ডোনাল্ড বার্থলেমে

ডোনাল্ড বার্থলেমে

ডোনাল্ড বার্থলেমের গল্প ‘সম্রাট’

বাঙলায়ন: হামীম কামরুল হক

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

ডেনাল্ড বার্থলেমে ১৯৩১ সালের ৭ এপ্রিল আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। মারা যান ১৯৮৯ সালের ২৩ জুলাই টেক্সাসের হিউস্টনে। পোস্টমর্ডান রচনারীতির অন্যতম পথিকৃৎ এই লেখক মূলত জেমস জয়েস ও স্যামুয়েল বেকেট দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিলেন। আর তাঁর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন টমাস পিনোশেঁ। এছাড়া প্রভাবিত হয়েছেন ফিলিপ গ্রাহাম, এরিক মাইলস উলিয়ামসন, অ্যামান্ডা ফিলিপ্পাচি এবং প্যাগেট পাওয়েলসহ আরো অনেক লেখক। তাঁর ছোটগল্প সংকলনগুলো হলো: Come Back, Dr. Caligari (1964), Unspeakable Practices, Unnatural Acts (1968), City Life (1970), Sadness (1972), Amateurs (1976), Great Days (1979), Overnight to Many Distant Cities (1983), Sam`s Bar (1987), Sixty Stories (1981), Forty Stories (1987), Flying to America: 45 More Stories (2007)। তাঁর চারটি উপন্যাস আছে, সেগুলো হলো: Snow White (1967), The Dead Father (1975), Paradise (1986), The King (1990). তাঁর বেশিরভাগ রচনা আয়তনে সংক্ষিপ্ত কিন্তু মননঋদ্ধ ও গভীর। বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরস তাঁর লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাঁর Sixty Stories (2003 সংস্করণ) এ থাকা The Emperor অবলম্বনে বর্তমান গল্পটি অনুবাদ করা হয়েছে। চৈনিক সম্রাটের কায়কারবারও প্রায় তুঘলকি কাণ্ডের তুল্য। নিজে সম্রাট, কিন্তু সবসময় মৃত্যু ও পরাজয়ের ভীতি তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। নিজেকে কবরে দেওয়ার আগে বিরাট সব পরিকল্পনা করেন, সেগুলির আসলে তার বেঁচে থাকার আতঙ্ক ও তাড়নার প্রতিরূপ। এইসব সম্রাটেরা মারা যায়, কিন্তু তাদের জীবনের এত ঠাকঠকম জাঁকজমক মৃত্যুর পর তাদের কী দেয়? প্রায় কিছুই না। আগাছার চেয়ে তুচ্ছ হয়ে যায় তাদের অমরত্ব। বেঁচে থাকতে প্রতি পলে পলে নিজেরা ভয়ে থাকত, তেমন ভয় দেখাতো জনগণকে। জীবন যাদের বিভীষিকাময়, মৃত্যুও তাদের কিছুই দেয় না। হামীম কামরুল হক

প্রতিদিন সকালে সম্রাট তার কাছে আনা নথিপত্রগুলি ওজন করে দেখেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি ফের সেগুলির ওজন নেন; তিনি ততক্ষণ বিশ্রাম নেবেন না, যতক্ষণ না নির্দিষ্ট পরিমাণের ওজন তাঁর হাতে অনুভূত না হবে; তিনি ঘোষণা করেন ‘ছয়’ হলো তার রাজ্যশাসনের চূড়ান্ত মাত্রা, কালো হলো শ্রেষ্ঠ রং; ভূগর্ভস্থ পথ দিয়ে তিনি প্রসাদ থেকে প্রসাদে দ্রুত ছোটেন, উপক্ষো করেন দেওয়ালে ঝোলানো জাঁকজমকপূর্ণ বস্তু, ঘণ্টা, ঢোলক আর সুন্দরীর নারীদের; তার কাজ গুছিয়ে আনার পূর্ব পর্যন্ত কতজন দায়দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তাকে নিশ্চিতভাবে দমবন্ধ অবস্থায় থাকতে হয়?

