ছবি: সংগৃহীত
প্রেম কত প্রকার? আপনি কোন স্তরে আছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক:প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৩, ২০২৪
প্রেম এক স্বর্গীয় অনুভূতি। এর বিভিন্ন স্তর রয়েছে। সাইকোলজিস্ট রবার্ট স্টেনবার্গ প্রেমকে তিনটি উপাদানের মধ্যে ভাগ করেছেন। এগুলো হচ্ছে আবেগ( শরীরী অথবা রোম্যান্টিক আকর্ষণ), অন্তরঙ্গতা (গভীর অনুভূতি) এবং সহানুভূতি (শুধুমাত্র সম্পর্ককে রক্ষা করাই নয়, তাকে সসম্মানে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া)। মানুষের জীবনে প্রেমের অনেক প্রকারভেদ আছে। কত রকমের সেই প্রেম সেটাই আজকের এই প্রতিবেদন থেকে দেখে নেওয়া যাক-
প্রথম দেখায় প্রেম: প্রথম দেখাতেই প্রেম। এ ধরনের প্রেমে নাকি পুরুষেরাই বেশি পড়েন। প্রথম দেখায় প্রেম অনেক ক্ষেত্রেই একতরফা হয়। এ ধরনের প্রেমে প্রায় অবধারিতভাবেই তৃতীয় পক্ষের সাহায্যের দরকার হয়। সাধারণত প্রেমের সূত্রপাতে রূপ ও দৈহিক সৌন্দর্যের ভূমিকাই বেশি।
বন্ধুত্ব থেকে প্রম: এ ধরনের প্রেমে একটা গান জুড়ে দেওয়া যায় ‘পথে পথে চলতে চলতে’। এ ধরনের প্রেমের ক্ষেত্রে প্রেমিক ও প্রেমিকা দুইজনেই প্রথমে বন্ধু থাকে। প্রেমের ভাবনাটা দু্ইজনের পক্ষ থেকে আসলে সম্পর্কটা প্রেমে রূপান্তর হয়। আর এক তরফা হলে সারাজীবনের জন্য বন্ধু হারানোর বেদনা বয়ে বেড়াতে হয়। অনেকে বন্ধুত্বের এই রূপান্তর মেনে নিতে পারেননা বলে অনুশোচনায় ভোগেন। বিশেষত মেয়েরা।
বিবাহোত্তর প্রেম: এ ধরনের প্রেম শুধুমাত্র স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দেখা যায়। বিয়ের ঠিক পর পর প্রথম কয়েক মাস এই প্রেম প্রবল থাকে। এরপর রূপ পরিবর্তন হয় সময়ে-সময়ে।
পরকীয়া প্রেম: বিয়ের পর স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন পুরুষ বা নারীর সঙ্গে প্রেমকেই পরকীয়া প্রেম বলে। এই পরকীয়া প্রেম আদিযুগ থেকে চলে আসছে। পৃথিবীর অনেক অমর প্রেম ওই পরকীয়া প্রেমের ফল।
অপরিণত প্রেম: এ প্রেম সাধারণত স্কুলে পড়ুয়া অবস্থায় হয়ে থাকে। মেয়েরাই এ ধরনের প্রেমে বেশি পড়েন। তবে ছেলেরাও যে পড়ে না তা বলা ভুল হবে। প্রেমিক প্রেমিকাদের দুজনেই সমবয়সী হতে পারেন।
কর্মক্ষেত্রে প্রেম: কর্মসূত্রে দুইজন মানুষের পরিচয়ের মাধ্যমে এ ধরনের প্রেম গড়ে ওঠে। সাধারণত বেসরকারি সংস্থাতে এ ধরনের প্রেম বেশি দেখা যায়।
মোবাইল প্রেম: বন্ধুর কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে বা ফোনবুক থেকে চুরি করে ফোন দেওয়ার মাধ্যমে এ প্রেম হয়। অথবা পাড়ার ফোনের দোকান থেকে সংগ্রহ করে, অন্য কোনো সূত্র থেকে নাস্বার পেয়ে বা নিতান্তই মনের মাধুরি মিশিয়ে কোন নাম্বার বানিয়ে তাতে ফোন করে কোনো মেয়ে বা ছেলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এই ধরনের প্রেমের সূত্রপাত।
