আবু তাহের সরফরাজের পাঁচটি কবিতা

প্রকাশিত : জুন ০৩, ২০২১

হাঁই

হাঁই তুললে মানুষের মুখ বিচিত্র আর কিম্ভূত দেখায়
মুখে হাত দেয়া তাই ভদ্রতা
ভদ্রতার কারণ সে তার কিম্ভূত মুখ আরেকজনকে
দেখতে দিতে চায় না
এটা তার আরেক মুখ

আর আরেক মুখ কোনো মানুষ
আরেক মানুষকে দেখতে দিতে চায় না।

দা

একটি পরিবারে দুটো দা আছে
একটি দা ধারে কাটে
আরেকটি ভারে
ধারে যে দা কাটে তার সূক্ষ্মতা
এ রকম যে, সেটা দিয়ে কোনো গাছ কাটলে
খুব সহজেই তা কেটে ফ্যালা যায়
আর তারপর যে দা ধারে কাটে, সেটা
এক সময় যে দা ভারে কাটে, সেই দা হয়ে যায়

আর তখন সেটা দিয়ে কোনো গাছ কাটতে গেলে
খুব পরিশ্রম করতে হয়, কেননা
খুব সহজেই তা আর কেটে ফেলা যায় না।

খেলাধুলা

যদিও রোদের দিন আমাদের ঘরে
ঘুরেফিরে এসে ঠিকই খেলাধুলা করে
খেলাধুলা শেখে তারা ব্যাকরণ মেনে
ফাঁক পেলে ফাঁকে ফাঁকে নভলেট কেনে।

ইলেভেন ক্লাসে পড়া মেয়েদের বই
হাতে নিয়ে অহেতুক করে হইচই
চৌকস রোদে হেঁটে ছায়া পেলে থামে
আমাদের মোড়ে তারা অজ্ঞাত নামে

চায়ের দোকান ঘিরে খেলতেছে গেম
মানুষের প্রিয় খেলা মানবীয় প্রেম।

কালো মোরগ

কালো মোরগ ডেকে ডেকে গলা ফোলায়
আর কিছু মুরগি ভয় পায়
মোরগের উত্তেজনা দেখে তারা
এদিক আর ওদিক এলোমেলো পায়ে দৌড়ায়

দুপুরের ঝিমরোদে কালো এক মোরগ
কয়েকটি মুরগিকে ভয় দেখায়
আর গাছের ছায়ায় বসে আমি এই দৃশ্য দেখি

তবে মোরগটি হুদাই গলা ফোলায় আর ডাকে
কেননা একটু আগেই আমি দেখেছি, ওকে ধরে
কাটান দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে গৃহকর্তী

আনন্দ-বেদনার কাব্য

প্রথম: ব্যথা, কি আহার করো তুমি?
দ্বিতীয়: আনন্দ, আমি আনন্দ খাই।
প্রথম: ব্যথা, আনন্দ তবে কি আহার করে?
দ্বিতীয়: সে তো আমাকেই চেটেপুটে খায়।  
প্রথম: ব্যথা, তুমি যাহা হাগু করো তাহা তবে কি?
দ্বিতীয়: জ্ঞান, আমি জ্ঞান হাগু করি।
প্রথম: আর আনন্দ?
দ্বিতীয়: সে যা হাগু করে জগতে তা সুন্দর, আর শোভাকর
প্রথম: ব্যথা, তুমি আর আনন্দ কী সহজে একে অন্যকে হজম করে ফেলতে পারো, কীভাবে পারো হে?
দ্বিতীয়: আনন্দ যখন ঘুমোয়, আমি তখন জেগে থাকি। আমি যখন ঘুমোই, আনন্দ তখন জেগে থাকে।