ভারতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : এপ্রিল ২৪, ২০২৫

ভারতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) বলেছে, পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত পানির প্রবাহ ভারতে যদি একতরফাভাবে বন্ধ বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটিকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তে সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও দায়িত্ব লঙ্ঘনের শামিল।

এনএসসি জানায়, এই পানি পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জীবনরেখা। এই অধিকার রক্ষায় তারা সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। যদি পাকিস্তানের অধিকারের পানি আটকে রাখা বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে।

কাশ্মীরের অনন্তনাগে মঙ্গলবার প্রাণঘাতী হামলায় এক নেপালি নাগরিকসহ ২৬ জন নিহত হয়। এর পরপরই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ সহায়তার অভিযোগ তুলে একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপ নেয়।

দেশটির সবচেয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া ছিল ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা। এ চুক্তি এতদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ ও উত্তেজনার মধ্যেও বহাল ছিল।

জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:

• পানি আটকানোকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বিবেচনা।
• ওয়াঘা সীমান্ত ভারতের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
• সার্ক ভিসা ছাড়ের আওতায় থাকা ভারতীয় নাগরিকদের ছাড় অবিলম্বে বাতিল।
• পাকিস্তানে অবস্থানরত সব ভারতীয়কে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ।
• ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা।
• ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৩০ জনে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
• পাকিস্তানের আকাশসীমা এখন থেকে ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ।
• সব ধরনের বাণিজ্যিক লেনদেন স্থগিত, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে যেসব লেনদেন হতো তাও বন্ধ।

এনএসসি আরও জানিয়েছে, ভারতের আগ্রাসী আচরণের জবাবে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। তাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো ধরনের আগ্রাসন মোকাবেলার জন্য তৈরি।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “সিন্ধু পানিচুক্তি শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, এতে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য পক্ষও জড়িত। তাই ভারত একতরফাভাবে এটি বাতিল করতে পারে না।”

তিনি আরও দাবি করেন, “পহেলগামের হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো যোগসূত্র নেই। এটি ভারতের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া ঘটনা। ভারতজুড়ে একাধিক রাজ্যে বিদ্রোহ চলছে—নাগাল্যান্ড, ছত্তিশগড়, মণিপুর থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত। এটি তাদের নিজস্ব সমস্যা।” সূত্র: জিও নিউজ