নাসরীন জাহান
নাসরীন জাহানের কবিতা ‘রাক্ষুসে পোকা আর মেঘ’
প্রকাশিত : মার্চ ১৪, ২০২৪
যেদিন আয়নাজুড়ে আমার চেহারা প্রস্ফুটিত হলো
শূন্যলোকের দেবতা নই,আমি এক সাধারণ মেঘ।
জেনে শরমিন্দা হলে
এবং হাতে নিলে শরাবান তহুরা
যেদিন অন্ধকার ছুড়ে দিয়ে ছুটে গেলে অগ্নুৎসবে।
তার আগে স্পর্শ করলে
চুম্বনে স্নাত করলে আমার দেহ
শামিয়ানা টেনে দিলে
বিভাজনে রইল না সন্দেহ
যেন রাক্ষুসে পোকার মতো পাখা পুড়িয়ে তুমি
ছুটতেছিলে মরুভূমি ধরে
যেন তুমি মরুসন্যাসী
ছিঁড়তেছিলে ধুলোর কাগজ।
সেদিন থেকে লিখে যাচ্ছি প্রতিসন্ধে একাকিত্বের কিতাব
যতই অরণ্য থেকে ছুটে আসে সাপ, প্যাঁচায় শরীরে
আমি কেবল জলে পড়ি,
জলের মধ্যে পদ্ম হয়ে ভাসি,
যেদিন গাইতে থাকে আকাশ পরমগীত,
আমি শুনি তোমার কণ্ঠ, আমি তখন ঘরদোর ছাড়া,
উপচানো উলুখড় রোদ বিছিয়ে
রাখে প্রচণ্ড দুপুরে।
যেদিন মনে হতে থাকে কোনো এক খেজুর বাগানে তোমার ছায়া উড়ছে
আমিও গড়াতে থাকি, খসে
পড়া কুসুমের মতো
দুলদুল ঘোড়া নেই
আমার তো অবসরও নেই।
কেবলই খেজুর গাছের কণ্টক,কেবলই শূন্যে ওঠানামা।
যেদিন হাতে নিলাম অন্ধের কিতাব।
বেরিয়ে এলো চণ্ডালের বিষ নিয়ে শরীরের ভেতরের
শীব ঠাকুরের সাপ,
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ি,
তুমি তো বৃষ্টির নিবাস জানতে চাওনি, তাই দাহে পুড়ে
অগ্নিকে করেছ নিজের নিবাস।
আর আমি ঘরদোর ছাড়া আসমানে বাষ্প হয়ে
খুলে বসি আতরের আড়ত
যেদিন যুধিষ্ঠির সত্যের আড়ালে মিথ্যা বলে ফেলে
তখনই ফের জন্মি
প্রতিদিন জন্মে মহাভারত।