দুজনেই যখন আমরা শুধু দুজনের জন্য নই
রাহমান চৌধুরীপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪
দুজনেই যখন আমরা শুধুমাত্র দুজনের জন্য বাঁচবো না ঠিক করেছি
যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা লড়বো সকলের জন্য
যখন স্থির সিদ্ধান্তে এসেছি আমরা দাঁড়াবো নিপীড়িত মানুষের পক্ষে
ফুলের মালা নিয়ে তখন শাসকরা বসে থাকবে না আমাদের জন্য
মহান নাগরিকের তকমা বা পুরস্কারও জুটবে না আমাদের
বরং তাদের মারণাস্ত্র তাক করা থাকবে সর্বদা আমাদের দিকে
ফলে আজ বিকেলে তোমার সঙ্গে আমার সাক্ষাতের যে পরিকল্পনাটি রয়েছে
নিশ্চেই তোমার সাথে আমার দেখা হবে;
কিন্তু স্বপ্নময় চাদরে ঢাকা কোনো চমৎকার ফুলবাগানে নয়
বরং বহুল পরিচিত সেই ক্যান্টিনের কোনো একটা টেবিলে
সেখানেই যা পাওয়া যায় খেয়ে নিয়ে আমরা কথা শেষ করবো।
খুব ভেবেচিন্তে ঠাণ্ডা মাথায় কথাগুলি বলে নিতে হবে।
দৃঢ়চিত্তে আমরা সেখানে আমাদের ভালোবাসার কথাগুলিই বলবো।
প্রতিটা প্রয়োজন মাথায় রেখে
জানোই তো আমাদের ঘর বাঁধবার মতো এখনো কিছু ব্যবস্থা হয়নি
কিন্তু তবু তোমাকে ত্যাগ করার কথা ভাবতেই পারছি না
মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে যেমন ত্যাগ করতে পারি না বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা
পরস্পরকে সান্ত্বনা দেবার কিছু নেই আমাদের
বুঝেশুনেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা
হাতে হাত না রেখে হলেও চোখে চোখ রেখে ভালোবাসার কথা
কিংবা পরস্পরের প্রতি আস্থার কথা আমাদের বলতেই হবে
বিকেলের সূর্যটা হেলে যাওয়া পর্যন্তই শুধু সময় থাকবে আমার হাতে
সামান্য অধিকক্ষণ আর বরাদ্দ করা যাবে না তোমার জন্য
হিসেবি জীবন আমাদের
কিন্তু তোমার জন্য আমার ভালোবাসা হিসেব করা নয়
ফুরিয়ে যাওয়া চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে দুজনেই
পরবর্তী দীর্ঘ বিরহের হিসেবটা করে নেব
যখন বিদায় নেবার জন্য উঠে দাঁড়াবো
না না হাত নাড়ার দরকার নেই,
বরং বসে থেকে চারপাশের সকলের সন্দেহের দৃষ্টি এড়িয়ে
আর একটা চায়ের নির্দেশ দিও ঠাণ্ডা মাথায়
জানি ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁদতে চাইবে, আবার নিজেকে সম্বরণ করবে
দৃঢ়চিত্তে বাইরে এসে দাঁড়াবো তখন আমি
যতটা তোমার প্রতি ভালোবাসা তার চেয়ে বেশি শ্রদ্ধা নিয়ে
সম্মান ছাড়া দুজন আমরা আর দুজনকে কী দিতে পেরেছি বলো?
গাছ থেকে একটি মাত্র গোলাপ না ছিঁড়ে
দুজন আমরা ভালোবেসে গেলাম দুজনকে
বিপ্লবের স্বপ্ন মাথায় রেখে।