ইংরেজি যেন মেধাবীদের পরিচয়পত্র!
রিফাত বিন সালামপ্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮
ভাষার স্বাধীনতা মানেই শুধু একটা ঘোষিত রাষ্ট্র ভাষা বা বানান শুদ্ধ প্রক্রিয়া নয়। বাংলাদেশে এখনো ৫৭ ধারার মতো আইন জারি আছে কিংবা বাংলা ভাষাকে এখনো ইংরাজি ভাষারর চেয়ে কমজোরি ভাবা হয়। ৫২ সালের আন্দোলন এখনো একটা চলমান আন্দোলন। স্রেফ তার দাবি আজ আলাদা।
ব্রিটিশরা শুধু জমিতেই কলোনি গড়েনি, বাঙালি জাতির মন ও মগজেও কলোনি গড়ে দিয়ে গেছে। তাই আজও ফটাফট ইংরাজি বলা বাঙালিদের জ্ঞানী আর সাহেব শ্রেণির প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়। ইংরেজি বলা ছাত্রদের বেশি মেধাবী, ইংরেজি বলা শিক্ষকদের বেশি শিক্ষিত আর দক্ষ মনে করা হয়। একই কথা কেউ বাংলায় বললে যত না গুরুত্ব দেয়া হয়, সেই একই কথা ইংরেজিতে বললে তাকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ইংরেজি যেন মেধাবীদের পরিচয়পত্র!
স্বীকার্য যে, ইংরেজি ভাষা একটা আন্তর্জাতিক সেতু। কিন্তু সেটা তৈরির পেছনে সাম্রাজ্যবাদই প্রধান হারিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। এভাবেই একদিন সারা দুনিয়া-জাহানে ইংরাজি ভাষা আরো মহান হয়ে উঠবে। নাকি এরই মধ্যে তা হয়েও গেছে? ইউরোপীয় অনেক বন্ধু পেয়েছি এখানে (শান্তিনিকেতন/বিশ্বভারতী), যাদের সাথে ভাষা বিষয়ক আলাপে এটাই বুঝেছি, তারা ইংরেজিতে অনেক দুর্বল। বিশেষ কিছু উন্নত দেশের কথা বলছি। যতটা না হলেই নয়, তারা ঠিক ততটাই ইংরেজি ব্যবহার করে। তাও সেটা বহিঃবিশ্বে যোগাযোগের ক্ষেত্রে।
আমার আফসোস, যে লোকটা নিজের সেরা সাহিত্যকর্ম বাংলায় লিখেছিলেন, এপর তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে নোবেল পেয়েছিলেন, তারই প্রতিষ্ঠানে বাঙালি ছাত্রদের সামনে বাঙালি শিক্ষক ইংরেজিতে ক্লাস নেন! সরাসরি ইংরেজিতে রিসার্চ লিখতে হয় এখানে। কারণ ইংরেজি মাধ্যম নামের এক অদ্ভুত জিনিস এখানে চালু আছে।
শুধু এখানে নয়, বাংলাদেশ কিংবা আফ্রিকাতেও একই অবস্থা। তৃতীয় বিশ্বের সকল দেশের আন্দোলন ধীরে ধীরে শুধু দিবসে পরিবর্তিত হয়। পুঁজির কাছে ভাষা স্রেফ একটা প্রোডাক্ট।