আবু তাহের সরফরাজের ৩ কবিতা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

আরও কয়েকটি নিঃশ্বাসের জন্যে

 

বেশি তেমন কিছু নেই যা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারি
ঝিরঝির বিষটি দেখতে দেখতে
একটি কবিতা লিখতে লিখতে
কেউ কেউ তো বেঁচে থাকতেই পারে

 

চারদিকে মানুষের কোলাহল
ত্রস্ত নীলিমার নিচে ভেঙে পড়ে চারিত্রিক খুঁটি
মানুষ হাসে
দাঁতগুলো ধারালো, আর মুখের ভেতর থেকে
ছুটে বেরিয়ে আসতে থাকে কথার বাণ

 

মানুষ পুলসিরাত পেরোচ্ছে
অথচ মানুষ বুঝতেও পারছে না জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানে
বাঁশের নড়বড়ে একটা সাঁকোর ওপর সে দাঁড়িয়ে আছে
অথচ দ্যাখো, কী লাফালাফিটাই না সে করছে

 

আরও কয়েকটি নিঃশ্বাসের জন্যে মানুষ চোখের রঙও বেচে দিচ্ছে।

 

তোদের বলি, থাম

 

তোদের বলি, থাম
ফাল্গুনে যে আগুন লাগায়
তাকে পাঠালাম।

 

তেপান্তরে ছুটছে সে ওই
চাদ্দিকে রব, মাভৈ মাভৈ
আরবীয় ঘোড়ার হ্রেষা
শুনতেছে আর ধরছে নেশা
পায়ের নিচে ভাঙছে পাথর
ধরিত্রী মা হচ্ছে কাতর
ছুটছে তবু চক্রনিধি
সময় ভেঙে সময়বিধি
হঠাৎ দ্যাখে, সামনে একি
সবুজ সবুজ একটা দিঘি
দিঘির জলে ভাসতেছে ডিম
বুদবুদে প্রাণ, কাঁপতেছে হিম
ডিমের ভেতর বিস্ফোরিত
প্রাণ কি তবে সংক্রমিত?
ভাবনা এলো যবে
দেখি, সকাল হবে হবে
সূর্যস্নানে যেতে যেতে তোদের বলি, থাম
ফাল্গুনে যে আগুন লাগায় তাকে পাঠালাম।

 

সে চন্দ্রাহত প্রাণ
রাতবিরেতে গেয়ে ওঠে
নৈঃশব্দ্যের গান।

 

ভবে ঘুঘুপাখি ডাকে
সে এই ছবিটা আঁকে
হঠাৎ দ্যাখে ছবির ভেতর
একটা মানুষ হচ্ছে কাতর
চাদ্দিকে তার সূর্যজাগা ভোর
নানা রঙের ঘরগেরস্তি ওর।

 

মুখোমুখি আয়নায়

ছায়া ছায়া এক নিমেষের ঘুমে
ঘুমিয়ে ছিলাম যেন
জেগে উঠে দেখি, পৃথিবীর মুখ
ভাঙে আয়নার ধ্যানও।

 

জাগরণ ঘটে বাস্তবতায়
নাকি পরাবাস্তবে!
যতবার ভাবি, ভাবতেই থাকি
হিসেব মেলে না ভবে।

 

পারদের নিচে কাতরতা থাকে
আয়নায় থাকে দেহ
কাতর হৃদয় মুছে দিলে থাকে
দেহজাত সন্দেহ।

 

মুখোমুখি আয়নায়
চেয়ে দেখি, কেউ নাই!