কাজী বর্ণাঢ্য
কাজী বর্ণাঢ্যর ‘জীবনের গান’
প্রকাশিত : মে ২০, ২০২১
এক.
বীজ ফেটে উদ্ভিদের জনম
ডিম্ব থেকে মাছ পাখি,
তরল ছেঁকে সরল মানুষ
অপূর্ব জীবন আঁকি।
ঘর-সংসারে খালি এসে
তালি বাজাই খুব আয়েশে
আনন্দে অভিনয়শালায়
শূন্যতে জমাই বাকি।।
তরল ছেঁকে সরল মানুষ
অপূর্ব জীবন আঁকি...
বুকে পুষে বিষাদ জ্বালা
গাথি স্বর্গ-সুখের মালা
বেলাশেষে জলে ভেসে
দলছাড়া হই একাকী!
তরল ছেঁকে সরল মানুষ
অপূর্ব জীবন আঁকি...
দুই.
আমার, এলোমেলো চুল বাউলা চলাফেরা
সেই যে কবে ঘর ছেড়েছি হয়নি ঘরে ফেরা।
চাল-খুঁটিহীন ঘর বেঁধেছি অগণিত মনে
পথের চেনা অচেনা মুখ ফুল আর পাখির সনে।
বৃক্ষ আমার পরম বন্ধু সবার মাঝে সেরা।।
বুকের ভিতর সুখের পাহাড় দুখের ঝর্ণা বহে,
কাঙ্ক্ষিত সব পাওয়া এবং না পাওয়ার বিরহে।
প্রবাহিত জীবন, নদীর চালচলনে ঘেরা।।
তিন.
বন্ধু, ভালোবাসাটুকু নিও শুধু আর কিছু না নাও,
দুঃখগুলো খুন করে সব সুখের ঘর বানাও।
কাগজের নৌকা সদা ভাসতে পারে না
কাগজের পুষ্প ঘ্রাণে হাসতে পারে না।
কাগজের প্লেন উড়িয়ে দিয়ে মনকে পোষ মানাও।।
আমায় তুমি মাতাল ডাকতে পারো
ভাবতে পারো যা চায় তোমার মন,
দুর্দিনে হোক দুঃখ ভাগাভাগি
হাত ছেড়ে নাও হৃদয় সিংহাসন।
আমার ওপর সব অভিযোগ সব ঘৃণা জানাও।।
চার.
আজিমপুরে জাজিম নাইরে থাকবা মাটির বিছানায়,
নাই পালঙ্ক চাদর বালিশ তোমার আপন ঠিকানায়।
মিছে মায়ার ঘোরে পড়ে
ঘর বান্দিলা যতন করে
ইট সাজাইয়া ইটের ’পরে
গড়লা মহল কোন আশায়।।
নাই সেখানে মনের মানুষ
গাইবে সুখের গান
যারে লইয়া কথা কইয়া
জুড়াইবে পরাণ।
অবুঝ মায়ায় পথ চেয়ে
রইবে না কেউ অপেক্ষায়।।
জীবন পুইড়া পুইড়া জ্বালো
কত শত আশার আলো
যদি কারো লাগে ভালো
যেতে পারে জানাজায়।।
পাঁচ.
টগবগিয়ে মেঘের ঘোড়ায় চড়ে,
হারাবো প্রেমের তেপান্তরে।
ভালোবাসার ভুবনে
বাঁধবো ঘর দুজনে
বিলিন হয়ে নেব সুখের
উষ্ণতা অন্তরে।
কুমার যেমন যতন করে
বান্ধে মাটির ঘর,
মাকড়সাও জালের বাড়ি
বানায় নিরন্তর।
বাবুইর মতো থাকবো ঝুলে
কাল বৈশাখী ঝড়ে।।
নাচনেঅলি ময়ূরপঙ্খীর
রঙের খনি থেকে,
রঙ মাখিয়ে দিন ফুরাবো
তোর অবয়ব এঁকে।
রাত ফুরাবো মনের জমা
হাজার গল্প করে।।