কুমার মানিকের ৩ কবিতা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

ক্রমিক ক্যানিবাল 
 
নৈশপ্রহরীরা জেগে ছিলো সে রাতে,
শ্মশানে মরা পুড়ছিলো একা একা,
ল্যাম্পপোস্টের আলোর নিচে এক বেশ্যা দাঁড়িয়ে ছিলো
খদ্দেরের অপেক্ষায়,
একলা এক পথচারী ভয়ে ভয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো
শহরটা ভালো না, কখন যেনো বিপদ চলে আসে,
তুমি বারন্দায় দাঁড়িয়ে জোৎস্না দেখছিলে
আর আমি অপেক্ষায় ছিলাম কখন খুন করবো তোমায়!
প্রিয়শ্বরী আজকাল আমি খেতে পারি না ঠিকমতো
রোজকার ভাত, ডাল, মাংস বড্ড অরুচি লাগে
আমার এখন তোমাকে চাই,
দুপুরবেলা তোমার কলিজাভুনার সাথে জিভের সালাদ,
অথবা অলস কোন সন্ধ্যায়
কড়া করে ভাজা তোমার আঙ্গুলের ফ্রাই,
এ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম খাবার!
ভাত খেতে নাই পারলাম
তোমাকে খেয়ে হলেও আমি বাঁচতে চাই প্রিয়শ্বরী,
এই পৃথিবীটা আমারও
 
 

ইচ্ছে

 

আর একবার ফিরে এসো তুমি হাসিমুখে,
কত অন্ধকারে কত আহুতি
কত লাশ রেখে গেলো,
কতবার ডেকে শেষে না পেয়ে ফিরে এসেছি একা,
কত বিক্ষোভ মিছিল, কত অনশন, কত বিদ্রোহ,
এই শহরে কত মানুষ মারা যায় রোজ!
থ্যানোটাস তোমার অভিমান ছুঁতে পারে নি শুধু,
প্রিয়তমা বেলা ফুরিয়ে যাচ্ছে
বেঁচে থাকার বাকী আছে আর অল্পই,
এবার তুমি ফিরে আসো 
এবার তুমি ফিরে এসে বলো ভালোবাসি,
চলো যাই সুমুদ্রস্নানে,
আমার এখন উঠোনে বসে খুব একলা লাগে,
প্রিয়শ্বরী আর একবার তুমি ফিরে এসো হাসিমুখে!
 
 
পুর্নজন্ম
 
চিতার আগুনে বেঁচে যাওয়া নাভীর থেকে 
আমি জন্ম নিবো আবার!
কয়েক কোটি বৎসর ধরে তোমায় দেখি না,
কয়েক কোটি বৎসর ধরে ছুঁই না তোমায়,
কয়েক কোটি বৎসর ধরে সরলদোলকে মাথা গুঁজে
বলি না ভালোবাসি,
কয়েক কোটি বৎসর ধরে
তোমার বাকশক্তির কাছাকাছি আসা হয় না,
প্রিয়তমা চিতার আগুনে বেঁচে যাওয়া নাভীর থেকে 
আমাকে আবার জন্ম নিত হবে!
এখনও হাজার আলোকবর্ষ সমান সময় ধরে
তোমায় দেখার বাকী!