ইন্টারনেটে প্রেম: ইন্টারনেটে চ্যাটিংয়ে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেম এটা এখন প্রায়ই হচ্ছে। দুইজনের পরিচয়ের মধ্য দিয়ে এ ধরনের প্রেমের সূত্রপাত। এ ধরনের প্রেমে উভয়পক্ষেরই ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থাকে অনেক।
ত্রিভুজ প্রেম: এ ধরনের প্রেমকে বলা যেতে পারে একজন মেয়েকে দুইজন ছেলে চায়। অথবা একজন ছেলেকে দুইজন মেয়ে চায়। যেকোন একজনের পরাজয় অবধারিত।
বহুভুজ প্রেম: একই মেয়ে বা ছেলের প্রতি দুইজনের অধিক ব্যক্তির অনুরাগই হচ্ছে বহুভুজ প্রেম। এক্ষেত্রে ওই মেয়ে বা ছেলেটি স্বভাবতই দৃষ্টিকাড়া সৌন্দর্যের অধিকারী হয়ে থাকেন।
ঘানি টানা প্রেম: এই প্রেম সম্পর্কে জানার আগে একটু হাফ ছেড়ে নিন। কারণ এতে ঘানি টানার ব্যাপার আছে। প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা লাভই এ প্রেমের উদ্দেশ্য। মেয়েদের মধ্যে এ ধরনের প্রেমের প্রচলন বেশি দেখা গেলেও ছেলেদেরকেও মাঝে মাঝে এমন প্রেম করতে দেখা যায়।
অব্যক্ত প্রেম: খুব কাছে থেকেও, পাশে থেকেও যে অনুভূতির কথা বলা হয়ে ওঠে না; তাই হচ্ছে অব্যক্ত প্রেম। এ প্রেমে শুধুই নীরবে ভালোবেসে যাওয়া। অব্যক্ত প্রেম হারানোর বেদনা খুব কষ্টদায়ক, জীবনের অন্যতম বড় ভুল হিসেবে মনে থাকে।
সুপ্ত প্রেম: একে অপরকে ভালোবাসে কিন্তু কেউই কাউকে বলেন না, পুরো ব্যাপারটাই আছে- কিন্তু নেই। সুপ্ত প্রেম আজীবন সুপ্ত থেকে গেলে তা পরিণত হয় সুপ্ত প্রেমে।
চুক্তিবদ্ধ প্রেম: এ ধরনের প্রেম হয় পারস্পারিক সমঝোতা গড়ে ওঠার মাধ্যমে। সাধারণ অর্থে প্রেম বলতে যা বোঝায় তা এই ধরনের প্রেমে অনুপস্থিত থাকে।
অসাম্প্রদায়িক প্রেম: এ প্রেমের ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ে দুইজনে দুই ধর্ম বা সম্প্রদায়ের অনুসারী হয়ে থাকেন। সমাজ এ ধরনের সম্পর্ককে সমর্থন করেনা। বিশেষ করে, হিন্দু-মুসলিম ছেলে-মেয়ের মধ্যে প্রেম বেশি বিতর্কের সৃষ্টি করে।
ভাড়াটে প্রেম: এ প্রেমে প্রেমিক বা প্রেমিকারা বলতে গেলে ভাড়া খাটে। তারা সকালে একজনের গার্লফ্রেন্ড তো বিকেলে আরেকজনের। কোন নির্দিষ্ট ঠিক ঠিকানা নেই। ব্যাপারটা অনেকটা মাসে মাসে মোবাইল হ্যান্ডসেট চেঞ্জ করার মতো।
ঝগড়াটে প্রেম: প্রেমে থেকেও সারাক্ষণ দুইজনের মধ্যে খিটির-মিটির লেগে থাকাটা এই প্রেমের বৈশিষ্ট্য এ ধরনের প্রেমে ঝগড়াগুলো ক্ষণস্থায়ী হয়, কিন্তু খুব ঘনঘন হয়। ঝগড়াগুলো অধিকাংশই হয়ে থাকে ফোনে।
‘আজো তোমায় ভালোবাসি’ প্রেম: এ প্রেমে প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদ ঘটে। তবুও তারা একে অপরকে ভালোবাসেন।
ব্যর্থ প্রেম: শেষে আছে ব্যর্থ প্রেম। এ প্রেমে ব্যর্থ প্রেমিকার চাইতে ব্যর্থ প্রেমিকের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। সাধারণত ব্যর্থ প্রেমের শেষটা হয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান দিয়ে।
প্রেম প্রকাশের ভাষাও বিভিন্ন ধরনের হয়। না, আজ সে বিষয়ে আলোচনা নয়। সে বিষয়ে অন্য কোনদিন লিখবো।
- জি নিউজ ও কলকাতানিউজ টোয়েন্টিফোর সেভেন