গুপ্তঘাতককের পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে সম্রাট একেক দিন একেক প্রসাদে ঘুমান; তার আছে দুশো সত্তরটি প্রাসাদ, কিছু প্রাসাদ তার মনের মতো, কিছু মনের মতো নয়; তিনটি কীটাণু রোগের ইন্ধন হিসেবে থাকেই, এর ভেতরে বুড়ো বয়স এবং মৃত্যু অবশ্য এখনও তাকে খুঁজে পায়নি, তাকে আজ সকালে উপহার দেওয়া হয়েছে ডাকযোগে-গিলটিকরা দারুণ জাঁকালো ব্রোঞ্জের সুরা উষ্ণ করার পাত্র, পিইহো জনগণের কৃতজ্ঞতার নির্দশন হিসেবে এসেছে এই উপহার, এবং ধ্বনিমাত্রা দিয়ে নির্দিষ্ট সুরকম্পনের নয়টি ব্রোঞ্জের তৈরি ঘণ্টার এক মহার্ঘ্য সেট, এই উপহার এসেছে ইউচাংয়ের পরমধার্মিক নাগরিকদের কাছ থেকে; তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই প্রাসাদের সমস্ত কর্মকর্তাকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়া হবে, এবং সেই পিইহোর গ্রামীণ-কূপটিকে দেওয়া হবে মিনিস্টার অব দ্যা ফিফথ র‌্যাঙ্ক খেতাব...

প্রথম সম্রাট এই ডিক্রি জারি করেছিলেন যে, তাঁর অধীনস্থ এলাকার জনসাধারণকে বলা হবে দ্যা ব্ল্যাকহেডেড পিপল; মহাসাগরে সেখানে তিনটি সুন্দর দ্বীপ, পেঙ্গলাই, ফ্যাঙ্গচ্যাঙ্গ এবং ইঙ্গচৌ, যেখানে অমরবৃন্দরা বাস করেন, এবং তিনি সেখানে মহাজ্ঞানী হসু ফু-কে প্রেরণ করেন, সঙ্গে দেন  কয়েক হাজার তরুণ তরুণী, তাদের খুঁজে বের করার জন্য; তিনি নির্দেশ করেন এক স্মরণ-মন্ত্র, যেটির শুরু, ‘এই সিংহাসন প্রশংসা করছে...’; বিখ্যাত গুপ্তঘাতক চিং ক’অ-কে কেনা হলো একশো টুকরা স্বর্ণ দিয়ে, একটি ব্রোঞ্জের ড্যাগারসহ, যেটিকে বলা হয় এই রাজ্যের সবচেয়ে ধারালো ছোরা।

এখানে টুপি হলো ছয় ইঞ্চি চওড়া, ঘোড়ার গাড়ি হলো ছয় ফুট চওড়া, পুরো সাম্রাজ্য ভাগ করা হয়েছিল ছত্রিশটি প্রদেশে; সমাহিতকরণের ভিত্তিতে একটি কঠিন আকৃতির গুবরেপোকা বসানো হলো প্রথম সারির ভেতরে ষষ্ঠ স্তরের মন্ত্রীদের কণ্ঠহারে; যখন সম্রাট সুড়ঙ্গ দিয়ে ব্যস্তভাবে যাওয়া-আসা করেন সঙ্গে থাকে তার স্ত্রীদের সকাতর প্রার্থনা, স্ত্রীরা সংখ্যায় এত যে তিনি তাদের নাম মনে রাখার চেষ্টাও করেন না, কিন্তু প্রত্যেককে সম্বোধন করেন, ‘বউ’ বলে, আর দূর করে দেন তাদের শ্রান্তির মহিমা; তিনি এখানে ওখানে সৈন্য পাঠান যেভাবে অন্যরা দূতদের পাঠায়, সমগ্র চীনদেশে আর্দশ অবশ্যই পরিদর্শন করতে হবে— এই নিয়ে তাঁর ডিক্রি জারি করা আছে, এর পারদের নদীগুলি এবং সিলেডনের শহরগুলি অতিঅবশ্যই ঠিকঠাক আছে কিনা নিশ্চিত করা চাই; যদি তোমার মিস্ত্রিরা তাদের অদক্ষতায় দম আটকে থাকে— তাহলে তারা তাদের পরিবারের ভেতরে পড়ে থাকে, তাতে একটি বিষয় অবিরাম বেড়ে চলে আর কানাঘুষা চলতে থাকে, তোমার বিরুদ্ধে শহরের চত্বরে আর সরাইখানায়...

