‘নব্বই দশকের কবিতা: সমকালীন পাঠ’ সঙ্কলনের প্রচ্ছদ
আবু তাহের সরফরাজের গদ্য ‘ক্ষমতার সাহিত্য, সাহিত্যের ক্ষমতা’
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
কবিতা কোনো কালখণ্ডে বন্দি নয়। নদীর স্রোতের মতো কবিতা বহমান। এরপরও সময়ের এক একটি খণ্ডে কবিতার রূপ ও বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতেই দশকভিত্তিক কালবিভাজন করা হয়। এর সুবিধে হচ্ছে, কবিতার ধারাবাহিক যাত্রাটি সহজে বুঝতে পারা যায়। কখন, কীভাবে চলমান ধারা থেকে কবিতা ভিন্ন আঙ্গিকে বাঁক পরিবর্তন করলো, সেই সূত্রটিও এর মধ্যে দিয়ে আবিষ্কার করা সম্ভব হয়। বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকটি ছিল বৈশ্বিক ও দেশীয় প্রেক্ষাপটে নানামাত্রিক ভাঙচুরের সময়। এই কালখণ্ডে একঝাঁক তরুণ লিখতে শুরু করেন কবিতা। ২৪ বছর পেরিয়ে এসে তাদের লিখিত কবিতার রূপ ও বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে উদ্যোগী হয়েছেন নব্বই-উত্তর কয়েকজন কবি ও কথাসাহিত্যিক। বাংলা কবিতার ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের কবিতা কি স্বকীয় কাব্যভাষা নির্মাণ করতে পেরেছে? আমাদের ভূরাজনৈতিক সমাজজীবনের করুণ আর্তনাদ নব্বইয়ের কবিতায় কিভাবে চিত্রিত হয়েছে? সময়ের মর্মভেদী উৎকর্ষ চেতনায় নব্বইয়ের কবিরা কি কেবল নিরীক্ষাই করেছেন, নাকি উজ্জীবিত প্রাণের ধ্বনিময়তাও ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন কবিতার শরীরে। নব্বই দশকের কবিতা: সমকালীন পাঠ সঙ্কলনে অগ্রজদের সফলতা ও ব্যর্থতার শিল্পসীমানা নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছেন তাদেরই উত্তরসূরীরা। এটি সম্পাদনা করেছেন আবু তাহের সরফরাজ। বইমেলায় সঙ্কলনটি পাওয়া যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষাচিত্রের ৩৩ নং প্যাভিলিয়নে। সঙ্কলনটির সম্পাদকীয় ক্ষমতার সাহিত্য, সাহিত্যের ক্ষমতা শিরোনামে এখানে প্রকাশ করা হলো।
হঠাৎ করেই মাথায় এলো, নব্বই দশকের কবিতার বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করে একটা সঙ্কলন করলে কেমন হয়? নব্বই-উত্তর কবিরা তাদের অগ্রজদের কবিতা পড়ে পাঠ-আলোচনা লিখবে। এই আলোচনার ভেতর দিয়ে নিশ্চয়ই ধরা পড়বে নব্বই দশকের কবিতার বৈশিষ্ট্য ও রূপ। এ ধরনের কাজ তো এ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু কিভাবে তা করবো! কেউ তো আমাকে আলোচনা লিখে দেবে না। আমাদের কবিদের মাঝে কয়েকটি সিন্ডিকেট রয়েছে। দেশের প্রতিটি সেক্টর যেমন গুটিকতক সিন্ডিকেট দখল করে রেখেছে, একইভাবে সাহিত্যও এসব সিন্ডিকেটের দখলে। কবিতার সিন্ডিকেটে রয়েছে পীর-কবি ও মুরিদ-কবি। কে কবি আর কে কবি নয়, সিন্ডিকেটের পীর-কবিরা সেই লাইসেন্স নানাভাবে দিয়ে বেড়ান। আমি পীর-কবিও নই, মুরিদ-কবিও নই। প্রায় পঁচিশ বছর ধরে কবিতাচর্চা করে আসছি। এই দীর্ঘ বছরে খুবই বিনয়ের সঙ্গে নিজের গা বাঁচিয়ে চলেছি। এটা যে ইচ্ছে করেই করেছি, তা নয়। আসলে আমার চরিত্রের ধাতই এরকম। কোথাও কোনো ঝামেলা দেখলে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাই। তো, আমার মতো অপাঙক্তেই মানুষকে আলোচনা লিখতে কবিদের বয়েই গেছে! তাদের কত্ত পরিচিতি! গণমাধ্যমে তাদের কত কত প্রচারণা! এরপরও ভাবলাম যে, কয়েকজন কবিবন্ধু তো আছেই, যাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই হৃদ্য। এই ভাবনা থেকেই কবি কাজী নাসির মামুনের সঙ্গে একদিন কথা বললাম। বিষয়টি তাকে ভেঙেচুরে বললাম। শুনেটুনে মামুন বলল, করতে যদি পারেন তাহলে প্রশংসনীয় একটি কাজ হবে। আর সিন্ডিকেটের যে