নীল বিদ্রোহ এবং নীলদর্পণ নাটক: ভিন্ন দৃষ্টিতে
শেষ পর্ব
রাহমান চৌধুরীপ্রকাশিত : মে ৩১, ২০২১
নীলদর্পণ নাটকের চরিত্রগুলি দুভাগে বিভক্ত; অত্যাচারী ও অত্যাচরিত। কিন্তু কোনো অত্যাচারীর চরিত্র সমগ্র নাটক জুড়ে নেই। নাটকের চরিত্র সৃষ্টি সম্পর্কে সুন্দর কথা বলেছেন আশুতোষ ভট্টাচার্য। তিনি দেখিয়েছেন, ভদ্রশ্রেণীর চরিত্র সম্পর্কে দীনবন্ধুর অভিজ্ঞতার অভাব না থাকলেও তিনি চরিত্রগুলোকে যথাযথ চিত্রিত করতে পারেননি। সকলের মধ্যে তিনি শুধু আদর্শ গুণেরই সন্ধান করেছেন; রক্ত মাংশের মানুষের যে-সকল ভুল-ভ্রান্ত-বিচ্যুতি থাকে তা থেকে চরিত্রগুলোকে দূরে রেখেছেন। চরিত্রগুলো কেবলই ভাল আর ভাল। পুত্রের প্রতি পিতার স্নেহ, পিতার প্রতি পুত্রের কর্তব্যবোধ, ভ্রাতার প্রতি ভ্রাতার মমতা, সন্তানের প্রতি মাতার বাৎসল্য, শাশুড়ীর প্রতি পুত্রবধূর শ্রদ্ধা, জায়ের প্রতি জায়ের ভক্তি ও স্নেহে একই পরিবারের প্রত্যেকটি চরিত্রই আদর্শ। দোষে গুণে যে মানুষের জীবন নিত্য নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, ক্ষুদ্র ইর্ষা ও স্বার্থবোধ দ্বারা যে জীবন নিত্য পীড়িত, গোলক বসুর পরিবারের কারো মধ্যে তা দেখা যায় না। এরূপ একদেশদর্শী দৃষ্টি দ্বারা চরিত্র সৃষ্টি সার্থক হয় না, সুতরাং নাট্যকার চরিত্রগুলিকে প্রাণহীন পুত্তলিকায় পরিণত করেছেন। চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করতে পারেননি।
কিন্তু এ নাটকের পদী ময়রাণীর চরিত্রটি সত্যিই অনাবদ্য সৃষ্টি। তার চরিত্র অতি ঘৃণিত, তথাপি তার মধ্যে একটি শ্বাশত মানবিত গুণাবলি উপস্থিত। নিজের কাজের নীচতা সম্পর্কে সে অসচেতন নয়, কিন্তু বাধ্য হয়ে তাকে এ পথে আসতে হয়েছে। যতোই খারাপ হোক সে তার হৃদয় বিসর্জন দেয়নি। ক্ষেত্রমণিকে সে বাঁচাবার চেষ্টা করে। ক্ষেত্রমণি পদী ময়রাকে পিসি বলে ডাকে, পদী সেই স্নেহের ক্ষেত্রমণিকে বাঘের মুখে দিতে চায় না। কিন্তু সে নিতান্ত অসহায়, রোগ সাহেবের লালসার দৃষ্টি থেকে সে ক্ষেত্রমণিকে রক্ষা করার উপায় জানে না।
দুর্বল হতদরিদ্র মানুষ ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তকে দিয়ে হেন কোনো পাপকর্ম নেই যা সাহেবরা করিয়ে নিচ্ছে না। ইংরেজদের চাকরি ছিল যাদের পরম গৌরব, দেখা গেল তারা নিজ জাতির শত্রু। গোপী-আমিন-পেশকার-দেওয়ানের নির্মমতার মূল এইখানে; এরা দেশের মানুষের প্রতি সহজাত সমবেদনাটা হারিয়ে ফেলেছে। গোপী হঠাৎ নিজেই বসু পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করে বলে, ‘মিথ্যা মোকদ্দমা করে মানী মানুষটাকে নষ্ট করলাম। নবীনের শিরঃপীড়া আর নবীনের মার এই মলিন দশা শুনে আমি বড় ক্লেশ পাইয়াছি।’ গোপী অনুতাপ করতেই ব্যঙ্গ করে গোপ বলে, ব্যাঙের সর্দি! শিক্ষিত মধ্যবিত্তের চেহারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন গোপ আরো বলে, ‘সাহেবরাই সব কত্তি নেগেছে। সাহেবরা কামার, আপনারা খাঁড়া। যেখানে পড়ায় সেখানে পড়ে!’
