প্রেম চলাকালীন শারীরিক সম্পর্ক কি ধর্ষণ?
হাসান আজারকাতপ্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
দেশে প্রেম করলেই প্রেমিক-প্রেমিকাকে বিয়ে করতে হবে, এমন একটা মাইন্ডসেট তৈরি হয়। এই মাইন্ডসেট তৈরি হবার পেছনে নানান আর্থিক ও সামাজিক পারিপার্শ্বিকতা কাজ করে। ফলে একটা প্রেম হবার পর দুইজন মানুষের মাঝে সম্পর্কটা ঠিকভাবে কাজ করবে কিনা, একজন আরেকজনের জন্য সঠিক মানুষ কিনা সেসব মূল্যায়নের জন্য যতটা সময় নেয়া প্রয়োজন ততটা সময় নেয়া সম্ভব হয় না। আমরা উভয়েই আদৌ বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত কিনা কিংবা একে অপরের জন্য সঠিক মানুষ কিনা— এই প্রশ্নের বদলে আমরা কবে বিয়ে করছি কিংবা বিয়ের পর অমুক জিনিস করব তমুক জায়গায় যাব— টাইপ ভাবনাগুলোই এ অঞ্চলে চর্চা হয়। বিয়ের প্রলোভন ব্যাপারটা তাই জাতিগতভাবে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই মজ্জাগত। নারী পুরুষকে এবং পুরুষ নারীকে বিয়ে করার কথা দিয়েই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে।
এখন প্রশ্ন হলো, বিয়ের মাইন্ডসেট নিয়ে প্রেম করার সময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে কোনোভাবে ধর্ষণ বলা যায় কিনা। প্রেম চলাকালীন সময়ে দুইজন ব্যক্তি শারিরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা কখনোই ধর্ষণের ভেতর পড়ে না। এতে দুইজনেরই কনসেন্ট থাকে। এখন কেউ যদি দাবি করে, অমুক আমাকে বলেছিল বিয়ে করবে, কিন্তু সে বিয়ে করেনি। আমাকে ভোগ করে গেছে গত কয়েক মাস কিংবা বছর ধরে। এটা একপ্রকার ধর্ষণ, আমি বিচার চাই— তাহলে সেই দাবিটি কোনোভাবেই যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত হবে না।
প্রথমত, প্রেমের যৌনসম্পর্কে কেউ কাউকে একা ভোগ করে না, দুজনেরই কনসেন্ট থাকে, দুজনই ভোগ করে এবং ভোগের আউটকাম পায়। দ্বিতীয়ত, কোনো নারী যদি শুধু বিবাহ করার শর্তেই সঙ্গীকে সেক্স করার কনসেন্ট বা সম্মতি দেয় এবং পরবর্তীতে তার সঙ্গী যদি তাকে বিবাহ করতে অসম্মতি জানায় তাহলেও সেটা ধর্ষণের আওতায় পড়বে না। কারণ এখানে তথাকথিত ভিক্টিম একটা বিনিময়মূল্যের বিপরীতে কনসেন্ট দেয়। এখানে তাকে কেউ জোর করছে করছে না। এখানে তার সেক্স করার বা না করার অপশন থাকার পরও সে সেক্স করাটাকেই বেছে নেয়। পুঁজির ভাষায় বললে, বিয়ে করাকে বিনিময়মূল্য ধরে নিয়ে কেউ যদি কাউকে কোনো সার্ভিস প্রদানে সম্মত হয় এবং পরবর্তীতে সার্ভিসগ্রহীতা যদি বিনিময়মূল্য প্রদান না করে তবে সেটা প্রতারণা, ধর্ষণ নয়।
সুতরাং, বিয়ের প্রলোভনে কখনো ধর্ষণ হয় না। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কারো থেকে কোনো সুবিধা আদায়ের পর বিয়ে করতে অসম্মতি জানানো একটি প্রতারণা। শুধুমাত্র বোকচোদ বাঙ্গুরাই ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ’ শব্দটা ব্যবহার করে থাকে। এই শব্দটা শুধুমাত্র বাঙ্গুদের ফায়দা লুটার জন্যই ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এমন কোনো টার্ম নাই। কারণ প্রেম করলেই বিবাহ করতে হবে, এমন কোনো মাইন্ডসেট নিয়ে তারা চলে না। সেসব দেশে লিভ টুগেদারের আইনি সম্মতি আছে। লিভ টুগেদারের অধিকার আছে। বিবাহ ব্যাপারটা তাদের জীবনে অনেক সিরিয়াস ব্যাপার। দুই-পাঁচ বছর প্রেম করলেই বিবাহ করতে হবে, ব্যাপারটা তাদের কাছে এমন নয়। তারপরেও তাদের দেশে কেউ যদি কথা দিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে পরবর্তীতে তা অস্বীকার করে তাহলে তারা সেটাকে Cheating হিসেবে অভিহিত করে, Rape নয়।