দ্বন্দ্ব তা তো ভাই থাকবেই। আপনার চ্যালেঞ্জ হবে, ওই সিন্ডিকেটের ভেতর থেকেই আলোচনা বের করে আনা। জানি যে, কাজটা দুরূহ। তবে চেষ্টা করতে তো দোষ নাই। বললাম, তাহলে আমরা দুজন মিলেই কাজটা করি না কেন, যদি আপনার আপত্তি না থাকে। মামুন বলল, না রে ভাই, এসবে আমারে জড়িয়েন না। আমিও আপনার মতো নির্ঝঞ্ঝাট জীবন কাটাতে চাই। আপনি করছেন, করেন। আমার পক্ষে যতটা সহযোগিতা করা সম্ভব, করব। আপনাকে তো আমি আসলে পছন্দ করি। আপনাকে সাহায্য করতে পারলে আমারও ভালো লাগবে। আপনি অতকিছু না ভেবে যার-যার কাছে আলোচনা চাওয়া সম্ভব, চাইতে থাকেন। বইমেলা আসতে এখনো ছয় মাস বাকি আছে। কেউ দেবে, কেউ দেবে না। হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমিও লিখব।
বন্ধুবর কাজী নাসির মামুনের উৎসাহে উৎসাহী হয়ে উঠি। এরপর তরুণ কবিদের কাছে নব্বই দশকের কবিতার পাঠ-আলোচনা চাইতে আরম্ভ করি। এই সময় থেকে পুরনো অভিজ্ঞতাগুলো নতুনভাবে আবার পেতে শুরু করি। কত যে বিচিত্র কবিদের অন্তর্জগতের গলিঘুঁজি, আমার মতো নাদানের সাধ্য কী সেই অন্ধকারে গলি চিনে ওঠার! কেউ কেউ মনে করে, ‘মুই কী হনু রে!’। যেন তারা রবীন্দ্রনাথ। নিজেকে এরকমটি ভাবার যথেষ্ট কারণও তাদের আছে। গণমাধ্যমের ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের তোষামোদি করে তরুণ কবিদের কেউ কেউ গণমাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিয়েছে। বিভিন্ন প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকাগুলোর সাহিত্য সাময়িকীতে তাদের কবিতা ছাপা হয়। তাদের কবিতা নিয়ে কথা বলেন গণমাধ্যমের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। সে কী লিখছে, যা লিখছে তার কতটুকু কবিতা আর কতটুকু অকবিতা, সেই বিচারে না গিয়েই ঢালাওভাবে বইতে থাকে প্রশংসার বন্যা। এই ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে কবিতার পাঠক। কবিতার পাঠক কারা? মানুষ আসলে কবিতা পড়ে না। মানুষের কবিতা পড়ার দরকারও হয় না। চাল-ডাল-তেলের যোগাড়যন্তর করতে গিয়েই মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। কবিরাও কবিতা পড়ে না। তাহলে কারা পড়ে? প্রতি দশকে কিছু ছেলেমেয়ে কবিতা লিখতে আসে। কবিতার ঘোরলাগা এসব নবীনই আসলে কবিতার আসল পাঠক। এরপর তাদের কবিতা যখন গণমাধ্যমে ছাপা হতে থাকে, বইটই প্রকাশিত হয়, তখন তারাও আর কবিতা পড়ে না। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কাদের জন্য কবিতা লেখা হয়? আসলে কারো জন্য কবিতা লেখা হয় না। কবি নিজের জন্যই কবিতা লেখেন। কবির বোধের জগতে প্রতিমুহূর্তে ভেসে ওঠে নানা রঙছবি, কলস্বর। কবি শুনতে পান, অচেনা গ্রহ থেকে ভেসে আসা অস্ফুট স্বর। তারা প্রকাশ চায়। আর তখন বেগ তৈরি হয় কবির ভেতর। কবি তাদেরকে প্রকাশ করতে বাধ্য হন। প্রকাশ ঘটে গেলে কবি আরাম পান। নিজেকে তখন তার নির্ভার লাগে। সুতরাং বলা যায়, কবিতা হচ্ছে কবির জগৎ দেখার অনুভূতি। এই অনুভূতি প্রকাশ করে নিজেকে ‘মুই কী হনু রে’ ভেবে আর সবার থেকে আলাদা চিহ্নিক করে নেয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সকল কবিতা পড়েছে, এমন পাঠকের সংখ্যা হাতেগোণা। কয়েকটি কবিতা পড়েই সকলে রবীন্দ্রনাথকে ‘রবীন্দ্রনাথ’ করে তুলেছে। ‘মুই কী হনু রে’ শ্রেণির কোনো কোনো কবি নব্বই দশকের কবিতার ওপর আলোচনা লিখতে ইচ্ছুক নয় বলে আমাকে জানিয়ে দেয়। বুঝলাম যে, তাদের লেখা পাওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। কারণ, কবিতার কোনো সিন্ডিকেটে আমি নেই। আর প্রভাবশালী কোনো গণমাধ্যমও আমার হাতে নেই। আমাকে লেখা দিয়ে তাদের ফায়দা কী?