সম্রাট চি’ইন শিহ হুয়াঙ্গ তি ডিক্রি জারি করেছিলেন যে, ছয় হাজার তীরন্দাজ, সৈনিক, রথচালক এবং সংগীতজ্ঞকে জীবন্ত কবর দেওয়ার, সঙ্গে দুই হাজার ঘোড়া, এটা তার সমাধিস্থলের চারপাশ ঘিরে এক সামারিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য করা হবে; দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তারা তাকে যুক্তি দিয়ে বোঝালো, এটা ঘোষণা করলে তার বিরুদ্ধে লোকজন ক্ষেপে উঠবে; কিন্তু তার সমাধিস্থল নিশ্চিতভাবেই সুরক্ষিত থাকবে সুনির্দিষ্টভাবে ছয় হাজার তীরন্দাজ, সৈনিক, রথচালক এবং সংগীতজ্ঞ দিয়ে, এই তালিকা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অন্য সমাধিস্থলের দুর্ভাগ্যের নিয়তি হয়, সেবা করার প্রতিদান হিসেবে মাকুয়েস দ্যা চিনচাঙ্গ ভুলভাবে দখল করেছিলেন ফলে সেই অঞ্চল ভিনদেশিরা শমনপ্রাপ্ত হলো; পদাতিকবাহিনীর সেনাপতিরা নিয়মিত এবং অবিরাম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে থাকল, ফলে তারা কখনো ভুলেনি কোথায় তাদের সত্যিকারের খাটুনি-পরিশ্রম-নিষ্ঠার ঠাঁই হয়...

তার আজ সকালের উপহারে এলো দুটি প্রমাণ আকারের সাদা-কঠিন বাঘের মূর্তি, এটি শিল্পী লিহ ইয়ি ব্যাকুলতার প্রকাশ, এবং সম্রাট নিজের হাতে তুলি নিয়ে এদুটোর চোখগুলি কালো ল্যাকোয়ার (অ্যালকোহলে ডোবানো সিন্থেটিক তরল, যা দ্রুত শুকিয়ে কাঠ ধাতু ইত্যাদির ওপর পরত দেওয়া হয়) দিয়ে রঙ করেন; দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তারা প্রস্তাব করলেন ছয় হাজার টেরেকোটা দিয়ে তৈরি সৈন্য এবং দু’হাজার টেরেকোটার ঘোড়া, সবই হবে প্রমাণ আকৃতির, সমাধিস্থলের প্রতিরক্ষায়, সেগুলিই কবর দেওয়া হবে;  সম্রাট ক্রুদ্ধ হয়ে আদেশ দিলেন অভিযুক্ত তিন হাজার লোক হসিয়াঙ্গ পাহাড়ের সমস্ত গাছ কেটে ফেলবে, পাহাড়টাকে একেবারে শূন্য, ন্যাড়ামাথার মতো করে দিয়ে আসবে, ফলে দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তারা বুঝে নিলেন কী করা সম্ভব হতে পারে; সম্রাট সভা-কবিদের আদেশ দিলেন অমর ব্যক্তি, খাঁটি মানুষ এবং মহান আত্মাদের নিয়ে কবিতা লিখতে— যারা তাদের শ্রমের মাধ্যমে রাত্রিকে দিনে পরিণত করেন, এবং কবিতা লেখা হলে তাকে এটা গেয়ে শোনাতে বললেন;  প্রত্যেকেই জানে যে, পাহাড়ে গাছ কাটার কাজটি এই বসন্তে করা উচিত হবে না, এমন কি একটা শিশুও তা জানে, কিন্তু তা ঘটবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাপারে...

এদিকে দক্ষ এবং নিপুণ গুপ্তঘাতক চিং ক’অ-র শিরোশ্ছেদ করা হলো, এবং তার খারাপভাবে সম্পন্ন উদ্যোগগুলি নথিভুক্ত করা হলো বর্ষপঞ্জিতে, আর তার যেমন-তেমন করে রাখা শব্দগুলি ছেঁটে ফেলা হলে বর্ষপঞ্জি থেকে; এদিকে জমাপড়া দরখাস্তগুলি নিজের আলখাল্লার হাতায় ঠেসে ঢুকিয়ে সম্রাট ব্যস্ত হয়ে যাওয়া-আসা করেন তার অতিপ্রাচুর্যময় প্রাসাদগুলির ভেতর দিয়ে; সত্তর হাজার অভিযুক্ত তার সমাধিক্ষেত্র নির্মাণের কাজে রত, যেটার কাজ এগিয়ে চলেছে তার তেরো বছর বয়স থেকে এবং এর পরিমাপ হলো ২১৭৩ মিটার উত্তর-দক্ষিণে এবং ৯৭৪ মিটার পূর্ব-পশ্চিমে; একেবারে অন্তঃস্থ কক্ষটিতে একটি আকাশের মতো একটি ছাদ থাকবে যেখানে বিচিত্র আকার আকৃতির রত্নগুলি নক্ষত্ররাজির প্রতিনিধিত্ব করবে, মানে জ্যোতিষ্কপুঞ্জ; সম্রাট চি’ইন শিহ হুয়াঙ্গ তি একটুক্ষণ থামেন, পান করেন উষ্ণ পানীয়, এবং বিবেচনায় রাখতে বলেন যে, তার সমাধিক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে চেয়ার যেন সরবরাহ করা হয়, তার স্ত্রীদের সহচরীদের জন্য, সেনাপতি এবং দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তাদের জন্য— যারা কিনা তার সঙ্গে সঙ্গে সমাধিস্থ হবেন; মহাজ্ঞানী হসু ফু, এবং যে তরুণ এবং পরিচারিকা জাহাজে চড়বেন, শুনতে পারেনি এখান থেকে, নিশ্চিতভাবে রাক্ষসেরা তাদের গিলে ফেলবে...

