অমিত কুমার কুণ্ডু

অমিত কুমার কুণ্ডু

অমিত কুমার কুণ্ডুর কবিতা ‘কবি তুমি পালাও’

প্রকাশিত : মার্চ ২৩, ২০২২

যেখানে
ভালোবাসতে গেলে সমাজের অনুমতি নেয়া লাগে
সেখানে আর যাই হোক, কবিতা লেখা যায় না।
ভেজা ঠোঁটের স্পর্শে কবিতা প্রাণ পায়—
কবিতার পাপড়িগুলো গোলাপের মতো বিকশিত হয়।

যেখানে
বুকের উষ্ণতা পেতে বিয়ে নামক জেলখানার কয়েদি হতে হয়
সেখানে আর যায় হোক, হৃদয় নির্মাণ হয় না।
বুকের নরম পেলব উষ্ণতায় হৃদয়ের কপাট খুলে যায়
সেই হৃদয় সমুদ্রের মতো বিশাল হয়, অসীম হয়।

যেখানে
দুজন মানুষ একসাথে থাকলে
উন্মাদ জনতা পুলিশ নিয়ে আসে
সেখানে আর যাই হোক, ব্যক্তি অধিকার থাকে না।
অধিকারহীন, অতৃপ্ত আত্মা, ভুখা আত্মা, বঞ্চিত আত্মা
উন্মদ হতে হতে, বিকৃত হতে হতে, পচেগলে নষ্ট হয়ে যায়।
সেই নষ্ট আত্মার প্রতিধ্বনি শুনি আজ হাটে-বাজারে
চায়ের দোকানে, রেস্তোরাঁয়, বাসে, ট্রেনে সবখানে।
নষ্ট বঞ্চিত শোষিত সমাজ কবির জন্য নয়।

কবি, তুমি পালাও
এ শহর ছেড়ে পালাও
ওই মাঠ পেরিয়ে, ঘাট পেরিয়ে,
গাঁও গেরামের হাট পেরিয়ে পালাও।
কবি তুমি ছোটো
শহর ছেড়ে, নগর ছেড়ে
কিশোরী বউয়ের আঁচল ছেড়ে ছোটো।

এ সমাজ তোমার নয়, তুমিও এ সমাজের নও
এ নষ্ট সমাজ ছেড়ে, এ গলিত প্রথা ছেড়ে
এ পশ্চাৎপদ সংস্কৃতি ছেড়ে দূরে চলে যাও।

যেখানে ভালোবাসা বাঁধাহীন হবে
সমাজ ও আইনের রক্ত চক্ষু যেখানে থাকবে না
কবি, তুমি সেখানে যাও।

তোমার জন্য উষ্ণ হৃদয়
ভেজা ঠোঁট, প্রসারিত বাহু
অপেক্ষা করে আছে।
তৃষিত হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটাও কবি
কবি, তুমি মুক্ত হও।