নাঈমুল ইসলাম হিমেলের ৫ কবিতা
প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৪, ২০২২
জীবন্ত ক্যানভাস
গভীর রাতে চাঁদের বিষণ্ণতা
বাম পাঁজর বা ডান পাঁজর নয়
দীর্ঘশ্বাসটাই বিবেচ্য।
এখনও দেয়া হয়নি একটি টিউলিপ
কিংবা একগুচ্ছ কদম,
টিউলিপ কিংবা কদম গুচ্ছ নয়
আক্ষেপটাই বিবেচ্য।
কেটেছে অনেক রাত, অনেক দিন
নির্ঘুম রাত কিংবা আলস্যে ভরা দিন নয়
অপেক্ষাটাই বিবেচ্য।
কত রঙ্গে সাজিয়েছি তোমায়
চোখ বুজে দেখেছি তোমার প্রতিবিম্ব
রং কিংবা প্রতিবিম্ব নয়
তুমিই যে ক্যানভাস
এটাই বিবেচ্য।
কত ভেবেছি তোমায়
পাহারায় বসিয়েছি কত জোনাকি
শুধু তোমায় জয় করব বলে
ভালোবাসি বলে
ভালো আছি
কারণ, এখনও অপেক্ষায় আছি।
হত্যা নাকি যুদ্ধ
স্বচ্ছতা দেখেছ কখনো?
কোনো কৃত্রিমতার কথা বলছি না
বলছি একটি পূর্ণ প্রতিচ্ছবির কথা।
কাল দেখেছো কখনো?
কোনো রোমান্টিক সোডিয়াম মেশানো নয়
কোনো জোনাকির নিয়ন নীল আলোও নয়
বলছি নির্জীব শূন্য প্রাণহীন স্থিরতার কথা।
কান্না দেখেছো কখনো?
উচ্চমূল্যের ফ্রকের দিকে তাকিয়ে কান্না নয়
ক্ষতের মুখ গলে বেরিয়ে আসা রক্তের যন্ত্রণার কান্নাও নয়
বলছি মৃত্যুযোগের কান্নার কথা।
নিঃসঙ্গ দেখেছ?
ঘুণপোকার নিঃসঙ্গতা নয়
পিতামাতাহীন নিঃসঙ্গতাও নয়
নির্জীব হয়ে অজানার অপেক্ষার কথা বলছি।
দেখোনি? সত্যি দেখোনি?
তাহলে জীবনের কিছুই তুমি দেখোনি
ধর্ষিতার কষ্ট কি তাও বোঝো না তুমি।
ক্যান্সার নামক মৃত্যুবাণে আক্রান্ত মানুষ দেখোনি তুমি
তুমি পরাজিত
তুমি মানুষ নও, তুমি লেমিং নামের ছোট ইঁদুর থেকেও নিকৃষ্ট
লেমিং তার জীবন দিয়ে উত্তরসূরীদের জায়গা করে দেয়
আর তুমি জীবন দিয়ে জাতিকে ঘৃণিত করো।
যারা সব হারায় তারা যুদ্ধ করে
তোমায় বলছি, আত্মহত্যার চেয়ে যুদ্ধ অনেক ভালো।
বিচার
শান্ত হোন,
সময় সর্বদা আপনার পক্ষ নেবে না
চিৎকার করছেন কেন?
বাতাসে তো প্রতিধ্বনি উঠবে না
যেমন ওঠেনি দৃষ্টিহীন হৃদয়গুলোর।
তাদের আমি বাস্তুহারা বলি না
তাদের আমি দূর্গত, বন্যার্ত কিংবা শরণার্থী বলি না
আমি চারপাশে কতগুলো দৃষ্টিহীন হৃদয়কে ঘুরতে দেখি।
আপনি কি ভয় পাচ্ছেন?
আপনার তো ভয় পাবার কথা নয়
এ রাত আপনারই সৃষ্টি
চিনতে পারছেন না?
এই তৃষ্ণার্ত বেঢপ মুখগুলো
যাদের ওপর আপনার জন্মগত পাপ সোপর্দ করেছিলেন
আবারও বলছি নিশ্চুপ হয়ে বসুন
আপনার চিৎকার আজ মূল্যহীন
যেমন মূল্যবান ছিল তখন
এখন ঠিক তার বিপরীত
বিচারকরা সবাই মূক
যেমন ছিলেন আপনি
ক্ষুদার্থের চিৎকারে যেমন আপনি মূক ছিলেন
তেমন মূক থাকবে তারা।