নাটকের এই সব বিশ্লেষণ সত্যিই চমৎকার। নাট্যকারের শক্তির পরিচয়। মধ্যবিত্তের চরিত্র ও অবস্থার আরো চমৎকার বিশ্লেষণ দেন নাট্যকার যখন বিপর্যস্ত গোপী বলে, ‘ধর্মাবতার, গালাগালি খেতেও আমরা, পয়জার খেতেও আমরা, শ্রীঘর যেতেও আমরা, কুটিতে ডিসপেনসারি স্কুল হলেই আপনারা, খুন গুমি হইলেই আমরা।’ নীলকণ্ঠের মতন সাহেবদের সব পাপ গলাধঃকরণ করে এক একজন দানব তৈরি হচ্ছে, এই সত্য নাট্যকারের চোখ এড়ায়নি। গোপী নিজে এই সত্যটাকে আরো স্পষ্ট করে যখন বলে, ‘আমরা হুজুর কসায়ের কুকুর, নাড়িভুঁড়িতেই উদর পূর্ণ করি।’ নাটকে চমৎকারভাবে মধ্যবিত্তের চরিত্র বিশ্লেষণ করছেন নাট্যকার। কিন্তু ঘটে যাওয়া নীলবিদ্রোহ সম্পর্কে একটা বাক্য উচ্চারণ করছেন না।
দীনবন্ধু নাটককে অকারণে করুণাসিক্ত করতে গিয়ে অতিনাটকীয়তার আশ্রয় নিয়েছেন, যার সাথে মূল কাহিনীর কোনো ধারাবাহিকতা নেই। উৎপল দত্ত যর্থাথই বলেছেন, ‘দীনবন্ধু ঢের বেশি সফল হতেন যদি মূল নেতির শক্তি তিনি কেন্দ্রিভূত করতেন তোরাপে। তোরাপকে দেখলে মনে হয় এই ব্যক্তি সত্যিই পারে উডকে এবং রোগকে গলা টিপে হত্যা করতে, এই পারে নীল চাষটাই বন্ধ করে দিতে।’ নবীন মাধব বলছেন, ‘নীলের দৌরাত্ম্য যদি রহিত হয় তবে আমি পাঁচ দিবসের মধ্যে এই সকল বালকদের পাঠের জন্য স্কুল স্থাপন করিয়া দিতে পারি।’ নীলদর্পণ যখন লেখা হচ্ছে তখন নীলচাষ রহিত হয়ে গেছে। নাটকে দীনবন্ধুর এ কথার মূল্য কী তবে? পুরো নাটক জুড়ে স্বশ্রেণীর দেশদ্রোহিতার ও নীতিবিবর্জিত লুণ্ঠনবৃত্তির যে দলিল তিনি রচনা করেছেন, সেখানে নীলবিদ্রোহের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার কারণ বোঝা শক্ত। উৎপল দত্ত যে কথা বলেন, দীনবন্ধু দৃশ্যের পর দৃশ্যে গোলকবাবুর গৃহাভ্যন্তরের ঘর-গেরস্থালির কথা উত্থাপন করেছেন, যা কখনই নীল বিদ্রোহের কোনও প্রাসঙ্গিক চিত্র তুলে ধরে না বা কথা প্রসঙ্গেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের জানায় না। যে নাটকে ব্যাপক এক কৃষক বিদ্রোহ হচ্ছে মূল কাহিনী, সেখানে মধ্যবিত্ত পরিবারের হেঁসেলে-শয়নকক্ষে অত ঘন ঘন প্রবেশ করলে সময় ও সংলাপের যে অপচয় হয় তা দীনবন্ধু আর সামলে উঠতে পারেননি।
সরকারি চাকুরে আবার বাঙালির প্রতি মমতা দীনবন্ধুর মানস দুই বিপরীত ধারায় বিভাজিত হয়ে আছে এবং এ থেকেই নীলদর্পণ নাটকের যাবতীয় দোষ- ত্রুটি, অনর্থক নাটুকেপনা, মৃত্যু-মূর্ছা-পাগল হওয়া। বাংলার শত বছরের কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা নীল বিদ্রোহ। সেই বিদ্রোহকেই নাটকে জায়গা দেওয়া হলো না। কৃষককুলের একটি বৃহত্তর সামাজিক সমস্যা নিয়ে নাটকটি শুরু হয়ে দুটি পরিবারের করুণ কাহিনীতে গিয়ে নাটক শেষ হয়েছে। নাটকটি ক্রমে ক্রমে বৃহত্তর সামাজিক সমস্যা থেকে সরে গিয়ে অন্তঃপুরে কয়েকটি নারী চরিত্রকে আশ্রয় করেছে। নীল বিদ্রোহের বিদ্রোহী কোনো নারীর চরিত্র এ নাটকে নেই। নাটকের বৃহত্তর সামাজিক-অর্থনৈতিক বিশেষ করে সংগ্রামের দিকটি গৌণ হয়ে পড়েছে। নাটকের শেষে জোর করে বিপ্লব ঘটাবার দরকার ছিল না। কারণ কৃষকরা নীলবিদ্রোহে