এখলাসউদ্দিন আহমদের ৪ ছড়া

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৬, ২০২০

শিশুসাহিত্যিক এখলাসউদ্দিন আহমদের আজ জন্মদিন। ১৯৪০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ছাড়পত্রের পক্ষ থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিশেবে তার লেখা চারটি ছড়া পুনর্মুদ্রণ করা হলো:

হাঁটি হাঁটি পা পা

এক পা যেতে
তিন পা টলে
          দুই পা যেতে ঝুপ।
তিন পা যেতে
এক পা টলে
          পাঁচ পা যেতেই চুপ!
ছয় পা যেতে
আর টলে না
          কেবল হাঁটাহাটি!
তেলের শিশি
উলটে ফেলে
          ঘরসংসার মাটি।
হাঁটি হাঁটি পা পা
যেখানে খুশি সেখানে যা ।

যাবই যাব মাগো

এবার আমি যাবই যাব মাগো
পেরিয়ে সাত সাগর তেপান্তর
আমার উপর যতই তুমি রাগো
এমন দিনে থাকবো না আর ঘর।

আকাশ নীলে আমার পক্ষীরাজ
ছুটবে বেগে ঝড়ের পাশে পাশে
সামনে পিছে ঘন মেঘের বাজ
জয়ধ্বনি দেবে মা উল্লাসে।

পেছন হতে যে যাই করুক মানা
দেখাক না ভয় দত্যিদানোর বেশে
আজকে আমি শুনবো নাকো মানা
যাবই যাব ঘুমপরীদের দেশে।

সেথায় গিয়ে গাইবো আমি মাগো
তুফান সুরে ঘুমভাঙানি গান
বলবো হেঁকে, দস্যু দামাল জাগো
বুলবুলিরা নিচ্ছে লুটে ধান।

নতুন সুরে উঠবে সবাই কাঁপি
ঘুমপরীরা ভুলবে রাতের ঘুম
ছিনিয়ে নিয়ে ঘুমঢুলুনির ঝাঁপি
বলবো হেঁকে, আর নেব না চুম।

শুনবো না আর ঘুমপাড়ানি ছড়া
গাইবো এবার ঘুমভাঙানি গান
বুলবুলিদের বাঁধবো কষে দড়া
আর দেব না সোনার আমন ধান।

বৈঠকি ছড়া

অষ্টপ্রহর জাহির করেন প্রাণটা দেশের, দশের
ঠ্যাকনা দিতে একাই তিনি সুনাম কিম্বা যশের
কিন্তু ক্বচিৎ মওকা পেলেই
তেলের পিপে বেবাক ঢেলেই
গোছান আখের ভিজিয়ে দু’পা ইমিডিয়েট বসের।

কথায় কথায় হুট বলতি তাগেন তিনি হাতিয়ার
গালগল্পে বাঘ-ভাল্কুক মারেন এবং হাতি, আর
পাশ ফিরতে উজির নাজির
প্যায়দা পাইক করেন হাজির
কিন্তু হেঁ হেঁ রাতের বেলা আমসি বুকের ছাতি তার।

তুন তুবড়ির মিঁয়াও

তুন তুবড়ির মিঁয়াও ছিল দুটি
রংটি গায়ের সাদায় কালোয় বুটি
পথ চলতেই জড়িয়ে ধরে পা
ধমক দিলে কথাই শোনে না।
রোজ দুপুরেই ভীষণ সুবোধ লক্ষ্মী
দুষ্টুমি বা কিংবা কোনো ঝক্কি
করতো না সে রান্নাঘরের দোরে
ধ্যান করতো ভীষণ ধৈর্য ধরে।

তুন তুবড়ির মিঁয়াও ছিল দুটি
দুষ্টুমিতে ছিল না তার জুটি।