দ্বিতীয় দশকের একজন কবিকে বললাম, নব্বইয়ের অমুক কবির কবিতার ওপর একটা আলোচনা লিখে দাও। সে জবাব দিল, তার তো কবিতাই হয় না, আলোচনা কী লিখব ভাই! আমি বললাম, তাহলে যার কবিতা হয় তার ওপর লিখে দাও। সে জবাব দিল, দেখি ভাই, আপনারে জানাবো নে। কয়েকদিন পরে দেখি, যার কবিতা হয় না সেই কবির জন্মদিনে দ্বিতীয় দশকের কবি একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো। সেখানে জুটে গেল আরও কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক। প্রত্যেকে কবিতা না-হওয়া কবির কবিতার বেশ প্রশংসা করলো। বাদ গেল না দ্বিতীয় দশকের কবিও। ফেসবুক লাইভে তার মুখে কবিতা না-হওয়া কবির কবিতার স্তুতি শুনতে শুনতে আমি ভাবলাম, ঠিকই তো আছে। এই দ্বিচারিতা করতে পারে বলেই অনুভূতিশূন্য এই কংক্রিট শহরে ছেলেটি স্বচ্ছলভাবে বেঁচেবর্তে আছে। এমন অনেক কবিবন্ধুকেই তো জানি, নৈতিকতা মূল্যবোধ এসব ছেলেমানুষী করতে করতে জীবনে আর প্রতিষ্ঠাই পেল না। এখন আর্থিক অনটনে বিপর্যস্ত। শিশুবাচ্চার দুধ পর্যন্ত কিনতে পারে না। সারা জীবন ভাতেমরা নির্জনতম কবি জীবনানন্দ দাশ সুতীর্থ উপন্যাসে লিখেছেন, পৃথিবীতে টাকা রোজগার করতে গিয়ে মূর্খ ও বেকুবদের সাথে দিনরাত গা ঘেঁষাঘেঁষি করে মনের শান্তি ও সমতা নষ্ট হয়ে যায়। জীবনানন্দ শুদ্ধতম কবি ছিলেন। তাই বেকুবদের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকলে তার শুদ্ধতা নষ্ট হতো। কিন্তু এখনকার সময়ের বেশিরভাগ কবি শুদ্ধতম কবি নন। তাই তাদের মনের শান্তি নষ্ট হয় না। বরং টাকার চকচকে প্রলোভনে তাদের মনে প্রভূত শান্তি বিরাজ করে। এখন বেকুব শব্দটার ওপর একটু চোখ রাখা যাক। জীবনানন্দ কাদেরকে বেকুব বলেছেন সেই বিশ্লেষণে না গিয়ে আমি বরং বলতে চাই, যেসকল জ্যেষ্ঠ কবি তরুণ কবিদের প্রশংসায় আমোদিত হন, তারাই প্রকৃত প্রস্তাবে বেকুব। তারা কি আসলে বুঝতে পারেন না, প্রশংসা তার কবিতার নয়, করা হচ্ছে তার রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতার। তবে তা করা হচ্ছে কবিতার ভেতর দিয়ে। এখানেই তরুণ কবির চাতুর্য। একদিন দেখলাম, নব্বইয়ের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাবাদ এক কবির জন্মদিনে ফেসবুকে তাকে ট্যাগ করে দৃষ্টিনন্দন শুভেচ্ছাপত্র তৈরি করে শেয়ার দিয়েছে এক তরুণ কবি। তাকে বললাম, ওই কবির কবিতার ওপর আলোচনা লিখে দাও। সে বলল, খুব চাপে আছি ভাই, সময় নাই। আমি আর তাকে চাপে ফেলতে চাইলাম না। অথচ আমি জানি, যে সময় নিয়ে সে ওই শুভেচ্ছাপত্র তৈরি করেছে সেই একই সময়ে সে একটি আলোচনা লিখে ফেলতে পারতো। অথচ লিখল না। কেন লিখল না? আমার সম্পাদনার ওপর আস্থা নেই বলে? নাকি আমি তার সিন্ডিকেটভুক্ত নই বলে। জানি না। এসব বেশ জটিল আর গোলমেলে ধাঁধা। এসবে আমি ঢুকতে চাই না।