সত্যিই বিজয় অর্জন করেছিল। নাটকে তা দেখনো হলে নাটকটির ঐতিহাসিক মূল্য প্রকাশ পেত। বাংলার চাষীদের এই নাটকে অনেক বেশি নিবীর্য করে দেখানো হয়েছে। বিগত বছরের টাকা পরিশোধ না করা, বর্তমান বছরে অধিক জমির জোর করে দাদন দেওয়া, মিথ্যা মামলায় গোলকচন্দ্রকে জড়িত করা, নবীনমাধবকে কুটুক্তি করা, পুকুরপাড়ে নীল চাষ করা, নবীন বসুকে অস্ত্রঘাত করা সব ঘটনার মধ্য দিয়ে নীলকরদের অত্যাচারের বাস্তবসম্মত চিত্রই পাওয়া যায়।
সাধুচরণ বা রাইচরণদের সাথে অমিন যে আচরণ করে, যেভাবে জোর করে তাদের কর্ষিত জমিতে নীলচাষ করতে বাধ্য করে, যেভাবে জোর করে তাদেরকে কুঠিতে নিয়ে যায় এবং চাবুক মারে, যেভাবে ক্ষেত্রমণিকে জোর করে ধরে নিয়ে যায় তার মাধ্যমে দুটি পরিবারকে ঘিরে নীলকরদের অত্যাচারের ঘটনা সুন্দরভাবেই প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে যে কৃষক বিদ্রোহ দানা বাঁধে পুরো নাটকে সে ঘটনার কোনো প্রকাশ নেই। নীলচাষের বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষোভের কথা বহুপূর্ব থেকেই জানা যায়। হিকির স্মৃতিকথার এর একটি চমৎকার উল্লেখ রয়েছে। ইংল্যান্ড থেকে আগত উইলিয়াম হিকি ছিলেন কলকাতার সর্বোচ্চ আদালতে আইনজীবী। তিনি সতেরশো সাতাত্তর সাল থেকে আঠার নয় সাল পর্যন্ত কলকাতায় অবস্থান করেন। হিকির স্মৃতি কথা থেকে জানা একজন নীলকর সাহেব সম্পর্কে। হিকির বন্ধু ফ্রেডারিক মেটল্যান্ড আর্নট নীলচাষীদের হাতে মারা যায়। ফ্রেডারিক সেনাবাহিনীর চাকরি নিয়ে ভারতবর্ষে আসে এবং ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হয়। পরে চাকরি ছেড়ে বেশি রোজগারের আশায় নীলের ব্যবসা আরম্ভ করে এবং কৃষ্ণনগরে বসবাস করতে থাকে। প্রথা অনুযায়ী সে চাষীদের টাকা দাদন দিয়ে নীলচাষ করাতো। চাষীরা একবার নাকি তার কাছ থেকে দাদন নিয়ে চুক্তি অনুযায়ী নীল সরবরাহ করেনি। চাষীদের ব্যবহারে আর্নট ক্রুদ্ধ হয়ে গ্রামের চাষীদের উপর ক্রুদ্ধ হয় এবং দু-একজনকে টেনে-হেঁচড়ে ধরে আনার চেষ্টা করে।
নিজেই আইনের প্রয়োগ করতে গিয়ে আর্নট ভীষণ বিপদে পড়ে। কয়েকশত চাষী দলবদ্ধ হয়ে বাঁশ লাঠি ইত্যাদি নিয়ে তাকে ঘেরাও করে এবং জবরদস্তির জবাব চায়। জবাব না পেয়ে চাষীরা আর্নটকে বাঁশপেটা করে, এমনভাবে তাকে পেটানো হয় যে সে জড়পিণ্ডের মতন দলা পাকিয়ে যায়। তার কাকুতি-মিনতি সবই ব্যর্থ হয়। ফাটা মাথা, হাড়গোড় ও পাঁজর সুদ্ধ জখম আর্নটকে বাড়িতে বয়ে আনা হয় এবং সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই সে প্রাণ ত্যাগ করে। সরকার এ হত্যাকােণ্ডের বিচারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। বরং হিকি ইংরেজ মহলে বলাবলি হতে শুনেছে যে, নিজ দোষের উপযুক্ত দন্ড পেয়েছে আর্নট। বহু দোষ ছিল তার, দু-জন চাষীকে সে নাকি এই ঘটনার আগে অত্যাচার করে মেরে ফেলেছিল। হিকির স্মৃতি কথায় ঘটনার সাল উল্লেখ নেই। নিশ্চয় সেটা যে আঠারশো নয় সালের আগেই হবে, কারণ আঠারশো নয় সালে হিকি ভারত ছেড়ে চলে যায়। হিকির উল্লেখিত এই ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, বহুদিন ধরেই নীলচাষীদের উপর অত্যাচার চলছিল এবং চাষীরাও ভিতরে ভিতরে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল।
