নাসরীন জাহানের অণুগল্প ‘শিমুল বাগানের পথে’
প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
চলো, এবার কথা বলতে বলতে আমরা বলি, এরপর আমরা বন্ধু থাকব তো? তোমার কন্ঠ থেকে তাড়া ঝরে পড়ে।
শিমুলবাগানের নিচে আমাদের মাথার ওপর ঝরে পড়ছিল অনেক ফুল, আর আমি তোমার কাছবর্তী থেকে সরে যাচ্ছিলাম ধীরে, যেন মাঝখানে তৈরী হচ্ছিল গহবর এবং তুমি তা টের পাচ্ছিলেনা।
বললাম, ফের তুমি আরেক প্রেমে পড়তেই পারো,আমাদের অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল এই তাহিরপুরে আসা,ভাগ্যিস বসন্ত
পেয়েছি। শিমুল ফুলের অরণ্য পেয়েছি।
যেন অশরীরী কন্ঠে বলো, ভাগ্যিস বলছ সু,? এবার আমাদের বিদায় হচ্ছে কিন্তু।
মাঝখানের হ্রদ নদী হয়ে যেতে থাকে ক্রমশ, আমি ভিজে যেতে থাকি, আসলেই তুচ্ছ তুমি,নইলে এত বিদায় বিদায় স্মরণ করাতে না।
বিরক্তিকর কন্ঠে ফের বলো, সু আমরা বন্ধু থাকব তো? আমি শিমুলবৃন্তের ঘ্রাণ নাকে পেয়ে কৈশোরের মতোই বিহবল বোধ করি। যা আসার পর থেকে পাই নি।
মাথার ওপর যেন অনন্তের পথ ধরে ফুটে আছে শিমুলের সমুদ্র। অথচ পুরো শহর মফস্বল খুঁজেও আমি একটা এমন
শিমুল গাছ পাইনি।
ধীরে ধীরে সমুদ্র সৃষ্টি হলে ভাবি,কেউ আমার জীবন থেকে চলে যেতে চাইলে মরলেও তার কাছে প্রেমের ভিক্ষা চাইতে নেই,এ আমি জানি। কারো কাছে নিজেকে ছোট করলে নিজে করুণার পাত্র হতে হয়। ছিঃ,নিজেকে ছোট করা? এভাবে জীবনের
সম্পর্ক? এরচেয়ে মরে যাওয়া ভালো।
তুমি ফের ভেজা কন্ঠে বলো, সুমাইয়া? এতোক্ষণে পথে এসেছে গুরু,আমার পুরো নাম মনে পড়েছে!
ফলে চিল্লিয়ে বলি, দুজনকেই চাইছ তো দু,ভাবে? তাহলে সমুদ্রের সাঁতার পেরিয়ে আসো।