এক হাজার পিকুল (এশীয় একটি পরিমাপ, যেটুকু ওজন একজন মানুষ কাঁধে তুলতে পারে) শস্য দিয়ে একজন সাধারণ লোক অভিজাত পদ কিনতে পারে, মুক্তি পেতে পারে অপযশ দুর্নাম থেকে; শাস্তি দেওয়ার জন্য সম্রাট একটা পাথর তৈরি করেছিলেন, তা এতটাই বড় যে কিরিন তোরণ দিয়ে সেটা নিয়ে যেতে ষাটটি দড়ি লাগবে; সেখানে একজন নারী ছিল যে সম্রাটের সবচেয়ে শরীরী উত্তেজনা দিতে পারত, লেডি ইয়ো (তার বাঁ পায়ে ছিল লম্বা একটা কাটা দাগ) কিন্তু মিলন শেষে শিবিরে ফেরার পথ খুঁজে নেওয়াটা ওই নারীটির জন্য প্রায় অসম্ভব কাজ হয়ে উঠত; একজন ঈশ্বরবিদ্বেষী তাকে (সম্রাটকে) বর্ণনা করে একটা কুকুর, মুরগি, সাপ হিসেবে এবং সে মনের গরিবি দশা দেখিয়ে বেড়িয়ে উৎফুল্ল বোধ করে; তিনি মাউন্ট হসিয়াঙ্গে বর্গাকারে এবং অংশীদারী ভিত্তিতে আবার গাছ লাগানোর চিন্তা করলেন, এতে করে সেই বিশেষ কর্মকর্তারা আভিজাত্যময় মর্যাদা অর্জন করতে পারবেন যা সাম্রাজ্যের প্রতি নিবিড় আনুগত্যের ইচ্ছাকেই বড় করে তোলে...

না। তিনি অনুমতি দেবেন ছয় হাজার মাটির তৈরি যোদ্ধাকে কবর দেওয়ার, এবং এদের সঙ্গে একজন সত্যিকারের সৈন্য, একজন যুবরাজ, একটি গোপন প্রেমিকাকেও যেতে হবে; তিনি তার নিজের হাতে প্রস্তুত করবেন এই যুবরাজকে ঐন্দ্রজালিক ওষুধ দিয়ে নরম ঘুমের ঘুমপাড়াতে, এক পিতৃত্বময় সুখের সঙ্গে; তিনি ওই জাদুর ওষুধ প্রয়োগ করার আগে যুবরাজের কানে ফিসফিস করে বলবেন, আজীবনের রহস্যগুলি, এটা এক উন্মত্ত সুখ; তিনি সুখী হবেন যে যুবরাজেরা নিজের সমাধিস্থ করতে চায় তাদের নিজেদের কবর দিয়ে, এটা এক জ্যামিতিক সুখ; যারা দ্বিতীয়বারের মতো সামধিস্থ হওয়ার অনুষ্ঠান করবে তাদের যুদ্ধ থেকে দূরে সরিয়ে আনা হবে, পরাজয়ের সামরিক দক্ষতা অতিক্রমণ করে যে কৌশল তিনি করবেন তা এক বেদনাময়, দূরবর্তী, এবং পেশাগত সুখ। এই যুদ্ধে পরাজিত হলে, তিনি রাজধানীর পথে খালিপায়ে হেঁটে যাবেন এবং তার খোলা কাঁধে কাঁটার ঝোঁপের কশাঘাত নিয়ে, এ এক গুপ্ত এবং যন্ত্রণাময় সুখ; এইসব সুখ একসঙ্গে নিয়ে নিলে হয়তবা অমরত্বের গুল্ম জন্মাবে আগাছার মতো পেঙ্গলাইয়ের জাদুর দ্বীপের মতো; হ্যাঁ, আগাছাগুলির মতো জন্মাবে অমরত্ব।