ফ্রান্সে বিক্ষোভের ডাক

ছাড়পত্র ডেস্ক

প্রকাশিত : এপ্রিল ০২, ২০২৫

ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থি পার্টি ন্যাশনাল র‍্যালির (আরএন) নেতা জর্ডান বারদেলা প্যারিসে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। দলটির প্রধান মারিন লো পেনের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রোববার থেকে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে লে পেনকে ৫ বছরের জন্য যে কোনো সরকারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিষিদ্ধ করেছেন ফ্রান্সের একটি আদালত। এছাড়া তাকে ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ ইউরো জরিমানাও করা হয়েছে।

তবে আপিল প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই শাস্তি কার্যকর হবে না, যা কয়েক বছর সময় নিতে পারে। সোমবার আদালতের এই রায় লে পেনের ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

বিচারকদের রায়ে বলা হয়, ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরো (৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার) তহবিল আত্মসাৎ করার ঘটনায় তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দলের প্রধান বারদেলা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ফরাসি জনগণের উচিত, এই রায়ে ক্ষুব্ধ হওয়া। এই সপ্তাহ শেষে আমরা রাস্তায় নামবো। গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও সংযত আন্দোলনের আহ্বান জানাচ্ছি আমি। প্রথম সমাবেশটি রোববার আইফেল টাওয়ারের কাছে প্লেস ভবানে অনুষ্ঠিত হবে।”

মঙ্গলবার প্যারিস কোর্ট অব আপিল জানায়, ২০২৬ সালের গ্রীষ্মের মধ্যেই তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন, যা ২০২৭ সালের নির্বাচনের কয়েক মাস আগে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লে পেনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের দলের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার মতো আঘাত হানা হয়েছে। আমরা যাতে ক্ষমতায় যেতে না পারি, সেজন্যই এই ফন্দি।”

লে পেন আরও বলেন, “সিস্টেম তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। কারণ, আমরা নির্বাচনে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।”

বারদেলা বিচারকদের এই রায়কে স্বৈরতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমাদের ক্ষমতায় যেতে বাধা দেওয়ার জন্য সবকিছু করা হচ্ছে।”

লে ফিগারো সংবাদপত্র জানিয়েছে, মামলার প্রধান বিচারক বেনেডিক্ট ডি পার্থুইসের বিরুদ্ধে হুমকির পর তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।

লে পেন তার চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ও তার জয়ের সম্ভাবনা প্রবল ছিল। তবে নিষেধাজ্ঞার ফলে তাকে বিকল্প প্রার্থী খুঁজতে হতে পারে। যদিও তিনি বলেছেন, “আমি নিজেকে এভাবে সরিয়ে নেব না।”

এ পরিস্থিতিতে বারদেলা নিজেকে আরএনের ‘পরিকল্পনা বি’ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননি, তবে দলের মুখপাত্র লরেন্ট জাকোবেলি বলেন, “আমরা লে পেনকে প্রার্থী করার জন্য লড়াই করব, তবে বারদেলা সবচেয়ে স্বাভাবিক বিকল্প।”

জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ আরএন সমর্থক বারদেলাকে লে পেনের চেয়ে বেশি সমর্থন করতে পারেন। তিনি ৩৬ শতাংশ ভোট পেতে পারেন।”

লে পেন এরই মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন পাচ্ছেন। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, “এই রায় জনগণের প্রতিনিধি অধিকারকে সীমিত করেছে, যা গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক।” সূত্র: বিবিসি