আবু তাহের সরফরাজের তিনটে ছড়া

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৩, ২০২১

সাতদিনে এক সপ্তাহ

শুক্কুরবার
নেড়ে বলে ঘাড়,
যে বার শনি
সে একজনই।

রবি তারপর
বাঁধে তার ঘর
সোম এসে তাকে
চলে যেতে ডাকে।

মঙ্গলবার
মুখখানা ভার
সারা দিনে একটি
মাছ পেয়েছে ভেটকি।

বুধবার ছিপ তার
নিয়ে এলো নদীতে
মাছ ধরে চুপচাপ
বসে তার গদিতে।

বেস্পতিবার
করে চিৎকার,
হলো এক সপ্তা
এসো খাই কোপ্তা।

বারো মাসে এক বছর (বাংলা)

বৈশাখ জ্যেষ্ঠ
আহা, কী যে কষ্ট!
কাঠফাটা রোদ্দুর
চোখ যায় যদ্দূর।
ঘাম ঝরে গরমে
প্রাণ ওঠে চরমে।

আষাঢ় শ্রাবণ
কান পেতে শোন,
সারাদিন ঝমঝম
বিষ্টির নেই দম।
মাঠঘাট খালবিল জলে থই থই
জানলায় বসে ভাবি, লোকজন কই!

ভাদ্র আশ্বিন
এলে নাচি ধিন ধিন।
পালতোল শাদামেঘ আকাশের গায়
কোনদিক থেকে এসে কোনদিকে যায়!
নতীতীরে কাশফুল দোল খায় বাতাসে
দেখেশুনে মনে হয়, কবিতার খাতা সে।

কার্তিক অগ্রহায়ণ
এলে পড়ি রামায়ণ।
মাঠে মাঠে শুরু হয় ধান কাটা উৎসব
কৃষকের মুখে হাসি, গান আর বৈভব।

পৌষ ও মাঘ
এলে হয় রাগ।
কনকনে ঠাণ্ডা
ভেজে খাই আণ্ডা।
কুয়াশার চাঁদরে
ঘুম আসে আদরে।
ঘুম থেকে উঠে খাই খেজুরের রস
এরপর কাগজে লিখি খসখস।

ফাল্গুন চৈত্র
শেষ ঋতুগোত্র।
ফুরফুরে বাতাসে
মন ছোটে আকাশে।
নানা রঙের ফুল
রাঙায় নদীর কূল।
কোকিল ডাকে গাছে
কেউ কি ঘরে আছে?

বারো মাসে এক বছর (ইংরেজি)

জানুয়ারি মাস নাকি
বছরের প্রথম
ধ্যানী সে, যেন সে
শ্রামণ গৌতম।
নদীপারে কুটিরে
থাকে সে চুপচাপ
রোদছায়া বিষটি
ঝরে পড়ে টুপটাপ।

ফেব্রুয়ারি মাস
রক্তে ভেজা ঘাস
ঘাসের বনে মার্চ
করতেছে কি সার্চ?

দেখে রাঙা বউরে
মার্চ গেল দৌড়ে।

এপ্রিল ছড়া মিল
দিতে পারে না
ভাটফুল নোলকের
ছড়া পড়ে না।
মন তাই বারবার
হয়ে যায় ভার তার।

মে মাস কেটে ঘাস
বসে আছে মাঠে
জুন তাই একা একা
নদীপারে হাঁটে।

গোধূলির ঘাটে বসে
ভাবতেছে জুলাই
চাঁদটাকে আকাশের
কোন দিকে ঝুলাই!

অগাস্ট মাসে আকাশে
চাঁদ থাকে খুব ফ্যাকাসে।

সেপ্টেম্বর
যায় নদীচর
খেলাধুলা কোরে
ফেরে তার ঘরে।

অক্টোবর
করে নড়বড়
ছিপছিপে নদীতীরে
বাঁধে তার ঘর।

নভেম্বর
ছুটে তরতর
ডিগবাজি খেয়ে হলো
ডিসেম্বর।