আশিক আকবর

আশিক আকবর

আশিক আকবরের ৩ কবিতা

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ৩০, ২০২২

খুব গুড

শেষবার তিনি লাঠি হাতে শাহবাগ এসেছিলেন
তাকে সাবার হোটেলে পৌঁছে দিয়েছিলাম।
পরদিন ভাস্কর রাসা এসে বলেন,
আশিক, সাবদার কই?
সাবার হোটেলে সে তো নেই।
সেই যে হারালেন সাবদার সিদ্দিকী,
খালি পায়ে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া হাঁটা কবি;
আমাদের সাবদার ভাই,
তাকে আর তারপর আমাদের কেউ খুঁজে পায়নি।

 

শোনা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে মারা গেছে সে।
শোনা গেছে, বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় কবর হৈছে তার।
শোনা গেছে, ফেরেসতাদের মতো পাখা হৈছে তার,
তিনি এখন হোল পৃথিবী উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ান।
চীন দেশটা পুঁজির দিকটায় ঘুরে যাওয়ায়
খানিকটা বিরক্ত তিনি।
তিনি চীনা ঘরানার কমিউনিস্ট ছিলেন।

 

আমাদের সাবদার ভাই,
লম্বা আলখাল্লার ভেতর থেকে অনেক অনেক পাখি উড়িয়ে,
তিনি নিজেই কোকিল পাখি হয়ে গেছেন।
বলেছেন,
‘কাঠঠোকরা কিংবা কাঠুরিয়া
তুমি যেই হও
আমি আছি তোমার কাছাকাছি
রাখাল ভুলানিয়া এক পাখি’

 

সাবদার ভাই, রেড স্যালুট
আপনি বাংলা কবিতায় ও জীবনে খুব গুড।

 

আগুন সুন্দরী

কিছুই যখন করার ছিল না
তখন আমরা বিবাহের পাত্রী খোঁজার দিকেই মনকে নিলাম।
শুনলাম, বিবাহের থেকে হাংগার দাম বেশি।
শুনলাম, ফাউ বউয়ের কাম যারা করতো
তারা এখন ঢাকায়।
শুনলাম, বিবাহ নয়, নারীর লক্ষ্য এখন ঢাকাতে গমন, ওখানেই রোজগার বেশি।

 

আমরা অদম্য ছিলাম,
সিঙরা নদীর প্যাঁচে প্যাঁচে হাঁটতে হাঁটতে এক পাত্রীকে পেলাম।
আগুন সুন্দরী শে,
আঠারো ঊনিশের কোঠাতে বয়স।

 

তার নানি ভিক্ষা করতো
তার মা ভিক্ষা করতো
একবার নাঙয়ের সাথে থাকার সময় খেয়েছিল সামাজিক ধরা
তবুও থামিনি আমি
মা আর নানির কর্মে আগুন সুন্দরীর কিবা দোষ
পায়ে পায়ে তার কাছে যাই
আগুন জ্বালাতে আগুন সুন্দরী ফিরতেছে ঘরে
কোলে তার শীতের ঝরাপাতার জ্বালানি

 

পাশের বাড়িতে টি ব্যাগের চা,
মিষ্টি বিস্কুটে
আগুন সুন্দরীর তথ্য নিতে নিতে জানলাম
বউয়েরা যা যা করে
তিনি তা তা করেন
বিনিময়ে কিছু টাকা নেন
অনেক অনেকের সাথে তিনি হাসি মুখে করেন এইসব লেনদেন
সিঙরা নদীর পাড়ের এক কুমারী কন্যা শে

 

গালিবের জন্মদিনে

১.
নারীর জন্য খুবই ব্যাকুল ছিলাম
এই মুহূর্তে তিনি যখন পাশে শুয়ে আছেন
তখন আবার ফেসবুকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি

 

২.
আয়না মুছেছি
দাড়ি-গোফ কেটে মুখে সাজগোজ করেছি
তারপরও আয়নায় যৌবনের আমাকে পাইনি

 

৩.
পাশে শুয়ে থাকা নারীকে বিদায় দিতে হবে
নৈলে পাড়ায় ঢিঢি পড়ে যাবে
আশিক বেশ্যা নিয়ে শুয়েছে
কেউ বুঝতেই চাইবে না
রাস্তায় রাস্তায় থাকা এক নারীকে
এক পৌষের শীতের রাতে আশ্রয় দিয়েছি
পারলে, হাজার রাতের আশ্রয় দিতাম।

 

৪.
রাত শেষের দিকে
জাগো রে পার্শ্ববর্তিনী
আবার তোমাকে জনসমুদ্র ভাসিয়ে দেই

 

৫.
স্বাচ্ছন্দ্যে সাথে এসেছে
তার হাতের জাদুতে পাগল করেছে
এক রাতের স্মৃতি রেখে এখন শে চলে যাবে

 

৬.
রাত শেষ
এখন চলে যাবে
যেহেতু দিনের আলোতে বেশ্যা নিষিদ্ধ

 

৭.
রাত শেষ
শেষ আদরটা নিয়ে
বিদায়

 

৮.
জানতে চেও না শে কে ছিল
শে এমন মহান এক বিগত যৌবনা নারী
দারুণ সেক্সি
এবং এবং সবার জন্যই সহজলভ্য
এবং প্রশান্তিময়

 

৯.
আশ্চর্য উন্মুক্ত শে
সবার বাড়িকেই নিজের বোনের বাড়ি মনে করে
এবং ওই বোনের বাড়িতে আমাকে নিয়া শুইতে চায়
কী আর করা! এক রাতের জন্য
নিজের বাড়িতেই তাকে নিয়ে এসেছি

 

১০.
আশ্চর্য
শে আমার সাথে শুইলো
কোনো বিনিময় চাইলো না
শে আমার বৌ না
প্রেমিকা না
রাস্তায় এক হাসিতেই শে আমাকে কিনে নিয়েছে
এখন এই পৌষের রাতে পাশে স্বাচ্ছন্দ্যে শুয়ে আছে

 

১১.
আল্লা দিলে
এভাবেই দেয়
অপরিচিতাকেও আপন করে দেয়

 

১২.
গালিব
মীর্জা আসাদুল্লা খান
পাগলিনী সঙ্গে লৈয়া আপনার সাথে হৈলাম খান খান

 

১৩.
গেলাম গালিব
শেষ শর্টটা নিতে
গোল হলে দুজনেরই জয়