জুয়েল মাজহার
জুয়েল মাজহারের কবিতা ‘ভ্রমণ’
প্রকাশিত : নভেম্বর ১৮, ২০২১
১.
নারীমাছ, তোমাকে আতশকাচ
কিনে দিতে চলেছি বিদেশে
দূর কোনো সরোবর থেকে তুমি
ইচ্ছেমতো চাহিদা জানাও
২.
কৌটায় অম্লতা ও ক্ষার নিয়ে
নানা দেশে, নানা নিরুদ্দেশে
টলোমলো জাহাজের মতো আমি
রক্তমাখা দ্রাঘিমায় একা পথ চলি
৩.
শ্বাপদের ক্রূর চক্ষু, শ্যেন চক্ষু
জ্বলে-নেভে অভ্যাসের মতো
যূথবদ্ধ নেকড়েদের অবিরাম দৌড়!
৪.
সাভান্নায় আবছা বিকেলে, দেখি,
পশুর করুণ মাংসে আর্তনাদ গাঢ় হয়ে আসে
৫.
ক্রাচে-ভর, নুলো পায়ে
নীরবে কুড়াই কত
বিবিক্তির বিষে ভরা ফল
৬.
হাঙর-চোয়াল দেখে ভয় পাই
লবণের অনুপ্রাসে, ঢেউয়ে চলি ভেসে
নোনা ঢেউ, নোনা হাওয়া
ফুটো পাল, ভেঙে গেছে হাল
রাত্রির বন্দরে থামি। ছোটো তরী কাত!
—কাছে কোনও পাইনি সরাই। তাই
শুতে যাই খড়ের শয্যায়
মাকড়জালের নিচে পেয়ে আস্তাবল
৭.
আমাকে দোলাও তুমি ঘুমে
অপরূপ রকিং ক্র্যাডলে
এইসব দোলা আমি তোমার আদেশে
সুমুদ্রকে শেখাতে এলাম
৮.
কুয়াশার রাত্রিশেষে সূর্যের রক্তমাখা বহু লাল ডিম
ঝোলায় কুড়িয়ে নিয়ে বসি একা মেঘের ছায়ায়;
৯.
নারীমাছ, তোমাকে আতশকাচ কিনে দিতে
এত দূরে এলাম বিদেশে
দূরতম সরোবরে
সূর্যের ঢলে পড়া গ্রীবার আড়ালে
ভস্মনদীর তীরে ফের দেখা হবে
নরকের খরজলে দেখা হবে সাঁতার-পোশাকে