নীহার লিখন
নীহার লিখনের ৩ কবিতা
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
চক্রবাক
চাঁদের উপমা অনেক, চাই নতুন কিছুতে তাকে;
কোনো অনিত্যের গায়ে, তার দেহে ভাবতে চাইছি মন্বন্তর আমার; রিক্ত-জীর্ণ, আহাজারি ও কান্নার সংস্রব ছাপিয়ে হাসছে কিন্নরী আলোর জবান, ঝিলিকে ঝুরঝুর জীবনের উপকণ্ঠগুলোতে কেউ টোকা দিয়ে ভাঙছে বাড়িঘর; দূরে রেখে বিষণ্ণ রাত, সেখানে হাস্নাহেনার গন্ধে শিশুরা কাঁদছে, পোকা ডেকে যাচ্ছে ব্রহ্মাণ্ডের দীর্ঘশ্বাসের মতো
তোমাকে ধরে রাখার সমস্ত ইচ্ছায় পৃথিবীতে জং ধরে; তবু প্রেম পড়ে থাকে, মানুষের নিয়তির রূপ ধরে দোলনচাপায়, তার গন্ধের বর্শায় বিদ্ধ হচ্ছি
যেন এক চক্রবাক, যার প্রস্থ ও দৈর্ঘ্যে হাসছে সংসার আর দুনিয়ার সব অভিপ্রায়; একত্রে ডুবে গ্যাছি, যেন নামা-জল, চলে গেলে কেউ কারো মুখ দেখি না
পরিমিতি
তরঙ্গের পেটে মাছ হয়ে মাপতে চেয়েছি ভব-সাগর, হন্তের কম্পনে, জলের নিরিখে, উপরি তলে মাত্রই যেন কোন জাহাজ চলে গেল; মৎস্যকন্যার সঙ্গীতের আবেশে, সান্ধ্য এক তমসার পেটে ডুবে আছি মাউথ অর্গান, রিডিংয়ে জারিত হচ্ছে বালুঝর আর অন্ধকার, আর সলিলে প্রয়াত কঙ্কালরাজির পাহাড়ের ফেনারা- বুদ্বুদ তুলে উদ্বায়ু মেঘ হয়ে ভেসে যাচ্ছে অন্য কোথাও, যেখানে মানুষ যেতে চেয়েছে বিধায়; যেন বহূ গ্রাম , সেখানে কলমির শাক, আর মরিচ ফুলের সাদা শরীর ঘেঁষে প্রতিবেশীদের ঘরের দেয়াল, যার আড়ালে শব্দ করছে শিশুর বিকাল
এসব পরিমিতি ব্যর্থ হতে হতেই একদিন শিখে ফেলে মানুষ যে ডুবে গেলে অন্ধকারেই চোখ পায় দ্যুতি; ব্যর্থতার থাকে অনেকগুলো জীবন্ত মুখ, যার অনেক বিভব, তাঁর জন্যে বাহিত হৃদয় মেলে দেই ফুলে ফুলে, নাম যপি তাঁর, করি স্তুতি
প্রভু
আদিম দূর্ভেদ্য পাহাড়, অন্ত্যজ ভেবে বেগুনী ফুল হই সেখানেই
প্রভুত্বপরায়ণ আমার মন, চাঁদ না উঠলেও রূপাকে কালো দেখতে শিখেছে, তিলে তিলে সে হয়েছে এমন, চোখ উপড়ে ফেললেও তাকায় না, বরং অপেক্ষা করে অন্য কোনো সত্তায় শুন্যস্থানটি পূর্ণ হয়ে যাবে, যেভাবে শীতের শুকনা ডোবাগুলো একদিন আপনাই ভরে ওঠে
প্রণতির সামান্য শেকড় পাথরে ডুবিয়ে হয়েছি গাছ, জেনেছি সকল বিস্তারিত ঘটনায় কিছু নেই, প্রভু একটা ঝুলানো চেরীর মতন তোমাকে গচ্ছিত রেখেছে
আমার কাজ এখন শয়তানের থেকে দূরে থাকা, আর তাকে অন্ধের মতন ডাকা