‘অতিশয় দুষ্টু প্রকৃতি’র আরেক শ্রেণির কয়েকজন তরুণ কবি বেশ কৌশলে আমাকে নাকানি-চোবানি খাওয়ালো। সঙ্কলনে লিখবে আশ্বাস দিয়ে পাণ্ডুলিপি তৈরির একেবারে চূড়ান্ত সময়ে এসে তারা আমাকে পষ্ট বলে দিলো, আলোচনা তারা লিখবে না। আমার তখন ল্যাজে-গোবরে অবস্থা। তারা আসলে আমাকে এই অবস্থাতেই ফেলতে চেয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, শেষ মুহূর্তে যেন আমি সঙ্কলনটা বের করতে না পারি। নব্বইয়ের যত বেশি কবির কবিতার ওপর আলোচনা পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা শুরু থেকেই আমার ছিল। কবিদের ব্যাপারে কোনো নির্বাচন আমি করিনি। কারণ, আমি একটি কালখণ্ডের কবিতার বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে চেয়েছি। কোন কবির কবিতা উৎকৃষ্ট আর কোন কবির কবিতা উৎকৃষ্ট নয়, তা তুলে ধরা আমার উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু নব্বইয়ের সকল কবির কবিতার ওপর আলোচনা আমি সংগ্রহ করতে পারিনি। আশা করছি, বিষয়টি পাঠক বিবেচনায় রাখবেন।
১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর খোলা জানালার ৪৮তম সংখ্যায় কবি আবু হাসান শাহরিয়ার সমকালীন সাহিত্যচর্চা প্রসঙ্গে ১৯টি খণ্ডচিত্র তুলে ধরেছিলেন, যেগুলো খুবই তাৎপর্যময়। সেখান থেকে দুই নম্বর চিত্রটি আমি এখানে উল্লেখ করবো।
বেশিরভাগ বড়কাগজের সাহিত্য সাময়িকী তকমাধারী মুষ্টিমেয় লেখকের উপনিবেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ওইসব সাময়িকীতে তকমাধারীদের জন্য শতকরা আশিভাগ স্থান বরাদ্দ থাকে। বাকি মাত্র কুড়িভাগ স্থান নতুন বা নিভৃতচারী লেখকদের জন্য।
আবু হাসান শাহরিয়ারের সহযোগী হিসেবে একটি দৈনিক পত্রিকায় আমি কাজ করেছি। দেখেছি যে, কী সাংঘাতিক মর্মভেদী তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। শিল্পবোধ ও রুচিতেও তিনি অনন্য। ৯৮ সাল পেরিয়ে আমরা এখন অবস্থান করছি ২০২৪ সালে। আজকের সময়ে এসে দৈনিকের সাহিত্য সাময়িকীগুলোর অবস্থা আরও কর্পোরেট হয়ে গেছে। দৈনিকগুলো সাহিত্যিকদের মানচিত্র তৈরি করে নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান মনে করে, তাদের তৈরি করা মানচিত্রের বাইরে আর কোনো সাহিত্যিক নেই। বইমেলা এলে বইয়ের যে সংবাদ তারা প্রচার করে সেখানেও তাদের মানচিত্রের বাইরের কোনো লেখকের বইয়ের হদিস থাকে না। অথচ তারা যাদেরকে সাহিত্যিক হিসেবে প্রচার করছে তাদের কারো কারো সাহিত্য খুবই নিম্নমানের। তাদের যোগ্যতা হচ্ছে, হয় তারা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর, না-হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। এই ডামাডোলে বঙ্গের কবিসমাজ এখন রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ছত্রছায়ায় প্রতিপালিত। এহেন প্রেক্ষাপটে আমার মতো গোবেচারা যে শেষমেষ সঙ্কলনটি করতে পারলো, এটা সম্ভব হতো না যদি না কবিবন্ধু কাজী নাসির মামুনের বিশেষ সহযোগিতা পেতাম। তার কাছে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর যারা আলোচনা দিয়ে এই দুরূহ কর্মটি সম্পাদনে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, সঙ্কলনটির সকল কৃতিত্ব আসলে তাদেরই। আমার নয়।