নীহার লিখন
নীহার লিখনের তিনটে কবিতা
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
প্রেতাত্মা
প্রেতাত্মার কথা শোনা যায়, যারা অশান্তি পেয়ে মরেছে।
জন্মদিন এলে ভাবি, নিজের আত্মাটার ভূত-ভবিষ্যৎ, নদীটার মতো কোনো ফর্দিটা না পাওয়ার পড়ে থাকে বাস্তুচ্যুত কোনো পাগলা-নারী, রুক্ষস্বরে সে বিলাপ করে, তার বলিরেখায় কে রেখেছে উচ্ছন্নে যাওয়াদের জীবনের লিপি-বিন্যাস, যার কাছে কিয়দংশ আয়ু আমার হয়তো ঘুরবে এইসব রাস্তাগুলোয় কোনোদিন, যেমন তোমার গন্ধ পাওয়া যায়, এত এত কাল, এত এত পঞ্জিকার পাতার বিদায়ের পরেও, কিম্বা সে লোহাটি যে বারান্দায় পড়ে থেকে থেকে শরীরে পেল সব স্বয়ংক্রিয় জংকার
জন্মদিন এলে মনে হয়, আমিও উচ্ছন্নে যাওয়া কোনো লোহা বা সেরকম নারীটা পাগল, যার কপালের চারে মথিত হচ্ছে শত না পাওয়ার ভাঁজ, এবং অশান্তি নিয়েই সেও চলে যাবে, একদিন, এবং আরেকটা নতুন প্রেতাত্মার জন্ম হবে এলাকায়
ধুতুরার ঝোপে কোনো টুনটুনি
ইচ্ছে করেই আমি কোনো সন্তান রেখে যাব না। জানি, এজন্যে আমার নামে কেউ বাতি দেবে না একদিন দিবালির রাতে
সন্ততির বদলে আমি অনেকগুলো কবিতা রেখে যেতে চাই, যারা অচল, বহুকাল পরে হয়তো আরো বেশি অচল হবে; তারা হয়তো ধুতুরার ঝোপে কোনো টুনটুনির মতন বাসা করবে, বিড়ালে ধরে খাবে, থাবা চাটতে থাকা বিড়ালটা হয়তো মনে নিলেও নিতে পারে আমার নামটি,
কারণ বিড়ালের চেয়েও নিরীহ হয় কবিতারা, অ্যাতোসব আগুনের ভিড়ে একটু ঠাণ্ডা জলের মতন যদি কিছু থাকে, তা হবে আমার কবিতাই, যার মুল্যে কখনোই ছিল না মোহর, কোনোকালে, এবং নিভৃতি খুঁজতে খুঁজতে সে বাসা বাঁধে বেদের মতন, যা সহজেই ভেঙে ফেলা যায়, কিন্তু মোছা যায় না
আপন
হদিশ করা হয়, তবে জীবনে কেউই পায় না সে চাঁদটা, যার উপমায় অজস্র নারীদের মুখ সত্য হয়েছে
এমনই নিয়ম এই পৃথিবীর সমস্ত সত্যে নিহিত, এমনকি অনন্ত বলে যা কিছু মেনেছি, অন্তে সেও যেন একটা গুঁই সাপের মতন কোনো সরীসৃপ ছাড়া কিছু না, যার থুতু শরীরে পড়লে ফোস্কা পড়ে, যে কীনা গোখড়ার ডিম খেয়ে বাঁচে, জংলায় থাকে, তবে, কোনোদিন আপন হয় না