দীনবন্ধু কেন সে প্রসঙ্গ নাটকে আনলেন না সেটা খুবই বিস্ময় উদ্রেক করে। সুপ্রকাশ রায় স্পষ্টই বলেছেন, নীলদর্পণ কোনো কৃষক বিদ্রোহের নাটক নয়। এই নাটকে তোরাপ চরিত্রকে ব্যক্তিগতভাবে বিদ্রোহী হিসেবে অঙ্কিত করা হলেও কৃষকদের যে বিরাট বিদ্রোহের ঝড় সারা বঙ্গদেশ কাঁপিয়ে তুলেছিল তা এই নাটকে একেবারেই স্থান পায়নি। সারা বাংলা জুড়ে নীলচাষকে ঘিরে যে ভয়াবহ বিদ্রোহ ঘটে গেল, নাটকের সমাপ্তি সে বিদ্রোহকে ঘিরেই হওয়া উচিৎ ছিল। গোলক বসুর বিরুদ্ধে মামলা সাজাবার পরের দৃশ্য থেকে নাটক দুই পরিবারে অন্তঃপুরে না ঢুকে বিদ্রোহকে সামনে নিয়ে আসতে পারত, যা ছিল ইতিহাসের সত্য। বাংলার শত বছরের কৃষক বিদ্রোহের এক যুগ সন্ধিক্ষণ। দীনবন্ধুর নিশ্চয় এই ঘটনা না জানবার কথা নয়। সব জেনেশুনে তিনি এক গৌরবময় আখ্যানকে কেন এড়িয়ে গেলেন সেটা বিরাট প্রশ্ন। তিনি কি বিদ্রোহকে ভয় পেতেন? সশস্ত্র সংগ্রামকে অনেক বড় প্রগতিশীলরাও খুব ভীতির চোখে দেখে থাকেন। গান্ধী যেমন ভারতের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন কিন্তু সশস্ত্র সংগ্রাম চাননি, দীনবন্ধুও কি সেইরকম গান্ধীবাদী ছিলেন? ব্রিটিশ শাসকদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি কি তাঁর দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করে রেখেছিল? সেইসব প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া গেলেও এ কথা নির্মমভাবে সত্য যে, নীলদর্পণ নাটকে বাংলার ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। বিরাট এক কৃষক বিদ্রোহকে নাট্যকার যেভাবে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে তিনি যখন ভূমিকায় ইংরেজদের দয়া ভিক্ষা করেন, তখন কৃষকদের গৌরবময় বিদ্রোহকে অসম্মানই করা হয়।
নীলদর্পণ নাটকে দীনবন্ধুর ইংরেজ শাসকদের কাছে দয়া ভিক্ষা করার কোনো কারণ ছিল না। কারণ নীলদর্পণ নাটক লেখার পূর্বেই বাংলার চাষীরা দয়া ভিক্ষা করে নয়, বিদ্রোহ করে-সংগ্রাম করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। শাসকদের বাধ্য করে তাদের দাবী মেনে নিতে। শাসকরা মাথা নত করে চাষীদের সম্মিলিত শক্তির কাছে। সেখানে নাটকে সে ঘটনা না তুলে ধরা উপরন্তু একটি সফল বিদ্রোহের পর দীনবন্ধুর ইংরেজদের নিকট কৃপা ভিক্ষা করা একদিকে অর্থহীন, দ্বিতীয়ত তা বিদ্রোহকে খাটো করা। তিনি কেন এটা করলেন তা চূড়ান্তভাবে বোধগম্য নয়। কৃষকের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে তিনি কিন্তু ইতিহাসের বিপক্ষেও দাঁড়ালেন। কৃষক সংগ্রামের সত্যিকারের ইতিহাস তুলে ধরতে পারলেন না। বাংলার ইতিহাসকে তিনি এ নাটকের মধ্যে দিয়ে পিছনের দিকে টেনে নিতে চাইলেন। বিদ্রোহী কৃষক বাঙালী চাষীদের তিনি ইংরেজের করুণার কাঙাল বানালেন। নীলদর্পন নাটকের পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে দেয়া লেখকের বক্তব্য।