটে Routledge এর জীবনী গ্রন্থের তালিকায় দেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, এই জীবনীটাই আগে পড়বো, তারপর ফ্রিটজ উইটেলসেরটা এবং সবশেষে আর্নেস্ট জোনসেরটা। খোদা আমার মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন সেটা বুঝলাম গত সপ্তাহে এক বন্ধুর কাছে রেঁনে মাজরের লেখা জীবনীটা দেখে এবং তাও বঙ্গানুবাদ, সরাসরি ফরাসি থেকে। সৌরিশ দত্ত নামক এক ভদ্রলোক অনুবাদটি করেছেন যেটা সম্পর্ক নামক পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বন্ধুর কাছে বইটি চাওয়ায় দুইদিনের মাথায় সেটা সে দিতে রাজি হয়ে গেল।
বইটি চেয়ে নেওয়া ছাড়া পড়ার বিকল্প তখন ছিল না কারণ বইয়ের মূল্য চড়া। বইটি গত সপ্তাহে নিলাম, আজকে শেষ করলাম। ফ্রয়েডের জীবনী পড়ে নতুন করে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই, যেমনটা নতুন করে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই দেকার্ত, হেগেল, মার্কস, নীটশে, জ্যাঁক লাকা কিংবা আরো বড় মাপের দার্শনিক-চিন্তাবিদদের জীবনী পড়ে। কেনো বিস্ময় জাগেনা তা নিয়মিত পাঠক মাত্রই বুঝবেন যাদের কারবার এসব দর্শন, ইতিহাস, রাজনৈতিক তত্ত্ব ও শিল্প সাহিত্য নিয়ে। কিন্তু আমি বিস্মিত হয়েছি জীবনীটার সাহিত্যিক মাত্রা নিয়ে! জীবনীকে আমি সাহিত্য বলতে অপারগ ছিলাম। বরং গবেষণার জন্য তথ্যসূত্র কিংবা ঐতিহাসিক বিষয়বস্তু জানা বোঝার মাধ্যম হিসেবেই গণ্য করতাম। কিন্তু রেঁনে মাজরের লেখা ফ্রয়েডের এই জীবনীটি আমার বোধের হৃদয়ে একটি চিড় দিয়েছে। ফরাসি ভাষার প্রতি আমার আকাঙ্খা এবং দুর্বলতা সবসময়ই ছিলো (যদিও আমি ফরাসি জানি না এবং বুঝি না) এই জীবনীটি পড়ে আমার সেই আকাঙ্খার ব্যাপ্তি আরো বৃহত্তর হলো।
ফরাসিতে জীবনীটি পড়িনি, পড়েছি বাংলা অনুবাদে, কিন্তু অনুবাদ অতি মাত্রায় মাধুর্য ও সাবলীলতার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমি ফরাসি জানি না কিন্তু আমার মনে হয়েছে, এটা অনুবাদের থেকে অনুসৃষ্টির দিকেই বেশি গেছে। খুবই চমৎকার অনুবাদ হয়েছে এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এরকম একটি সাহিত্যিক ও শৈল্পিক রীতিতে লেখা ফ্রয়েডের একটি জীবনী বাংলা ভাষায় অনুবাদ হওয়ার ফলে বাংলা ভাষারই লাভ হয়েছে ও লাভ হয়েছে শত শত পাঠক, গবেষক ও ফ্রয়েডীয় চিন্তাশীলদের। আমি মনে করি, চিন্তারাজ্যের এরকম সকল উচ্চস্তরের রথী-মহারথীদের জীবনী বাংলায় অনুবাদ হোক তাতে প্রচুর লাভ হবে খোদ পাঠক সমাজের, বাংলা ভাষার এবং বাংলা ভাষায় যারা চিন্তা করতে ও তত্ত্ব চর্চা করতে চরম আগ্রহী আমার মতো তাদেরও। জীবনীটি নিঃসন্দেহে উৎকৃষ্ট মানের সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ কখনই ছিল না, কিন্তু জীবনীটির লেখার ধরণ ও শৈলী এবং তার এতো স্পষ্ট ও সাবলীল বাংলা অনুবাদ সত্যিই আমাকে অভিভূত করেছে। আমি মনে করি, ফ্রয়েড সম্পর্কে যাদের নূন্যতম আগ্রহ আছে তারা এই বইটি সংগ্রহ করে ফেলতে পারেন এবং পড়তে পারেন।
তাছাড়া রেঁনে মাজরের কর্তৃক ফ্রয়েডের এই জীবনীটিতে ফ্রয়েড এবং তার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মনোবিশ্লেষণ সম্বন্ধে বেশ কিছু মজাদার এবং আকর্ষণীয় ঘটনা ও তথ্য জানা যায়, যেসব বিষয়ে সচরাচর ফ্রয়েড বিশেষজ্ঞদের আলাপ করতে দেখা যায়নি বা দেখা যায় না। ঐ সকল তথ্য ও ঘটনা খোদ ঐ সময়কার ইউরোপীয় সমাজের চিন্তা চেতনা ও মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বটে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইড্রো উইলসন কে নিয়ে ফ্রয়েড একটি গবেষণার বই লিখেছিলেন, যা সেসময় ইউরোপীয় রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি এবং উত্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বাসনারকে কে বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করেছিলো অন্যান্য চিন্তাবিদদের। উক্ত গবেষণাটি নিয়ে রেঁনে মাজর তার এই ফ্রয়েডের জীবনীটিতে বিস্তর আলাপ করেছেন। এই বইয়ের অনুবাদ আরো একটি সুখকর বিষয়ের ইঙ্গিত দেয়, যে মনোবিশ্লেষণের তত্ত্ব বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা এবং বাংলা ভাষায় চর্চা করা সম্ভব। যারা ফ্রয়েডের বিষয়ে আগ্রহী আছেন এবং যারা ফ্রয়েডের বিষয়ে আগ্রহী হতে চান, তারা এই বইটি পড়তে পারেন। বাংলা ভাষায় এর আগে সম্ভবত ফ্রয়েডের মনোবিশ্লেষণের উপর ছোট একটি বই লিখেছিলেন সুনীল কুমার সরকার নামের পশ্চিম বঙ্গের একজন অধ্যাপক, বইটির নাম Freud : Life and Psychoanalysis।
অবাক করার বিষয় হলো, বইটি বেশ পুরানো। আমি পিডিএফ পড়েছি, বইয়ের প্রথম সংস্করণ দেখাচ্ছে ১৯২২ সাল! দ্বিতীয় সংস্করণ ১৯৪৪ এবং তৃতীয় সংস্করণ ১৯৫৯। যা হোক, বইটি কবে লেখা হয়েছে তা নিয়ে মাথা ব্যথা নাই, কিন্তু বইটা মোটামুটি ভালোই। ফ্রয়েডের মৌলিক ধারণা গুলো বুঝার ক্ষেত্রে বইটি বেশ সহযোগী, যদিও আমি মূলত এতোকিছু বলেছি আত্মজীবনী বা জীবনী সম্বন্ধে, সেই হিসেবে রেঁনে মাজরের জীবনীটি ই হয়তো প্রথম বাংলায় ভাষায় ফ্রয়েডের কোনো জীবনী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে! পাঠক মাত্রই এই জীবনী পড়ে উপকৃত হবেন নিসন্দেহে।